আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হতাশার মাঝে বসবাস

The mind is in its own place, and in itself/ Can make a Heaven of Hell, a Hell of Heav’n

ইদানিং এক সুক্ষ্ম ধরনের তীব্র ব্যথা বুকের মাঝে অনুভব করি। সবসময় আমাকে সে ব্যথা আমাকে তাড়া করে ফেরে। যখনই সে ব্যথা অনুভব করি, টের পাই আমি আসলে একটা অতল সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাচ্ছি। হাত বাড়াই। কিন্তু আর কোন হাত এগিয়ে আসে না আমাকে উদ্ধারের জন্য।

অবশেষে...... সুতীব্র ব্যথা নিয়ে ডুবে যেতে থাকি হতাশার অতল গহবরে। যেখানে শুধুই হতাশার বসবাস। আর ভালবাসা, আশা, স্বপ্ন নামক বস্তু গুলো কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করে। হয়তো আমার এ কথাগুলো বাস্তবতাবিবর্জিত অতি কাব্যিক কিংবা কল্পনার কথা মনে হচ্ছে। হয়তো আমি সত্যিই কাব্যিক ঢঙে কথাগুলো বলছি কিন্তু কোনটাই বাস্তবতাবিবর্জিত নয়।

আসলে সত্যিই আমি তীব্র হতাশার মাঝে বসবাস করছি। জানি, হতাশা মানুষকে কুরে কুরে খায়। তার সৃজনশীলতাকে বিনষ্ট করে। এতসব জানার পরও কেন হতাশার মাঝে বসবাস করছি তা আমি জানি না। আমি আসলেই হতাশার মাঝে বসবাস করতে চাই না।

চাই হতাশামুক্ত স্বপ্ন, ভালবাসা ও আশার জীবন। কিন্তু ওই যে বললাম আমি আসলে একটা অতল সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাচ্ছি। হাত বাড়াই। কিন্তু আর কোন হাত এগিয়ে আসে না আমাকে উদ্ধারের জন্য। মাঝে মাঝে মরিচিকার পিছনে দৌড়াই।

মানে মনে হয় ওই বুঝি কেউ একজন হাত বাড়িয়ে দিলো আমাকে হতাশার রাজ্য থেকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু পরক্ষণই দেখি আসলে সব মরিচিকা। আমি যদিও সাহিত্যের শিক্ষার্থী এবং আমার এক বড় ভাই আমার হতাশার কথা শুনে আমাকে বলেন যে সাহিত্যের শিক্ষার্থী হয়ে কখনোই হতাশ হবি না। তুই যদি হতাশাগ্রস্থ হোস, তবে কে আশার পাদপ্রদীপ জ্বালাবে? আমি তার কথা বুঝি, বুঝে চেষ্টা করি হতাশা কাটিয়ে উঠতে। কিন্তু পারি না।

আমার হতাশার মাল্টি কালার আছে। মানে আমি কখনোই একটি বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হই না। আমার পেছনে সবসময় একাধিক হতাশা লেগে আছে। একটা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আরেকটা এসে চেপে ধরে। উদাহরণ দেই।

আমার প্রথম হতাশা আমার শিক্ষাসংক্রান্ত। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। এই নিয়ে আমার হতাশার অন্ত নেই। আমার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে পড়বো। তখন বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়েও বিজ্ঞান পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম।

যাই হোক, স্বপ্ন প্রায় পূরণ হয়েছিল। শুধু কিছু ভুলের কারণে তা পূর্ণ হয়নি। আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭ তম হয়েও ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে পারি নি কেবল বিষয় মনোনয়ন হিসেবে বাংলাটা দেবার জন্য। আবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইভা ফেস করতে পারি নি এক বন্ধুর দেয়া ভুল তথ্যের জন্য। অতঃপর.......জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি।

দ্বিতীয়ত, আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছি। বুঝতে পারছি না, কী করবো? অনার্স শেষ হলে পেশা জীবনে ঢুকবো। কিন্তু কোন পেশায় ঢুকবো? যখন আমার বন্ধুদের কথা ভাবি, তারা আজ ইন্জিনিয়ারিং শেষ করে আজ কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। অথচ আমি......? কী করব এই চিন্তায় রাত্রে ঘুম আসে না। পড়ালেখাতেও মন বসাতে পারছি না।

ভাবি, উচ্চ মাধ্যমিকের পর যদি ইন্জিনিয়ারিং এ পড়তাম, তবে আজ হয়তো প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম আর বাবাকে তার কাজ করা থেকে ছুটি দিতাম। কিন্তু হায়! সবই বৃথা মনে হয়। সবকিছু ধূসর লাগে। তৃতীয়ত, গত কয়েকদিন থেকে নিজেকে খুব একাকী মনে হয়। কারো সাথে আমার কষ্টগুলো শেয়ার করবো, সে আমার কষ্টগুলো বুঝবে, আমাকে বন্ধুর মতো পাশে থেকে উৎসাহ দেবে সামনে এগিযে যাবার জন্য।

আমার হতাশাগুলো দূর করবে, একাকীত্ব থেকে আমাকে মুক্তি দেবে। আমার খোজ নেবে। একইভাবে, আমিও তার সবকিছু শেয়ার করবো। এক কথায়, নির্মল বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু কেউ নেই।

প্রতিদিন অপেক্ষা করি, কেউ হয়তো আমাকে বলবে অসীম, আর মন খারাপ করিস না। দেখ, আমি আছি না! তোকে আর একা থাকতে হবে ন। প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হয়। কিন্তু কেউ আসে না। এভাবে আমার দিন গুলো কাটছে।

কিন্তু আর পারছি না। এত বড় কষ্টের বোঝা আমি আর বহন করতে পারছি না। সামনে তাকাই। আলো দেখতে পাই না। গাঢ় অন্ধকারে আমার স্বপ্নগুলোর সমাধি রচনা দেখতে পাই।

বি.দ্র. আমার একান্ত কষ্টগুলো ব্লগে ছড়িয়ে দিলাম শুধুমাত্র নিজেকে হালকা করার বৃথা প্রয়াসে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।