আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুনির উদ্দিন শামিমে'র, "গিয়াস উদ্দিন সেলিমের মনপুরা এবং বাংলা চলচ্চিত্রে পুরুষতান্ত্রিক ভুতের আছর (জেন্ডার প্রেক্ষিত থেকে মনপুরা ছবির একটি পোস্টমর্টেম)" এর সমালোচনা



মুনির উদ্দিন শামিমে'র, "গিয়াস উদ্দিন সেলিমের মনপুরা এবং বাংলা চলচ্চিত্রে পুরুষতান্ত্রিক ভুতের আছর (জেন্ডার প্রেক্ষিত থেকে মনপুরা ছবির একটি পোস্টমর্টেম)" এর সমালোচনাটি ব্লগ আকারে দিলাম। ----------------- যারা মনপুরা দেখেন নি তাদের জন্য খুব ভাল একটা গল্প লিখেছেন। ধন্যবাদ। চুল চেরা বিশ্লেষন করেছেন আপনার দৃষ্টিকোন থেকে সেজন্যেও ধন্যবাদ। এবার একটু মুল আলোচনায় আসি: "খুন, লাশের ভেজা শরীর এবং বিভৎসতার উৎপাদন: দর্শক মনোযোগ তৈরির পুরুষতান্ত্রিক বটিকা" ---লাশটি মুলতা রাতে'র বিজলী ঝলকানিতে হঠাৎ ২-১ বার দেখাগেছে।

মেয়ে না কি ছেলে তা বুঝতে হয়েছে অনেক কষ্ট করে শুধুমাত্র শাড়ি পড়া দেখে। ---অতএব "খুন, লাশের ভেকা শরীর...............পুরুষতান্ত্রিক বটিকা" আপনার লেখায় চটকতা আনার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু না। ---পরিচালক বিভৎসতা এড়িয়ে সুস্থধারা'কে নশ্চিত করেছেন। "শ্রেণী পক্ষপাত এবং নারী-শরীর বনাম বিষয়" --- নায়িকা কোথায় শহুরে কিংবা উচ্চবিত্তে'র ঢংয়ে অন্তর্বাস পরেছে তা লিখলেন কিন্তু পুরো ছবিটাই যে আধুনিক সম্পুর্ন রঙিন সে ব্যপারে ত কিছু বললেন না। --- ধরে নিন ছবিটি সাদা-কালো।

নায়িকা'র ব্লাউজ'টি এখন কেমন লাগছে। --- কেন রঙিন ছবি'র কথাটি প্রথমেই আনলাম সেটা বলি। সাদা-কালো আর রঙিন ছবির আলাদা আলাদা আবেদন আছে। সাদা-কালো ছবির প্রেজেন্টেশান আর রঙিন ছবির প্রেজেন্টেশান এক হলে তা অস্যাভাবিক লাগে। অর্থাৎ বৃহৎ পরিমন্ডলে সফল হিসেবে বিবেচিত হয় না।

যারা রঙিন "মুঘলে আজম" দেখেছেন তারা ব্যপারটা ধরতে পারবেন। --- ঠোটের ক্লোজ শট, নয়িকার কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত দেখান ছবিটি'কে আর গ্রহন যোগ্য করেছে দু'টো কারনে: ১) বানিজ্যিক ছবিতে কোমর থেকে বুক দেখান হত এবং নয়িকা মাঝে মাঝে অশ্লিলভাবে ঠোট কামড়াতেন। পরিচালকও তা অশ্লিলভাবেই পর্দায় উপস্থাপন করতেন। ২) এটি প্রেমে'র ছবি। নায়িকা'র শরীর'কে মাঝে মাঝে দেখান হতেই পারে।

আমি আমার গার্লফ্রেন্ডে'র শরীরে'র দিকে তাকাই। দর্শকও নিশ্চয়ই নায়িকা'র শরীরে'র দিকে তাকাবে। --- কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে নায়কের অর্ধ নগ্ন শরীর যে বেশ কয়েকবার দেখাল সেটা কে কিভাবে ব্যক্ষা করবেন? "পুরুষতন্ত্র উৎপাদন, পুনরোৎপাদন এর বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া" --- নায়কে'র নদী সাতরে নায়িকা'র কাছে যাওয়া'টা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে। কারন নায়কে'র কোন নৌকা ছিলনা আর নায়িকার নদী সাতরানো দেখলে অবাস্তব মনেহত। --- পরিচালক সেই রাতে নায়িকা'কে দিয়ে কেন নৌকা বাওয়ালেন না সেটা একটা প্রস্ন হতে পারে।

তবে পরিচালক হয়ত নৌকা বাওয়ার শব্দ নায়িকা'র পিতার ঘুম ভাঙাতে চাননি :-) --- পরীর বাবা যদি মেয়ের পিতা না হয়ে ছেলের পিতা হতেন তাহলে কী হতো? তা হলেও দারিদ্রের কারণে সে ধনীর মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ছেলের বউ করে ঘরে তুলে আনতেন। কারন দারীদ্র এবং লোভ কোন নিয়ম মানে না। মনপুরা তার প্রমান। পরী'র পিতাও প্রথমে বিয়েতে রাজি হয়নি। কিন্তু লোভ তাকে শেষ পর্যন্ত রাজি হতে বধ্য করেছে।

সুতরাং আপনার সমালোচনার এ অংশটি অবান্তর। ---দর্শক দেখা পায় কান্না ভেজা অপেক্ষারত সতী নারীর। যে যেকোন উপায়ে রক্ষা করে চলে তার ভার্জিনিটি। তার সতীত্ব। ভালবাসার মানুষটির জন্য।

পরীকে পুরোপুরি সমর্থন যোগায় তার শাশুড়ি। আপনার উপরোক্ত ব্যক্তব্য প্রকৃত চিত্রটি তুলে ধরতে ব্যার্থ হয়েছে। পরীর শাশুরির পরী'কে সাময়িকভাবে সাপোর্ট দেয়া ছাড়া কোন উপায়ই ছিলনা কেননা তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যদি ছবির প্রথমে যে হত্যাকান্ড ঘটেছে সেই ঘটনার আবার পুনরাবৃত্তি হয়। আর নারী'র কুটনামী'র অংশটি ছবি'র প্রয়োজনে লেখক কে আনতে হয়েছে গ্রহনযোগ্য সমাপ্তি'র স্বার্থে। সুতরাং পরিচালক এখানেও সফল।

এটা কখনই বলা যাবেনা যে ছবিটি খুব অসাধারন কাহিনি নিয়ে তৈরি হয়েছে বা আমাদের কোন নতুন গল্প শুনিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা নিয়ে আমরা অনেক ছবি আগেও দেখেছি। তবে বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচালনার মান বিবেচনায় মনপুরা একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিৎ। সামগ্রি বিবেচনায় আমি মনপুরা'কে অবস্য দর্ষনিয় একটি ভাল বিনোদনমুলক ছবির মর্যদা দিব। বাংলা চলচ্চিত্র'কে উৎসাহিত করার জন্য হলেও মনপুরা সবার দেখা উচিৎ "কিছু অসঙ্গতি অবস্যই আছে কিন্তু বৃহত্বর স্বার্থে এড়িয়ে গেছি" :-))


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.