আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাথরের ফুল জলের মূর্তি

আমার পরানে যে সুর বাজিছে ...............

০১ ফোন টুংটাং আওয়াজ করছে। ফারহানা ফোন ধরে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে শুনা গেলো বিড়ালের ডাক, মিঁউ মিঁউ। -কে কে ? -মিঁউ মিঁউ -কে? -আরে আমি!! ফারহানা এইবার তুহিনকে চিনতে পারে। -অ তুমি। তা ছাগলের মত ম্যা ম্যা করলেই হত।

ঠিকই চিনে ফেলতাম। -ছাগলের মত!! আবার অপমান করলা তুমি। যদি আমি ভালো ছেলে না হতাম, তবে কবেই তোমার যন্ত্রনায় সন্ন্যাসব্রত নিয়ে হিমালয়ে চলে যেতাম। -চাপা মাইরো না। তোমার ক্ষমতায় সন্ন্যাস নাই।

-হুমম। একদিন দেখিয়ে দিব। কিন্তু কথা হল বিড়ালের ডাক দেবার পর আমাকে চিনলে না কেন? -অনেকেই বিড়ালের মত ডাকতে পারে। খালি তুমি একলা ত আর আমার পিছে ঘুর ঘুর করো না। -আর কে ঘুর ঘুর করে ?? ওদের হাড্ডি ভেঙ্গে গুড়া করে দিব আমি।

-শুনো! তোমার চাপা শুনতে আমার ভালো লাগছে না। ভার্সিটিতে যেতে হবে। এখন রাখি। -দাড়াও। একমিনিট! মিঁউ মিঁউ মিঁউ।

সারাদিন ত বিড়ালের সাথে থাকো। বলো এর অর্থ কি? -জানি না। -এর অর্থ এসো চাটাচাটি করি। ফারহানা ফোন কেটে দিল। ০২ তুহিনের এসএমএস- আজকে নিয়ে তিনদিন হল তুমি আমার এসএমএস এর উত্তর দাও না।

ফোন ধরছো না। আমি আগামীকাল সন্ন্যাস নিয়ে হিমালয়ের দিকে রওয়ানা হব। তুহিনের পরদিনের এসএমএস- ঠিক আছে! আরেকদিন সময় দিলাম। আগামীকাল ঠিকই চলে যাব। ০৩ তুহিনের চিঠি ফারহানা, ভালো আছো? আমি জানি তুমি ভালো আছো! শুধু আমিই ভালো থাকতে পারি না।

সব তোমার দোষ। তুমি আমাকে কাছে ডাক, আবার এমনভাবে ঠেলে দূরে সরিয়ে দাও যে, ভালো লাগে না কিছুই। ফেনিয়ে ফেনিয়ে কিছু বলার ইচ্ছে আমার নাই। সোজা কথা বলি। সন্ন্যাসী হবার একটা আশা নিয়ে ঘর থেকে বের হলাম।

সাথে টাকা পয়সা নিয়ে নিয়েছি। বর্ডার পার হয়ে হিমালয়ে চড়া শুরু করব। শুধু তুমি যদি ফোন করে ফিরে আসতে বল তাহলে চলে আসব। নইলে আর আসব না। আমার ফোন নাম্বার তোমার জানা আছে।

ইচ্ছে হলে ফিরে আসতে বলতে পারো। তুহিন বিঃদ্রঃ বিড়ালরা কখনো বলে না, আমি তোমাকে ভালোবাসি। এরা চাটাচাটি করেই প্রেম প্রকাশ করে। ০৪ তুহিনের ব্যাপারটা জানার জন্য ফারহানা তার ছোটো ভাই আহাদকে পাঠালো তুহিনের বাসায়। তুহিনের ছোটভাই রাশেদ আর আহাদ একসাথে নটেরডেম কলেজে পড়ে।

আহাদ বাসায় এসে জানালো ঘটনা সত্য। দুইদিন ধরে তুহিন বাসায় নাই। ০৫ -হ্যালো! আমি জানতাম তুমি ফোন করবা। -কেমন আছো? আছো কই? -ভালো আছি। এখন আছি টাঙ্গাইলের একটা গ্রামে।

তবে হাটার কষ্টটা সহ্য হচ্ছে না। -হেটে যাচ্ছো নাকি? -কেনো চিঠিতে লিখি নাই যে হেটে যাচ্ছি? -না। তুহিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, আমি একটা চিঠিও ঠিকমত লিখতে পারি না। -তাই ত দেখা যাচ্ছে। তোমার মত ছাগল আর দেখলাম না।

-ছাগল ডাকটা কি আদর করে দিলে নাকি ? -ছাগল!! ফারহানা ফোন কেটে দিল। ০৬ তুহিনের এসএমএস- ফারহানা, বগুড়া আছি। পাচদিন হল ঘরছাড়া। আমার পা শেষ। তাড়াতাড়ি ফোন করে ফিরে আসতে বলো আমাকে।

০৭ -হ্যালো! ফারহানা ফোন করলা তাহলে। -হুমম -ফিরে আসব? -আসো! - সিরিয়াস? -সিরিয়াস -মিঁউ মিঁউ মিঁউ - এই সব বন্ধ রাখো। -ওকে!আমি ফিরে আসছি। ০৮ ফিরে আসার পরের দিন। তুহিন এসএমএস করেছে -আমি তোমাকে নিয়ে কোথাও যাব।

এইটা হবে আমাদের প্রথম অফিসিয়াল ডেটিং! তুহিন ফারহানাকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছে সিনে কমপ্লেক্সে। বিদেশী ছবি। পর্দায় হেভী মারামারি চলছে। সাঊন্ডে পুরা হল কেপে কেপে ঊঠছে। ফারহানাকে পাশে নিয়ে বসে আছে বলেই হয়ত সিনেমটা এত চমৎকার লাগছে।

একটা রোমান্টিক দৃশ্যের এক পর্যায়ে তুহিন পাশে বসে থাকা ফারহানার কানের লতিতে একটা চুমু দিল। ফারহানা সাথে সাথে ঘুরে তুহিনের দিকে তাকাল। -আমরা কি প্রেম করছি? -হ্যা। -ঠিক আছে। করতে পারি।

আমার শুধু একটা শর্ত আছে। -কি শর্ত? - তুমি মিথ্যা বলবে না আমার সাথে আর কোনো দিন। - আমি কবে তোমার সাথে মিথ্যে বলছি? ফারহানা কিছু বলে না। তুহিন আবার বলে, আমি কবে তোমার সাথে মিথ্যে বলছি? -তুমি যেদিন আমাকে বলছো টাঙ্গাইল আছো, সেদিন বিকালে আহাদ তোমাকে আরামবাগের একটা মেসের বারান্দায় দেখে আসছে। আহাদের কোন একটা বন্ধু অই ফ্লোরেই থাকে।

তুহিন কিছুক্ষন চুপ করে থাকল। এরপর বলল, ঠিক আছে। আমি আর কোনদিন মিথ্যে বলব না। তুহিন সিনেমা দেখতে থাকে। এইবার আর সিনেমটা ভালো লাগে না।

। । ...। । ...।

। ...। । ... যারা এই গল্পটা পড়ে মজা পাইছেন, তারা আমার এই গল্পটাও পড়ে দেখতে পারেন । পাতা ঝরার দিন Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।