আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবান্তর!

ইমরোজ

একটা শূন্য, মহাশূন্য আমাদের ঘিরে আছে। সকাল সন্ধ্যা আমরা সেই শূন্যের ভেতরে অশূন্য এ পৃথিবীতে বসবাস করি। শূন্যতার সঠিক মানেটা কী আমরা অনেকেই বলতে পারি না। অনুভব করতে চেষ্টা করি। কিন্তু অনুভূতি খুব সহজ বিষয় নয়।

একজন জনম পঙ্গু ব্যাক্তিকে জিজ্ঞেস করতে পারবেন, "বলতো দুই পায়ে হাটার আনন্দ কী"? অবান্তর প্রশ্ন সকল। তেমনি একজন অন্ধ পৃথিবীকে চির অন্ধকারই দেখে যান। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তার মনে হতে থাকে যদি দুইচোখ খুলে দেখতে পেতাম, কেমন অন্ধকার এই মৃত্যুটা। অথবা যমদূত নাকি সবাইকেই দেখা দেয়। কই সে কী আমাকে দেখা দিবে না? হাত পা সোজা রেখে হাটতে পারে না, তাই প্রতিবন্ধী শিশুটি থালের দিকে অলস চোখে চেয়ে থাকে।

সেখানে একটি একটি করে পয়সা জমা পড়ে। অথচ টাকার মাহাত্ত্ব সে জানে না। তাকে জিজ্ঞেস করুন, "ভাত খেয়েছো পেট ভরে"? হাত ভাঙ্গা, পা ভাঙ্গা কত শত লোক আমাদের চারপাশে। অথচ চরম সত্য কেউ, পারতেন আমার একটি হাত নষ্ট করে পৃথিবীতে পাঠাতে। পারতেন তিনি দুইটি চোখের একটি নষ্ট করে দিতে।

কিন্তু আমার সমস্ত দেহ, মন, মাথা, উদড় মুখমন্ডল সবই একটা স্বাভাবিক মানুষের মতই। আমি হাটছি, খেলছি, সময় সময় বুকের রক্ত বিষ করে দিচ্ছি পথে প্রান্তরে। আমার মন তো সেই পঙ্গু লোকের মতই পঙ্গু হয়ে পড়ে আছে। আমি তো তার থেকেও খারাপ অবস্থায় আছি। কেউ উপলব্ধি করেছেন কী? পাজরে প্রেমের অসহ্য ব্যথা সইবার অধিকারটা শুধু আমারই আছে? আর রাস্তায় গড়াগড়ি খাওয়া পঙ্গু ভিখারীটির নেই? অমোঘ সত্যের পেছনে ছুটছেন কেন? দেবালয়ে মাথা ফেড়ে ফেলেন, তবু যতদিন পথের শিশু পথেই থাকবে, ফকির স্বপ্ন দেখার অধিকার পাবে না, প্রতিবন্ধী শিশুটি হাসবে না ততদিন যদি লক্ষ বছরও হয় সেই পরিমাণ সময়ও পরকালে বিধাতা শান্তি দিবেন না।

যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে প্রতিটি অসহায় মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়বেন। দেবালয়ের পথটা তাই অনেক ছোট করে দিয়ে মানবতার জন্য সেবালয় খুলুন। নাহলে মৃতকে গিয়ে প্রশ্ন করুন, "তুমি কেমন আছো"? অবান্তর প্রশ্ন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।