আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিদারুন সত্য কথন (বোরখা সমাচার)

ইমরোজ

আজকের দিনের "আওরঙ্গজেব" দের আর সে পঞ্চাশের দশকের হিন্দু মৌলবাদিদের মধ্যে পার্থক্য নাই। শুধু পার্থক্য এই যে তারা মুসলমান বিদ্বেষি ছিল আর এরা হলো হিন্দু বিদ্বেষি। তথাপি রবীন্দ্রনাথ, শরত চন্দ্র তাদের (তত্কালীন হিন্দু মৌলবাদীদের) বিরুদ্ধে লেখে কেমনে জানি বেঁচে গেছেন। আর এযুগে আমাদের তো মর মর অবস্থা। ঝান্ডা ডান্ডা সর্বপরি বোমার ভয়ে তটস্থ।

তবু, লেখা লেখি করাটা যেন নীরব প্রতিবাদ। তেমনি একটা বিষয় তুলে ধরছি। বোরখা পরলে কি মেয়ে মানুষ সাধু হয়ে যায়? কথাটা কতখানি সত্য? রমনা আর ধানমন্ডি লেকে যে হারে বোরখা প্রেমিকার সংখ্যা বাড়ছে তা রীতিমত ভয়ংকর। বোরখা একটা ভাল শীল্ড হিসেবে কাজ করে। একজন কয়জনের সাথে প্রেম করছে তার খবর কে রাখে।

বস্তুত বাবা মনে করেন মেয়েটা বোরখা পড়ে হিযাব করে, সুতরাং সে খারাপ হবে না। এইজন্য একা ছেড়ে দেন। কিন্তু দুনায়ার খবর তো রাখেন না, পরকালের চিন্তায় তাদের মাথার ফোড়াটা দিন দিন বড় করছেন। শেষটায় যখন মেয়ে কোন ছেলের হাত ধরে ভেগে যাবে তখন বলবেন, "আল্লাহ যা করেন ভালর জন্যই করেন"। এইখানে বলে রাখা ভাল, আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মেয়েই যে নরমাল ড্রেস পড়ে, বা আমাদের দেশে যে পোষাক প্রচলিত তাতে কিন্তু তাদের শরীর যথেষ্টই ঢেকে থাকে।

বোরখা পড়া এই দেশের মেয়েদের জন্য তাই আবশ্যক মনে করি না। সৌদিতে মেয়েরা যথেষ্ট ভাবে বোরখা পড়লেও কি সেখানে রেপ হয় না? যদিও তাদের বিচার খুবই উদ্ভট, তবুও বলছি। কয়বার বাংলাদেশে একটা রেপ কেস, বা এসিড কেসের পর হুজুররা মসজিদে ছেলের দোষটা না দিয়ে মেয়ের দোষটাই দিয়েছেন তার খবরও নেই। সব মেয়েটার দোষ, সে হিযাব করে নাই কেন? অথচ, ছেলেটাকে একবার কি বলা হয় তুমি কেন একাজ করো? এই ঘটনার সাথে শরতচন্দ্রের উদ্ধৃতি দেই, আগেকার দিনে হিন্দু সমাজে বলা হত, "ছেলে একটা না দশটা করুক তাতে কি? মেয়ে মানুষ বলে কথা, তার তো আর ঘরের বাইরে যাওয়াটাও পাপ"। পাঠক কোন পরিবর্তন দেখলেন কি আমাদের এই নব্য সভ্যতর সমাজে? হুজুররা মেয়েদের হিযাব করতে বলতে যতটা ব্যাস্ত তারা কি একবার বলেন ছেলেদের কে যে তোমরা তোমাদের দৃষ্টি সংযত কর? মেয়েরাই গায়ে একশোটা কাপড় জড়িয়ে থাকবে আর ছেলেরা হাফ প্যান্টের সাথে স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ঘুরবে, সেটাতে কোন বাধা নেই কেন? এইটা কি ডিসক্রিমিনেশন নয়? আমার মা বোন, বোরখা পড়ে না।

কিন্তু তাদের চরিত্র কি নষ্ট হয়ে গেছে? বোরখা পড়া না পড়ার মধ্যে কি চরিত্রের মহত্ত কাজ করে? মা বোনকে সব সময় চোখে চোখে রাখেন। এইটা বাঙ্গালীর নিয়ম। একটা পরহেযগার লোক, নামাজ পরলেও তার যদি চারটে বউ থাকে তাহলে তার কি চরিত্রের অবনতি ঘটে নাই? বস্তুত সে তার চরিত্রের দোষের কারণেই চারটে বিয়ে করে থাকেন, কথাটা অপ্রিয় হলেও সত্য। তার সাথে সাথে তিনি ৩ টি মেয়ের জীবন নষ্ট করছেন। কারণ ফিজিক্যালী কখনই ৪ জন মেয়ে একজন স্বামীর কাছ থেকে সমপরিমাণ আদর পায় না।

এইটা সত্য, না মেনে কিছু করার নাই। যাই হোক, এইসব অলিখিত কুসংস্কার যদি সমাজ থেকে দূর না হয় তাহলে সমাজের গতি ক্রমেই পিছিয়ে পড়বে। একটা হীরাকে আপনি যতই কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন না কেন, আলোতে সে চমকাবেই। এটা তার ধর্ম। অপরদিকে একটা কাঁচের টুকরা আলোতেও যা, আঁধারেও তা, তাকে কাল কাপড় দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.