আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যয় ম্যানেজমেন্ট

বিদ্যুতের দাম বাড়ছে- এ খবর শুনে আমরা কী পরিমাণ শকড-ই না হয়েছিলাম। কেউ কেউ তো মনে মনে এই শপথও নিয়ে ফেলেছিলাম, এবার দাম বাড়ালে কোনোভাবেই মেনে নেব না। দুদিন পরপর দাম বাড়াবে। দেশটা মগের মুল্লুক পড়েছে নাকি! কিন্তু শেষ পর্যন্ত হলো কী? বিদ্যুতের দাম বাড়লই। আর আমরা সেটা মেনে নিতে বাধ্য হলাম।

তবে এটাও ঠিক, এরপর থেকেই ঘরে ঘরে শুরু হয়ে গেছে অশান্তি। সব ঘরের খবর তো দেওয়া যাবে না। দু'একটা ঘরের খবর দিচ্ছি। তিনদিন আগের ঘটনা। আমার এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গেছি।

দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল টিপতে গিয়ে শুনি ভেতরে তুমুল ঝগড়া। এই ঝগড়ার মধ্যে ঘরে ঢোকাটা উচিত হবে কি হবে না- এ নিয়ে ভাবতে ভাবতে বেশ খানিকটা সময় পার করে দিলাম। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম এসেছি যখন দেখা না করে যাব না। কলিং বেলে টিপ দিলাম। কিন্তু বাজল না।

আমি থাপ্পড় দিলাম দরজায়। একবার, দুইবার, তিনবার। জি, তৃতীয়বার থাপড়ানোর পর দরজা খোলা হলো। বন্ধুর মুখে প্রচণ্ড বিরক্তি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে।

সে আমার কথার জবাব দেওয়ার আগেই তার বউ তেড়ে এলো। বেশ হাই ভলিউমে বলতে লাগল- কী হয়েছে ওকে জিজ্ঞেস না করে আমার কাছে জিজ্ঞেস করেন। দুটো বালিশ কিনে এনেছে, একেকটার ওজন কমপক্ষে এক মণ। একটু আগে একটা উঠাতে গিয়ে আমার ডানহাতের কব্জি মচকে গেছে। আপনি তো ওর বন্ধু।

ওর মাথার একটা সিটি স্ক্যান করিয়ে আনেন তো! সিটি স্ক্যান কেন ভাবি? ভাবির উত্তর-সিটি স্ক্যান করালেই ধরা পড়বে ওর মাথায় ঘিলু আছে, নাকি গোবরে ভরা। ঘিলু থাকলে কেউ এত ওজনদার বালিশ কিনে? আমি বন্ধুকে একটু আড়ালে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন সে এত ভারি বালিশ কিনেছে। বন্ধু বলল- দোস্ত, আমি জানতে পেরেছি ইস্ত্রি করার সময় নাকি সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ক্ষয় হয়। তাই বিদ্যুতের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আর কাপড় ইস্ত্রি করব না। বরং রাতে ভাঁজ করে বালিশের নিচে রেখে দেব, সকালে কাপড়টা পরে অফিসে চলে যাব।

কিন্তু বালিশ যদি ভারি না হয়, তাহলে তো কাপড় সোজা হবে না। তাই ভারি বালিশ কিনেছি। তারপর কথায় কথায় জানা গেল বিদ্যুৎ খরচের ভয়েই নাকি দরজার কলিং বেলও খুলে রেখেছে। কিন্তু আমি সেখানে থাকতে থাকতেই বাড়িওয়ালা এসে হাজির। সে এসেছে বন্ধুর কাছ থেকে জরিমানা আদায় করতে।

তার ভাষ্য- কলিং বেল খুলে রাখার কারণে সবাই দরজায় থাপড়ায়। এতে দরজার রং তো নষ্ট হয়েছেই, দু একটা তক্তাও নাকি নড়বড়ে হয়ে গেছে। পাঠক, বিদ্যুতের বাড়তি দামের প্রভাবের অল্প স্বল্প নমুনা তো দেখলেন। দিন যত যাবে, এ ধরনের নমুনা আরও দেখতে হবে। এ সম্পর্কে নেয়ামুল চাচার ঘটনাটা শোনা যেতে পারে।

সরি পাঠক, ঘটনাটা বলার আগেই লেখাটা শেষ করতে হচ্ছে। কারণ ল্যাপটপের চার্জ শেষ। বিদ্যুতের দাম বাড়ার পর থেকে ল্যাপটপে কম কম করে চার্জ দিই তো!

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.