আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমলার আত্মহত্যা; কামদেব, তুমি তো আত্মহত্যা করনা, তাহলে এদের করাও কেন?........(১৮+ সত্য পটভুমিতে অনুলিখিত গল্প )

সসবসময় ভাবি যে সময় পেলেই ব্লগ লিখব, কিন্তু সেই সোনার হরিণ সময়টাই পাচ্ছিনা, এক বছরের বেশি হয়ে গেলো তাও আমি এক নিষ্কর্মা ব্লগার..... সেলিম গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের খেটে খাওয়া যুবক। বাড়িতে বুড়ো বাবা, মা, বড় ভাই আর ভাবী ছাড়া আর কেউ নেই। মেট্রিক পাস করার পর আর পড়াশুনাটা সেইভাবে চালানো হয় নাই। আর স্বপ্ন তো একটাই, বিদেশ যাবে। গ্রামের কত যুবকই তো বিদেশ যাচ্ছে।

একদিন পাশের গ্রমের রতন ভাই এসে বললো, তিন লাখ টাকা দে, তোকেও বিদেশ পাঠিয়ে দিবো। সেদিন সেলিম এর মনে হলো, সে যেনো প্রায় বিদেশ চলে গেছে। তার মাথায় শুধু ঘুরছে, ঐদিন ও তো রতন ভাই দুইজনকে বিদেশ পাঠিয়েছে। বাড়িতে এসে সে সবাইকে বিষয়টা জানালো। সবাই রাজি, কিন্তু তিনলাখ টাকা কই পাবে? সেলিম এর বড় ভাই বুদ্ধি দিলো ছেলেকে বিয়ে করাই, সেখান থেকে কিছু টাকাতো ব্যবস্থা করা যাবে।

বাড়ির সবাই সায় দিলো। হায়রে সমাজ! সেলিমের ভাবি তার ছোট বোনকে এই বাড়িতেই বিয়ে দেবার জন্য প্রস্তাব দিলো। তিন লাখটাকা বাপ কোথা থেকে জোগাড় করবে এই চিন্তার চেয়েও বড় যেটা মাথায় কাজ করলো সেটা হলো, বাপের বাড়ির টাকা শ্বশুর বাড়িতে আসলো, ঘরের টাকা ঘরেই রইলো, বোনের ও বিয়ে হলো আর জা এ জা এর সমস্যাও থাকলোনা। হায়রে নারী! আর ইশ্বর উপরে বসে হাসলো!! আর এভাবেই এ বাড়ির বউ হয়ে আসলো কমলা। নিজের আপন বোনের ছায়াতে।

সুন্দর সাজানো সংসার। ইতোমধ্যে সেলিম মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা জোগাড় করল। আস্তে আস্তে বিদেশ যাবার সময় ঘনিয়ে আসলো। কমলার চোখে রন্গীন স্বপ্ন, স্বামী বিদেশ যাবে, আয় করবে, টাকা পাঠাবে, আর সুন্দর ভাবে কেটে যাবে সারাটি জীবন। সেলিম যখন বিদেশ যাবে তখন কমলা পাঁচ মাসের আত্মসত্তা।

সেলিম বিদেশ যাবার সময় কমলাকে দিয়ে গেলো চোখ ভরা জল আর ভবিষ্যতের রংগীন স্বপ্ন। শুরু হলো নতুন অধ্যায়। সেলিম ঐখানে গিয়ে টাকা আয়ের জন্য হন্য হয়ে গেলো আর কমলা তার বাচ্চার জন্ম দিয়ে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখা শুরু করলো বাচ্চাকে মানুষ করার। সেলিম টাকা পাঠানো শুরু করলো। সংসারে সচ্ছলতা আসলো আর এভাবেই কেটে গেলো একটি বছর।

হয়তো এভাবেই কেটে যেতো জীবন। কিন্তু কামদেব, সে কি আর চুপ থাকে। সে তো চুপ থাকার নয়। বিবাহ মানে কামের স্বাদ পাওয়া মানুষ কি বেশিদিন কামদেব এর হাত থেকে রক্ষা পাবে? সে তো আসবেই, তার সেই রূপ হব ভয়ংকর। দুইবছর হতে চললো, সেলিম এর আসার খবর নেই।

একটিবারের জন্য হলেও ছেলেটিকে দেখার জন্য হলেও আসো, কমলার এই অনুনয় সেলিমের কানে ধাক্কা দেয় কিন্তু আসতে পারেনা। বলে আগামী বছর এখানে চাকুরীটা স্থায়ী করে আসবো। আর টাকা পাঠায়, যেনো সংসারে কোনো সমস্যা না হয়। সংসারে আসলেই কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সমস্যা তো তৈরী করেছে কামদেব নিজে, তা ও তার স্বাভাবিক নিয়মে। কামদেব তো চুপ থাকছেনা।

কামদেব প্রতিবেশী যুবক কালামের রূপ ধরে আসে। তার চাহনী অগ্রাহ্য করা সম্ভব হয় না কমলার। কমলা অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু কালাম যেন পিছুই ছাড়েনা। তার কথাই হলো, আমি তোমার প্রেমে পড়েছি কমলা, আমাকে একটু প্রেম দাও। কমলাও হেসে হেসে উড়িয়ে দেয়।

কিন্তু কালাম প্রথম যখন অশ্লীল ইন্গিত করে, তখন কমলা কালামের গালে চড় মেরেছিলো তারপরও কমলার কাউকে কিছু বলার সাহস হয়নি। আর কালাম.... সে তো কমলার প্রেমে কখন পড়েছে সে নিজেও জানে না। হয়তো প্রথম যখন কমলাকে পুকুরে গোসোল করতে দেখেছিলো, তখন থেকেই তার মাথায় একটি নাম, কমলা, একটি দেহ, সেটিও কমলার। যেদিন কালামকে চড় মারে সেদিন কমলা স্বামীর কাছে অনেক কান্নাকাটি করেছে, কেন ছেলেকে দেখতে আসেনা, কেন তাকে দেখতে আসে না? সেলিম এর পক্ষে আসা সম্ভব হয় না। সেলিম টাকা পাঠায়, কিন্তু হায়, টাকাতো আর কামদেবকে খুশী করতে পারে না।

ভাবে সেলিম কিভাবে সেখানে দিন যাপন করছে? কালাম বলে, আমারে টাইম না দাও কিন্তু যেনে রাখো তোমার জামাই কিন্তু বিদেশী মেয়ের পাল্লায় পড়েছে। কমলা ভাবে অনেক কিছু। আর ঐযে কামদেব, সে ও তো পথের কাঁটা হয়ে দাড়িয়ে আছে। আস্তে আস্তে জড়িয়ে যায় কালাম এর সাথে। কামদেব যে কালামের রূপ ধরেই এসেছে।

দিন ভালোই কাটছিলো, কিন্তু আপন বোনের হাতে প্রথম ধরা খায়, তারপর ধরা খায় ভাসুরের হাতে। যে বোন তাকে নিজের সংসারে এনেছিলো, আজ কমলার অপরাধে সেই বোনের সংসার ও তছনছ হবার উপক্রম। শ্বশুর বাড়ির সবাই কমলাকে তো দোষ দেয়ই তার বোনকেও বলতে ছাড়েনা। কিছুই বুঝতে পারে না কমলা। একদিকে স্বামী, সন্তান; একদিকে বোন ও বোনের সংসার আর অন্যদিকে কামদেবরূপী কালাম।

অসহায় কমলা শুধু অবলম্বন খোঁজে, কী করবে। একদিন সেলিমের সাথে চরম ঝগড়া করে নিজেকে সপে দেয় সর্বশক্তিমানের হাতে................................... লাশটি যখন দেখি, শুধু ভাবি এত কম বয়সী মেয়েটি আজ কতটা ভাগ্যহীনা হলে আত্মহত্তার মতো এত বড় একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে আর মনে মনে বলি, হে কামদেব তোমার কারণে আজ একটি আত্মহত্তা দেখতে হলো সমাজকে। কেন? কামদেব, তুমি তো আত্মহত্যা করনা, তাহলে এদের করাও কেন??.................. ১৩/০৯/২০১২ পূর্বের লেখা: লিংগদাহ ও দুটি মেয়ের অনিশ্চিত জীবন (সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা অবলম্বনে, হয়তো কিছুটা ১৮+) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.