https://www.facebook.com/blogger.sadril “পোওওওওওওওও” করে বেজে উঠে হর্ণ। বদিকে ডাকতে গাড়ির হর্ণ বাজাচ্ছিলো বাকের ভাই। মাইক্রো বাসটি ভাড়া করা হয়েছে নুহাশ পল্লী যাবার জন্য। হর্ণ শুনে হন্তদন্ত হয়ে পাঞ্জাবির বোতাম লাগাতে লাগাতে বাসা থেকে বের হয়ে আসে বদি। দাড়িয়ে থাকা গাড়ির ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে ডান হাতের আঙ্গুলে চেন ঘোড়াতে থাকা বাকের ভাইকে সে বলে, “হর্ণটা আস্তে বাজাইলেই পারতেন বাকের ভাই।
শুইনা প্রথমে ভাবছিলাম ইস্রাফিল শিঙ্গায় ফু দিছে”। বাকের ভাই তার সানগ্লাস খুলে ফু দিয়ে পরিষ্কার করতে করতে বদিকে বলে “গাড়ির পেছনে মজনুর পাশে উইঠা বোস”।
বদি দেখে পেছনে আয়েশ করে বসে আছে মজনু। স্যান্ডো গেঞ্জির উপর সে পড়েছে সবুজ জ্যাকেট। বদি বাকের ভাইকে বলে “বাকের ভাই,আমি আপনার পাসেই বসমু”।
“ঠিক আছে বোস”। বাকের ভাই অনুমতি দিলে বদি আনন্দে আত্নহারা হয়ে গাড়িতে উঠে যায়।
-“বদি”
-“ইয়েস বাকের ভাই”
-“আমি তোকে আমার পাশে চাইপা বসতে বলছিলাম,আমার কোলে বসতে বলি নাই”
-“ভেরি সরি বাকের ভাই। আসলে ছন্দা খাওয়ায় খাওয়ায় আমারে মোটা বানায় ফেলছে,তাই জায়গা হইতাছে না। ড্রাইভার সাহেব, if you don’t mind, আমি কি আপনার কোলে বসতে পারি।
তাহলে বাকের ভাই-এর কষ্টও কম হবে,আমারও বাকের ভাই-এর পাশে থাকা হবে”। ড্রাইভার আতঙ্কিত চোখে বদির দিকে তাকায়। সে তাদের ভালো করেই চিনে। তারপরও অবাক হচ্ছে। কেমন পাবলিক এরা?মাইক্রোর পেছনে বিশাল জায়গা থাকা সত্ত্বেও সামনে গাদাগাদি করছে!!!
“বদি,তুই আমার কোলেই চুপ করে বসে থাক।
ড্রাইভারের কোলে বসতে গেলে গাড়ি রাস্তার কোল থেকে পড়ে যাবে”। বাকের ভাই-এর এমন কথায় বদি বাকের ভাই-এর কোলে আরাম করে বসে। গাড়ি চলতে শুরু করে। বদি ড্রাইভারকে বলে “হাওয়া মে উরতা যায়ে গানটা বাজান। ওইটা বাকের ভাই-এর হিট গান”।
ড্রাইভার কাচুমাচু মুখ করে বলে “ঐ গানের ক্যাসেট এই যুগে আর পাওয়া যায় না। এখন নতুন গান। মুন্নী বদনাম, শিলা কি জাওয়ানি,চিকনি চামেলি”। বদি এবার বাকের ভাইকে বলে “আজকালকার গানের অবস্থা দেখছেন বাকের ভাই!হাওয়া মে উরতা যায়ে গানের মতো গান এই দিনে আর হয় না। ভাগ্যিস হয় না।
এই দিনে ঐ গান হইলে গানের কথা হইতো হাওয়া মে উড়তা যায়ে মেরা লাল মিনি স্কার্ট মান মান কা”। বাকের ভাই ঠান্ডা গলায় বলে “বদি তুই চুপ কর। ড্রাইভার সাহেব,আপনি নিকেতনের রাস্তার ফুটপাথের দাড়াবেন। সেখান থেকে আমারা হিমু সাহেবকে তুলবো”।
নিকেতনের রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
ডান পাশে বড়লোকদের বড় বাড়ি,বাম পাশের রাস্তার ফুটপাথের ঝুপড়ি। হিমুর দেখা নেই। বদি বাকের ভাইকে বললো “বাকের ভাই, হিমু সাহেব কি আমদের ডজ দিলো”। বাকের ভাই মাথা নাড়লো, “আমার মনে হয় না। রূপা নামের একটা রুপবতী মেয়ে আমার এলাকায় এসে আমাকে বলে গেছে নুহাশপল্লীতে যাবার সময় হিমু সাহেবকে এই জায়গায় থেকে তুলে নিতে।
সে নাকি তার ইনটিউইশন থেকে জেনেছেন আমরা আজ নুহাশ পল্লী যাইতেছি। রূপাকে ফোন করে বলে দিয়েছেন আমাকে এসে তার কথা বলে যেতে”।
হিমু যেভাবে উদয় হলো সেটা তাদের কেউই আশা করে নাই। সে বেরিয়ে এলো তাদের পার্শ্ববর্তী ঝুপড়ি থেকে। হলুদ পাঞ্জাবী ঝাড়তে ঝাড়তে সে উঠে বসে গাড়ির পেছনের সিটে।
“হিমু সাহেব, আপনি এখানে কি করছেন”।
-কাল রাতে হাটতে হাটতে এই এলাকায় এসে দেখি বড়লোকদের বাড়ির পাশে বেশ সুন্দর করে গরীবেরা ঝুপড়ি তুলেছে। থাকার খুব ইচ্ছে হলো। হাওয়া আলী নামের এক হিরোইনখোরের কাছ থেকে বিশ টাকা বাবদ ঐ ঝূপড়িটা ভাড়া নিলাম। কিন্তু আমাকে ভাড়া দিয়ে হাওয়া আলী রাতেই রহস্যজনকভাবে হাওয়া।
তাকে ভাড়ার টাকা দেয়া হয় নাই,এদিকে আমার পাঞ্জাবির পকেট না থাকায় টাকাও নেই। আচ্ছা,বাকের সাহেব, আপনার কি মনে হচ্ছে না গাড়িতে কিছু একটা অস্বাভাবিক”?
“কোনটা অস্বাভাবিক?পেছনে জায়গা খালি রেখে সামনে তিনজন চাপাচাপি করতেছি সেটা?
“না। আমাদের মাঝে মিসির আলী সাহেব নেই। উনি না থাকলে হুমায়ন স্যারের কোটা পুরণ হয় না”।
“মিসির আলী সাহবে গাজিপুরের ওদিকেই আছেন।
ওইখানের কোন গ্রামে নাকি গত রাতে ভূত দেখা যাবার কথা। ভুতের সাথে তিনি তার এ্যাপয়েনমেন্ট শেষ করে সকালে নুহাশ পল্লীতে আমাদের অপেক্ষায় থাকবেন”।
হাওয়া আলীকে না পাওয়ায় হাওয়ার গতিতে গাড়ি ছুটলো গাজিপুরের উদ্দেশ্যে। টঙ্গীর দিকে ঢুকেই হিমু বললো,
“বাকের সাহেব, চা খেতে ইচ্ছে করছে। চা খাওয়ান”।
বদি জানালো “বাকের ভাই, তার নিজ এলাকার আজিজ মিয়ার দোকান ছাড়া অন্য কোথাও ইদানিং চা খান না”।
“বাকের সাহবে,আমার ইনটুইশন বলছে সামনে যে চায়ের দোকান দেখা যাচ্ছে,সেটার দোকানদারের নামও আজিজ মিয়া। গাড়ি থামান। না থামালে আমি চা খাবার জন্য গাড়ি থেকে লাফ দিবো”।
গাড়ি থামানো হলো।
হিমু চাওয়ালার সামনে এসে বললো “তোমার নাম নিশ্চই আজিজ মিয়া”। যুবক চাওয়ালা মাথা ঝাকায়। “আমাদের সবাইকে চা দাও”। বদি পেছন থেকে হাক দেয় “পানিতে কাপ ওয়াশিং কইরা সবাইরে চা দাও। বাকের ভাই-এরটা একটু স্পেশাল কইরা দিও”।
চা খেয়ে সবাই উঠলো আবার গাড়িতে। গাড়ি গাজীপুরের রাস্তায় প্রবেশ করতেই হিমু বলে উঠে, “বাকের ভাই,মোনাকে সাথে নিলেন না কেন?”
“মোনাকে আনি নাই ভালো করছি। এখন বৃষ্টির সিজন, নুহাশ পল্লীতে অনেক কাদা। মেয়েছেলে কাদায় উষটা খেয়ে ব্যারাছ্যাড়া হয়ে পড়ে বিপদ ঘটাতে পারে”।
“আপনি কি সারাক্ষন হাতে ঐ চেইনটা ঘোরাতে থাকেন?”হিমুর এমন প্রশ্নে বাকের ভাই উত্তর দেয় না,চেইন ঘরাতে থাকে।
হিমু বলে, “হুমায়ুন আহমেদ স্যার আমাদের তিনজনকেই রাখলেন ঘোরাঘুরির ভেতর। আপনি চেইন ঘুরান,আমি পথে পথে ঘুরি আর মিসির আলীর রহস্যের কথা শুনলে মাথা ঘুরে যায়”।
ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তা বেশ খালি। গাড়ি দ্রুত ঢুকে পড়ে পিরুজালি গ্রামের কাচা রাস্তায়। এখান থেকে ১০ কিমি পথ গেলেই নুহাশ পল্লী।
কিন্তু অন্যান্য দর্শনার্থীদের গাড়ির ভিড়ে এই ছোট্ট রাস্তায় অনেক জ্যাম। হিমু বলে “বাকের ভাই,গাড়ির মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমি বরং নেমে গিয়ে হাটা শুরু করি। আপনারা গাড়ি নিয়ে ধীরে সুস্থে আসেন”।
“এতদূর এই কাদাপথ মাড়াবেন ক্যামনে?আপনার পায়ে তো স্যান্ডেলও নাই”।
“আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমার জন্য স্পেশাল উদ্ধারকারী আসবে”।
এমন সময় বাইর থেকে একটা কন্ঠ ভেসে আসে “আরে,হিমু ভাই না”?ড্রাইভার সহ গাড়ির ভেতরে থাকা ৫জনই জানালা দিয়ে উকি মেরে দেখে তিন চাকা বিশিষ্ট ছাদহীন বেবীট্যাক্সীর মতো দেখতে একটি বাহনের ড্রাইভিং সিটে বসে আছে আঠারো-উনিশ বছরের এক তরুন। সে বলে উঠে “হিমু ভাই আমারে চিনছেন?আমি দবির”। হিমু কিছু বলার আগেই বদি বলে উঠে “তোমার এই বাহন এমন ক্যান?দেখলে মনে হয় বেবীট্যাক্সীরে ছিল্লা কাইট্টা লবন মাখাইয়া এই যান নামাইছো”। দবির জবাব দেয় “এইডা গাজীপুরে চলে।
এইডারে কয় অটো। হিমু ভাই,আমারে চিনতে পারছেন কিনা কইলেন না তো”?
“তোকে চিনেছি। কয়েক বছর আগে তুই আমার কাছে এসে বলিছিলি তুই লেখাপড়া করে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার হইতে চাস,কিন্তু কলেজে ভর্তি হবার টাকা নাই। আমি বাদলের আব্বার থেকে টাকা নিয়ে তোকে দিয়েছিলাম। এখন কি লেখাপড়া ছেড়ে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার হবার স্বপ্ন বাদ দিয়ে অটো চালিয়ে বেড়াস?”
“লেখাপড়া ছাড়ছি ঠিকক,কিন্তু অটোমুবাইল ছাড়ি নাই।
এই দেখেন অটো চালাইতাছি আর পকেটে মুবাইলও আছে”। অটো আর মোবাইল দুটোকেই কব্জা করার আনন্দে দবিরের মুখের হাসির পরিধি বাড়ে।
“হিমু ভাই,আপনে আমার অটোতে চইড়া বসেন। আপনেরে সামনে নামায় দিমু। গাড়িতে গেলে ম্যালা দেরী”।
দবিরের এমন নিমন্ত্রনে হিমু গাড়ি থেকে লাফ মেরে অটোতে চলে যায়। বাকের ভাই-এর দিকে তাকিয়ে বলে “আমার মনে হয় মোনাকে সঙ্গে নিয়ে আসলেই পারতেন। সে ব্যারাছ্যাড়া হয়ে পড়ে যাইতে চাইলে এই সুযোগে আপনি তার হাত ধরতে পারতেন। কোথাও কেউ নেই নাটকে তো একবারও হাত ধরতে পারলেন না, এটাই ছিলো আপনার জন্য সুযোগ”।
বাকের ভাই কিছু না বলে আরো জোরে জোরে চেন ঘুড়াতে থাকে।
“ও বাকের ভাই,আমি আপনার সাথে একটা মজা করে চলেছিলাম। ইনটিউইশন খাটিয়ে বলেছিলাম যে চায়ের দোকানদারের নাম আজিজ মিয়া,তার নাম আসলে হাসান সরদার। আমি যখন তাকে বলেছিলাম তোমার নাম নিশ্চই আজিজ মিয়া,সে শুধু মাথা নাড়িয়েছিলো। সে আমার অপিরিচত হলে পাল্টা প্রশ্ন করতো “আপনি কেমনে জানলেন”?সে সেটা করে নাই। কারন সে আমার খুব ভক্ত।
আমি যদি তাকে গিয়ে বলতাম “তুমি নিশ্চই সম্রাট নেপোলিয়ন”। তাহলেও সে হ্যা সূচক মাথা নাড়তো”।
বাকের ভাই চেন ঘোরান কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ করে স্থির চোখে হিমুর দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে আবার চেইন ঘোরাতে থাকে। হিমু অটোতে চড়ে চলে যায়।
বাকের ভাইএর ভাড়া করা গাড়ি আরো অনেক পরে জ্যাম দিঙ্গিয়ে নুহাশ পল্লীর গেট পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়। ড্রাইভারকে অপেক্ষা করতে বলে ভেতরে ঢুকে যায় বাকের ভাই,বদি আর মজনু”।
যাত্রীরা চলে গেলে ড্রাইভার একটা লম্বা ঘুম দেয়। অনেকদিন হলো রাতে তার ভালো ঘুম হয় না। নুহাশ পল্লী আগেও এসে দেখার সুযোগ হয়েছে তার।
। নিজেও সে হুমায়ন আহমেদের ভক্ত। । আজ আর নুহাশ পল্লীর ভেতরে ঢুকার ইচ্ছা নাই, এতো মানুষের ভীড়ে নুহাশ পল্লীর প্রাকৃতিক নৈঃসর্গ বোঝা দায়।
ঘুম থেকে ড্রাইভার উঠে বিকেলে।
সন্ধ্যা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের অন্যান্য গাড়ি বিদায় নিলেও বাকের ভাইদের দেখা নেই। এমন স্ময় গাড়ির দিকে আসতে দেখা যায় গায়ে চাদর জড়িয়ে রাখা অসম্ভর রোগা এক বৃদ্ধকে। কৌতহল ভরা চোখে সে প্রশ্ন করে “সব গাড়ি চলে গেলো আপনি বসে আছেন কেন?”
আমার যাত্রীরা নুহাশ পল্লীতে ঢুকে আর বের হচ্ছে না”।
“আপনার যাত্রীরা কারা”?
“হিমু,বাকের ভাই আর বাকের ভাই-এর দুই চামচা”।
শুনে বৃদ্ধ অবাক।
“হিমু,বাকের ভাই এরা তো হুমায়ন আহমদের সৃষ্টি। বাস্তবে এরা নেই। আপনি তাদের কীভাবে দেখলেন?”
ড্রাইভার বিবরণ দেয় সারা পথ কীভাবে সে বাকের ভাই আর হিমুকে নিয়ে এসেছে।
“আপনার কী রাতে ভালো ঘুম হয়”?বৃদ্ধ আবার প্রশ্ন করে।
“অনেকদিন হলো রাতে ঘুম হয় না”।
“নুহাশ পল্লীতে আগে এসেছেন?”
জ্বি। এখানকার রাস্তা আমার চেনা”।
আমার যা মনে হচ্ছে আপনি সিজোফ্রেনিয়া নামের মনস্তাত্তিক রোগে ভুগছেন। আপনার মনে হয়েছে আপনি বাকের ভাই আর হিমুকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন,চায়ের দোকানে গাড়ি থামিয়ে তাদের সাথে চা খাচ্ছেন। আপনি আসলে গাড়ি চালিয়ে একাই এসেছেন,যেহেতু পথঘাট চেনা,আপনার অসুবিধা হয় নাই।
বেশির ভাগ ঘটনাই বাস্তবে ঘটেনি,আপনার হ্যালুসিনেশনের ভেতরে ঘটেছে।
“আপনি কে”?
"আমি একজন সাইক্রিয়াটিস্ট। আপনার উচি আমার মতো কোন সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখিয়ে রোগের চিকিতসা করানো"। এই বলে বৃদ্ধ চলে যেতে থাকে।
ড্রাইভারের আগেই মনে হচ্ছিলো এই বৃদ্ধকে সে চেনে।
আকস্মিক সে বুঝতে পারে এই বৃদ্ধ আর কেউ না স্বয়ং মিসির আলী। সে দৌড় দেয় মিসির আলীকে ধরার জন্য। কিন্তু সন্ধ্যার আবছা আধারে সে মিসির আলীর মতো কাউকেই দেখতে পায় না। তাহলে মিসির আলীও কি হ্যালুসিনেশন???
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।