সৌরজগতের বাইরে একটি গ্রহের মৃত্যুর প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জ্যোতির্বিদদের একটি আন্তর্জাতিক দল দেখেছে, একটি লোহিত নক্ষত্র বা লোহিত দানব সম্প্রসারিত হয়ে তার পার্শ্ববর্তী গ্রহকে গিলে ফেলছে। এ গবেষক দলের সদস্য পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিপদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক অ্যালেক্স উলজজান বলেছেন, “একই ভাগ্য আমাদের পৃথিবীর জন্যও অপেক্ষা করছে। সূর্য যখন ‘লোহিত দানবে’ পরিণত হবে তখন এটি পৃথিবীর কক্ষপথ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। আর এভাবেই পৃথিবীকে গিলে ফেলবে সূর্য।
অবশ্য সেই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটতে এখনো পাঁচশ’ কোটি বছর সময় লাগবে। ” উলজজান এর আগে আমাদের সৌরজগতের বাইরে প্রথম গ্রহ আবিষ্কারের কৃতিত্ব অর্জন করেন। এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং তার দল অত্যন্ত বেশি ভরসম্পন্ন একটি গ্রহও আবিষ্কার করেছেন। বিডি+৪৮৭৪০ নামক সেই একই নক্ষত্র যা একটি গ্রহকে গিলে ফেলেছে তাকে কেন্দ্র করে গ্রহটি আবর্তন করছে। কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো- গ্রহটির কক্ষপথ ইলিপটিক্যাল (উপবৃত্তাকার বা ডিম্বাকৃতি)।
বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রটি একটি ‘লোহিত দানব’, সূর্যের চেয়ে বেশি বয়সী এবং ব্যাস সূর্যের ১১ গুণ। এ জ্যোতির্বিদরা হবি-এবার্লি টেলিস্কোপ দিয়ে ওই বয়স্ক নক্ষত্র (বিডি+৪৮৭৪০) এবং তাকে আবর্তনকারী গ্রহগুলো খুঁজতে গিয়ে লোহিত দানবের মধ্যে গ্রহ হারিয়ে যাওয়ার প্রমাণ পান। তারা আরো দেখেছেন, নক্ষত্রটির রাসায়নিক গঠনও খুব অদ্ভুত। আর তাকে আবর্তনকারী গ্রহগুলোর কক্ষপথও আশ্চর্যজনকভাবে উপবৃত্তাকার। কোনো নক্ষত্রের নির্দিষ্ট বয়স পরে লোহিত দানবে পরিণত হওয়ার সময় তার চারপাশের গ্রহ গিলে ফেলার প্রমাণ এ-ই প্রথম পাওয়া গেল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, “এমন ভাগ্য অন্য সৌরজগতের ক্ষেত্রেও ঘটবে। আমাদের পৃথিবীও এমন ভাগ্য বরণের অপেক্ষায় আছে। তবে তার জন্য আরো পাঁচশ’ বছর সময় লাগবে। ” এ ব্যাপারে গবেষক দলের সদস্য আডামো বলেন, “আমাদের বর্ণালিবীক্ষণ পরীক্ষা থেকে মনে হচ্ছে, বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রটিতে অস্বাভাবিক পরিমাণে লিথিয়াম ধাতু রয়েছে। এ বিরল মৌলটি বিগব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পরে প্রাথমিক মৌল হিসেবে সৃষ্টি হয়েছিল।
যেখানে বিগব্যাং ঘটে এক হাজার ৪শ’ কোটি বছর আগে। ”উল্লেখ্য, নক্ষত্রের মধ্যে লিথিয়াম খুব সহজেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিগব্যাং ছাড়াও সুনির্দিষ্টভাবে মাত্র কয়েকটি পরিবেশে লিথিয়াম মৌল সৃষ্টি হওয়া সম্ভব। আর এটি শুধু নক্ষত্রের মধ্যেই হতে পারে। তবে বিডি+৪৮৭৪০ এর মতো পুরনো নক্ষত্রে এতো বিপুল পরিমাণ লিথিয়ামের উপস্থিতি বিজ্ঞানীদের দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছে।
তারা ধারণা করছেন, বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রের মধ্যে লিথিয়াম উৎপাদন ত্বরান্বিত হয়েছে সম্ভবত ওই বিপুল ভরের গ্রহটি গিলে ফেলার সময়। গ্রহটি খেয়ে ফেলার সময় নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে লিথিয়াম সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। তবে, বৃহস্পতির চেয়ে ১ দশমিক ৬ গুণ বেশি ভরযুক্ত অপর গ্রহটির অত্যন্ত উপবৃত্তাকার কক্ষপথের ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ক্রম সম্প্রসারণশীল কোনো নক্ষত্রের চারপাশের কোনো গ্রহের এমন কক্ষপথ থাকার কথা নয়। অবশ্য অত্যন্ত বেশি ভর বিশিষ্ট গ্রহগুলোর মধ্যে মহাকর্ষীয় মিথস্ত্রিুয়ার কারণে এমনটি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, লোহিত দানব হলো বিশালাকৃতির উজ্জ্বল ও অপেক্ষাকৃত কম বা মধ্যম ভরযুক্ত (০.৫-১০ সৌরভর) নক্ষত্র। এটি নক্ষত্রের বিবর্তনের অনেক পরের ধাপ। এ ধরনের নক্ষত্রের বাইরের আবরণ স্ফীত এবং পাতলা হয়। এর ব্যাসার্ধ অনেক বেশি এবং পৃষ্ঠের তাপমাত্রা অনেক কম (৫ হাজার ক্যালভিন)। এ ধরনের নক্ষত্র দেখতে হলুদাভ কমলা থেকে লাল রংয়ের হতে পারে।
সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত এসব তথ্যপ্রমাণ জ্যোতিপদার্থ বিদ্যা বিষয়ক সাময়িকী লেটারসে প্রকাশ করা হয়েছে। নক্ষত্রের গ্রহ ভক্ষণ বাংলানিউজ
সৌরজগতের বাইরে একটি গ্রহের মৃত্যুর প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জ্যোতির্বিদদের একটি আন্তর্জাতিক দল দেখেছে, একটি লোহিত নক্ষত্র বা লোহিত দানব সম্প্রসারিত হয়ে তার পার্শ্ববর্তী গ্রহকে গিলে ফেলছে। এ গবেষক দলের সদস্য পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিপদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক অ্যালেক্স উলজজান বলেছেন, “একই ভাগ্য আমাদের পৃথিবীর জন্যও অপেক্ষা করছে। সূর্য যখন ‘লোহিত দানবে’ পরিণত হবে তখন এটি পৃথিবীর কক্ষপথ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
আর এভাবেই পৃথিবীকে গিলে ফেলবে সূর্য। অবশ্য সেই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটতে এখনো পাঁচশ’ কোটি বছর সময় লাগবে। ” উলজজান এর আগে আমাদের সৌরজগতের বাইরে প্রথম গ্রহ আবিষ্কারের কৃতিত্ব অর্জন করেন। এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং তার দল অত্যন্ত বেশি ভরসম্পন্ন একটি গ্রহও আবিষ্কার করেছেন। বিডি+৪৮৭৪০ নামক সেই একই নক্ষত্র যা একটি গ্রহকে গিলে ফেলেছে তাকে কেন্দ্র করে গ্রহটি আবর্তন করছে।
কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো- গ্রহটির কক্ষপথ ইলিপটিক্যাল (উপবৃত্তাকার বা ডিম্বাকৃতি)। বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রটি একটি ‘লোহিত দানব’, সূর্যের চেয়ে বেশি বয়সী এবং ব্যাস সূর্যের ১১ গুণ। এ জ্যোতির্বিদরা হবি-এবার্লি টেলিস্কোপ দিয়ে ওই বয়স্ক নক্ষত্র (বিডি+৪৮৭৪০) এবং তাকে আবর্তনকারী গ্রহগুলো খুঁজতে গিয়ে লোহিত দানবের মধ্যে গ্রহ হারিয়ে যাওয়ার প্রমাণ পান। তারা আরো দেখেছেন, নক্ষত্রটির রাসায়নিক গঠনও খুব অদ্ভুত। আর তাকে আবর্তনকারী গ্রহগুলোর কক্ষপথও আশ্চর্যজনকভাবে উপবৃত্তাকার।
কোনো নক্ষত্রের নির্দিষ্ট বয়স পরে লোহিত দানবে পরিণত হওয়ার সময় তার চারপাশের গ্রহ গিলে ফেলার প্রমাণ এ-ই প্রথম পাওয়া গেল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, “এমন ভাগ্য অন্য সৌরজগতের ক্ষেত্রেও ঘটবে। আমাদের পৃথিবীও এমন ভাগ্য বরণের অপেক্ষায় আছে। তবে তার জন্য আরো পাঁচশ’ বছর সময় লাগবে। ” এ ব্যাপারে গবেষক দলের সদস্য আডামো বলেন, “আমাদের বর্ণালিবীক্ষণ পরীক্ষা থেকে মনে হচ্ছে, বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রটিতে অস্বাভাবিক পরিমাণে লিথিয়াম ধাতু রয়েছে।
এ বিরল মৌলটি বিগব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পরে প্রাথমিক মৌল হিসেবে সৃষ্টি হয়েছিল। যেখানে বিগব্যাং ঘটে এক হাজার ৪শ’ কোটি বছর আগে। ”উল্লেখ্য, নক্ষত্রের মধ্যে লিথিয়াম খুব সহজেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিগব্যাং ছাড়াও সুনির্দিষ্টভাবে মাত্র কয়েকটি পরিবেশে লিথিয়াম মৌল সৃষ্টি হওয়া সম্ভব। আর এটি শুধু নক্ষত্রের মধ্যেই হতে পারে।
তবে বিডি+৪৮৭৪০ এর মতো পুরনো নক্ষত্রে এতো বিপুল পরিমাণ লিথিয়ামের উপস্থিতি বিজ্ঞানীদের দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছে। তারা ধারণা করছেন, বিডি+৪৮৭৪০ নক্ষত্রের মধ্যে লিথিয়াম উৎপাদন ত্বরান্বিত হয়েছে সম্ভবত ওই বিপুল ভরের গ্রহটি গিলে ফেলার সময়। গ্রহটি খেয়ে ফেলার সময় নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে লিথিয়াম সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। তবে, বৃহস্পতির চেয়ে ১ দশমিক ৬ গুণ বেশি ভরযুক্ত অপর গ্রহটির অত্যন্ত উপবৃত্তাকার কক্ষপথের ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ক্রম সম্প্রসারণশীল কোনো নক্ষত্রের চারপাশের কোনো গ্রহের এমন কক্ষপথ থাকার কথা নয়।
অবশ্য অত্যন্ত বেশি ভর বিশিষ্ট গ্রহগুলোর মধ্যে মহাকর্ষীয় মিথস্ত্রিুয়ার কারণে এমনটি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, লোহিত দানব হলো বিশালাকৃতির উজ্জ্বল ও অপেক্ষাকৃত কম বা মধ্যম ভরযুক্ত (০.৫-১০ সৌরভর) নক্ষত্র। এটি নক্ষত্রের বিবর্তনের অনেক পরের ধাপ। এ ধরনের নক্ষত্রের বাইরের আবরণ স্ফীত এবং পাতলা হয়। এর ব্যাসার্ধ অনেক বেশি এবং পৃষ্ঠের তাপমাত্রা অনেক কম (৫ হাজার ক্যালভিন)।
এ ধরনের নক্ষত্র দেখতে হলুদাভ কমলা থেকে লাল রংয়ের হতে পারে। সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত এসব তথ্যপ্রমাণ জ্যোতিপদার্থ বিদ্যা বিষয়ক সাময়িকী লেটারসে প্রকাশ করা হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।