আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপির সাংগঠনিক মাস ব্যর্থ, জামায়াত সংগঠিত

ভাষা ধর্ম বর্ণ আর আভিজাত্যে বিশ্ব আজ বহুধা খণ্ডিত। কেউ প্রথম বিশ্বের, কেউ তৃতীয় বিশ্বের। কেউ হিন্দু কেউ মুসলমান কেউবা হিন্দু.....এত জটিলতায় কাজ নেই। আমি মানুষ এবং একজন বাঙালি এটাই হোক আমার পরিচয়। এতেই আমি গর্বিত।

দানিয়েল হাবীব নোভা, ঢাকা : আগস্ট- বিএনপির সাংগঠনিক মাস শেষ হতে চলল। কিন্তু সাংগঠনিক তৎপরতায় ইতিবাচক প্রভাব তো পড়েইনি বরং নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বলা যায় বিএনপির সাংগঠনিক মাস কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। অথচ তাদের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী নিজেকে অনেকটাই গুছিয়ে এনেছে। আর বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল দিন দিন বাড়ছে।

এ দ্বন্দ্ব দেশ ছেড়ে বিদেশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। চলতি আগস্ট মাসকে বিএনপি সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা করে। উদ্দেশ্য ছিল- কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে নিজেদের মধ্যে লবিং-গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটানো। কিন্তু দলটির এ উদ্দেশ্য কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। কোন্দলের অবসান তো হয়নি উল্টো নতুন করে দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে মতবিরোধ চরমে পৌঁছেছে।

বিএনপির মুখপাত্র ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য দ্বন্দ্ব কিংবা মতবিরোধের কথা টাইমস ওয়ার্ল্ডের কাছে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বিএনপি এখন আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ। তবে মির্জা ফখরুলের এ দাবি দলের অনেকেই মানতে নারাজ। তাদের ভাষ্য এ মুহূর্তে দলের মধ্যে যে ঐক্যের প্রয়োজন সেটা কেন্দ্র বা মাঠ পর্যায়ে কোথাও নেই। দলটি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অবশ্য দ্বন্দ্বের কথা আংশিক স্বীকার করে বলেছেন , বিএনপির মতো একটি বড় দলে সামান্য কোন্দল থাকতেই পারে।

এদিকে স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সাথে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের অবসান তো ঘটেইনি বরং সেটা বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, আমানের সাথে কারো দ্বন্দ্ব নেই। আমান নিজেই নিজের শত্রু। এ প্রসঙ্গে জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও আমান উল্লাহ আমানকে পাওয়া যায়নি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের মধ্যে মতবিরোধ এখন ওপেন সিক্রেট।

তাদের সম্পর্ক এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে দু’জনের মধ্যে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ। এ বিষয় নিয়ে মওদুদ আহমেদ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপর দিকে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম যশোরসহ আশেপাশের জেলায় একক প্রাধান্য বজায় রাখতে তার অঞ্চলে দ্বিতীয় কোন নেতা উঠে আসুক তা চান না। যারাই একটু মাথা চাড়া দিয়ে উঠেন, তাদেরকে তিনি নানা কৌশল ও শক্তি প্রয়োগে দলের মধ্যে নিষ্ক্রিয় করে রাখেন। তা না হলে কোন কারণ দেখিয়ে দল থেকে বহিষ্কার করেন।

তার উদ্দেশ্য একটাই- ছোট ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে স্থানীয় রাজনীতিতে শক্তিশালী করা। এমনও দেখা গেছে, স্থানীয় অনেক সিনিয়র নেতাকে রাজনীতিতে সদ্য আসা অমিতের পরামর্শ নেয়ার জন্য তরিকুল ইসলাম জানিয়ে দেন। এতে বেশিরভাগ নেতাই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এমন অভিযোগ অনেকেরই। শুধু যশোর নয় ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলায় দলের মধ্যে একাধিক গ্রুপ সৃষ্টির নেপথ্যে তরিকুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

খোদ যশোরে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে দুটি গ্রুপ দৃশ্যমান। একটি যশোর পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম অপরটি তরিকুল ইসলামের গ্রুপ। দু’জনে পরস্পর চাচা-ভাতিজা হলেও তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে। তার একটিই কারণ মারুফ রাজনীতিতে যত এগোবে তরিকুল পুত্র তত পেছাবে। মারুফুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

ঝিনাইদহের সাবেক সংসদ সদস্য মশিউর রহমান কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, বৃহত্তর যশোরের এক কেন্দ্রীয় নেতা রাজনীতির নামে মোড়লিপনা করছেন বহু দিন ধরে। তিনি গ্রুপ সৃষ্টি করবে আবার দু’গ্রুপকেই নিজের হাতে রাখার চেষ্টা করবেন। দ্বন্দ্ব তিনি মেটাবেন না। সাতক্ষীরা,বাগেরহাট ও খুলনাতেও রয়েছে বিএনপির মধ্যে একাধিক গ্রুপ। পাবনা, বগুড়া বিএনপিতেও রয়েছে কোন্দল।

ফেনী, শেরপুর, রংপুরসহ প্রায় প্রতিটি জেলায় বিএনপির গ্রুপিং দলের ঘোষিত সাংগঠনিক মাস শেষ হতে চললেও তা মেটেনি। এ গ্রুপিং শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সৌদি আরবসহ আরও বেশ কটি দেশে গ্রুপিং রয়েছে। যুক্তরাজ্য বিএনপির কোন্দল এতটাই মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল যে শেষ পর্যন্ত এ মাসেই যুক্তরাজ্য বিএনপি শাখা সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। মূলদলের কোন্দলের শিকার হচ্ছে অঙ্গ সংগঠনগুলো।

অপরদিকে জামায়াত রমজানের মধ্যে নিজেদের ব্যানারসহ নানা ব্যানারে ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে নিজেদেরকে আরো সংগঠিত করেছে। নানা চাপে ছড়ানো-ছিটানো জামায়ত-শিবির কর্মীরা ইফতার মাহফিলের মধ্যে এ কাজটি ভালোভাবেই সম্পন্ন করছেন বলে দাবি করেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি মণ্ডলীর এক নেতা। প্রসঙ্গত, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের সাথে বিএনপির সম্পর্কে টানপোড়েন চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক মিডিয়াতে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.