বড় হয়ে কে কি হতে চাও? এমন প্রশ্ন সকলের শৈশবেই বহুবার আসে। আমি নিজেও
মুখোমুখি হতাম এই প্রশ্নের এবং বুঝে না বুঝেই উত্তর দিতাম ইঞ্জিনিয়ার হব। তবে কালের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে অনুধাবন করলাম এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য
কতটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হবে এবং সেটা স্পষ্ট থেকে আরও স্পষ্টতর হল
ভর্তি যুদ্ধের সময়। ভিত না হয়ে যোদ্ধার মতই এগতে থাকলাম। চান্স হয়ে গেল
পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
সুযোগ পেয়ে গেলাম নিজেকে একজন দক্ষ
প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে তোলার। সঙ্গী করে নিলাম বস্ত্র কৌশল। পাবনা
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অনেক সুদীর্ঘ। ১৯১৫ সালে
উইভিং স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু,পরবর্তীতে এতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন
কোর্স চালু করা হয় এবং শিক্ষার গুনগত মান উন্ননের লক্ষে এর ল্যাব ও
অন্যান্য কাঠামো সমৃদ্ধকরণ চলতে থাকে। আধুনিক জটিল প্রযুক্তির যুগে
চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সরকার ২০০৬ সালে এখানে রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চার বৎসর মেয়াদি বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল
ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি চালু করেন।
বর্তমানে এটি সাফল্যের সাথে এর শিক্ষা
কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিভিন্ন ল্যাবের উন্নত মেশিনারীজ এবং লাইব্রেরীর
টেক্সটাইল সম্পর্কিত আধুনিক বইসমুহ ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক প্রযুক্তির
সাথে তাল মিলিয়ে জ্ঞান অর্জনে ব্যাপকভাবে সহায়তা করছে ।
পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বর্ষভিত্তিকভাবে কোর্স পরিক্রমা চলছে । প্রথম বর্ষে মূলত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বেসিক ধারণা সহ পিওর সায়েন্স এর বিষয়গুলো পড়ান হয় । দ্বিতীয় বর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের বৃহৎ পরিসরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর তত্তীও ও ব্যাবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে হয় যা ছাত্রছাত্রীদের কাজে প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত করতে থাকে ।
তৃতীয় বর্ষে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর আরও বিশদ পড়াশোনার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইকলজি ও ম্যানেজমেন্ট
বিষয়ে পড়তে হয় । এবং চতুর্থ বর্ষে ছাত্রছাত্রীদেরকে মেধার
ভিত্তিতে স্পেশালাইজেশনের জন্য বিষয় নির্বাচন করতে হয় । বিষয়গুলো হচ্ছে স্পেশালাইজেশন অফ ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং, স্পেশালাইজেশন অফ ফেব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং, স্পেশালাইজেশন অফ ওয়েট প্রোসেসিং, স্পেশালাইজেশন অফ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং । এছাড়াও সকল বিষয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রোডাকশন
প্ল্যানিং বিষয়ে পড়তে হয় এবং পরিশেষে নিজ নিজ বিষয়ের উপর বিভিন্ন টেক্সটাইল
মিলে ইন্টার্নীর জন্য পাঠান হয় । টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্রও আনেক
বৃহৎ ।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতা ও জ্ঞান বিভিন্ন
টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে যেমন স্পিনিং, উইভিং, নিটিং, ডাইং এন্ড প্রিন্টিং,
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই মূল্যবান । ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে,
প্রোডাকশন মানেজমেন্ট, ডিজাইনে, টেক্সটাইল টেস্টিং ও কোয়ালিটি নিরুপনে,
বাইং হাউস ইত্যাদি ক্ষেত্রে একজন সুদক্ষ বস্ত্র প্রকৌশলী তার
দক্ষতা ও জ্ঞান কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে সফলভাবে অংশ নিচ্ছে ।
পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়টুকু আমাদের কাটে সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান চর্চা
নিয়ে । সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান চর্চার জন্য পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
কলেজে আছে সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান ভিত্তিক সংগঠন “অমুকা” । “অঙ্কুরিত মুখরিত কাণ্ডারি” ।
নবীনদের মুখরিত কাণ্ডারি রূপে বিকশিত করাই অমুকার উদ্দেশ্য । কখনও গান,
কখনও নাচ, কখনও কাব্যচর্চা, কখনওবা বিতর্ক আবার কখনও বিজ্ঞান
প্রোজেক্ট এসব নিয়েই চলে আমুকা । পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর
প্রতিটি ছাত্রের সৃজনশীলতা বিকশিত করে তাকে সাফল্যের রাস্তায় অনুপ্রাণিত করার মাঝেই
অমুকার সার্থকতা ।
#এই লেখাটি BdCampusNews থেকে পড়তে নিচের লিংক ভিজিট করুন,
Click This Link
#এই লেখাটি Textile Area থেকে পড়তে নিচের লিংক ভিজিট করুন,
http://www.textilearea.com/textiles/frzems/81 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।