শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষা। জয় নিশ্চিত ভেবে অনেক আবাহনী সমর্থক গ্যালারিও ছেড়েছে। নাটকটা হলো তখনই। শেষ মিনিটে ফেনীর তরুণ স্ট্রাইকার সজীবের আচমকা এক শটে কপাল পুড়ল আবাহনীর। আবাহনীর দিকে ২-১-এ হেলে থাকা ম্যাচটা হলো ২-২! আগের ম্যাচের মতো কালও ড্র করায় সুপার কাপের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল আকাশি-নীলদের।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অন্য ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে শেখ রাসেল। ৫৩ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে মুক্তিযোদ্ধাকে এগিয়ে নেন কাঞ্চন। এর চার মিনিট পর গোল শোধ করেন জাহিদ। ৮৮ মিনিটে জয় নিশ্চিত করা গোলটি করেছেন আনোয়ার।
বিদেশি খেলোয়াড়হীন আবাহনীকে কালকের ম্যাচে চিনতে হচ্ছিল শুধু জার্সি দিয়েই।
চোটগ্রস্ত এক দল নিয়ে খেলছে পুরো মৌসুম। খেলোয়াড়দের টিম স্পিরিট বলতেও যেন কিছু নেই। নিয়মিত স্ট্রাইকার আউডু ইব্রাহিমকে ছাড়া সুপার কাপে তারা ভরসা করতে চেয়েছিল শাখাওয়াত রনির ওপর। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন চোট পেয়ে সাইড বেঞ্চে জায়গা হয়েছে লিগে ৭ গোল করা স্ট্রাইকারের। কাঙ্ক্ষিত গোল আনতে পারছেন না অন্যরা।
ফিনিশিংয়ের অভাব এবং সুযোগ নষ্ট করার মহড়া তো আছেই। পেনাল্টি থেকেও কাল গোল করতে পারলেন না মিশু! এমন দুর্বল এবং শিশুসুলভ শটের ভিডিও রিপ্লেটা দেখলে মিশু নিজেই হয়তো লজ্জা পাবেন। আরমান আজিজ বা শাহেদকে দিয়ে পেনাল্টি নেওয়াতে চেয়েছিলেন কোচ অমলেশ সেন। কিন্তু মিশুই আগ্রহ দেখান এবং দুর্বল শটটি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে সহজেই মুঠোবন্দী করেন ফেনীর গোলরক্ষক মাসুদ। তখন ম্যাচ বাকি ৮ মিনিট।
২-১-এ এগিয়ে ছিল আবাহনী।
ম্যাচের প্রথমার্ধে দাপটে খেলেছে বরং দুর্বল ফেনী সকার। জার্সি ছাড়া চেনা যাচ্ছিল না কোনটা আবাহনী, কোনটা ফেনী। ৪৫ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ফেনী। বক্সের মধ্যে আবাহনীর ডিফেন্ডার সুজন ফেলে দেন সজীবকে।
পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেননি আকবর হোসেন (১-০)।
গোল খেয়ে নড়েচড়ে বসা ৭৫ মিনিটে মিশুই আবাহনীকে সমতায় ফেরান (১-১)। প্রায় দুই বছর পর গোল পেয়ে ঠিক পরের মিনিটেই আবাহনীকে এগিয়ে দেন শাহেদ (২-১)। এরপর ওই পেনাল্টি মিস। যে মাশুল আবাহনীকে হয়তো গুনতে হবে সেমিফাইনালের আগেই বাদ পড়ে।
টানা দুই ম্যাচে ড্র করায় হতাশ কোচ অমলেশ সেন, ‘শেষ দিকে এসে খেলোয়াড়েরা একদমই অমনোযোগী হয়ে পড়েছিল। ৩ পয়েন্ট পেয়ে যাচ্ছি, এই আত্মবিশ্বাসই ডুবিয়েছে। এখন সেমিফাইনালে ওঠা খুব কঠিন হয়ে গেল। অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। ’ ড্রয়েও ফেনীর কোচ মীর ফারুক খুশি, ‘ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট।
আবাহনীর মতো দলের বিপক্ষে গোল করব, এতটা আশা করিনি। ’ আর সবার আগে সেমিফাইনালে উঠে তৃপ্ত শেখ রাসেল কোচ মারুফুল হক, ‘আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি। আশা করি আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব। ’ মুক্তির কোচ শফিকুল ইসলাম আশা ছাড়ছেন না, ‘এখনো সব শেষ হয়ে যায়নি। তবে লিড নিয়েও ধরে রাখতে না-পারাটা দুর্ভাগ্যজনক।
’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।