তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হলেও আবাহনী যে মুক্তিযোদ্ধাকে হারাবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছিল না দলের সমর্থকরা। কেননা শক্তিশালী না হলেও পারফরম্যান্স বিচারে মুক্তিযোদ্ধাকে ম্যাচে ফেবারিট হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। ফেডারেশন কাপে দুর্ভাগ্যক্রমে শিরোপা জিততে না পারলেও পেশাদার লিগে মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। শফিকুল ইসলাম মানিক যেভাবে তার শিষ্যদের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামাচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছিল লিগে শিরোপা লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভালোভাবে টিকে থাকবে। না, তৃতীয় ম্যাচেই তাদের ছন্দপতন ঘটে।
বলা যায় রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে। আগের মাচে ফেনী সকারের কাছে মূল্যবান ২ পয়েন্ট হারালেও মঙ্গলবার আবাহনী ছন্দময় খেলা খেলে সমর্থকদের মন ভরিয়েছে। এ সময়ে তারা মুক্তিযোদ্ধাকে ৩-১ গোলে হারাবে তা ভাবাই যায়নি। না, চলতি মৌসুমে লিগে সর্বোচ্চ শিরোপা জেতা দলটি সেরা নৈপূণ্য প্রদর্শন করেছে। আবাহনীকে দেখা গেছে আবাহনী রূপেই।
ইরানি কোচ আলি আকবার পৌর মুসলিমি ধাক্কা খেয়ে শিষ্যদের যে ছন্দ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তা মঙ্গলবার ফুটবলপ্রেমিরা বুঝতে পেরেছেন।
একেতো তীব্র শীত। তারপর আবার সরকারি ছুটিতে গ্যালারি ছিল প্রায় ফাঁকা। যাক যতজনই ছিলেন তারা মনভরে আবাহনীর খেলা উপভোগ করেছেন।
গত দুই ম্যাচেই লক্ষ্য করা গেছে আবাহনীর আক্রমণভাগ বেশ নিষ্ক্রিয়। প্রতিপক্ষের দুর্গে একাধিকবার আক্রমণ চালালেও পরিকল্পনার অভাবে গোলের দেখা পায়নি। ব্রাদার্সের বিপক্ষে সৌভাগ্যক্রমে জয় তারপর ফেনীর ডিফেন্ডারদের সামনে এলোমেলো থাকাতে পয়েন্ট হারিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে যেন নতুন এক আবাহনীর দেখা মিলল। শুরু থেকেই তাদের খেলার ভেতর পরিকল্পনা লক্ষ্য করা যায়।
বিশেষ করে ফরোয়ার্ড আইডু ইব্রাহিমের নৈপুণ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনিই মূলত প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের চাপে রাখেন। যাক ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কেউ। তবে যে সুযোগ এসেছিল তা কাজে লাগাতে পারলে আবাহনী কম করে হলেও ২ গোলে এগিয়ে যেতে পারত। গোল না হওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছিল নীল-হলুদদের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উল্লাসে মেতে উঠে আবাহনী। ৪৬ মিনিটে গোল পেয়ে যায় তারা। এ সময়ে মোহামেডান থেকে যোগ দেওয়া মরিসনের ক্রশ মুক্তির দুর্গে আসলে চমৎকার হেডে জালে বল পাঠান আইডু ইব্রাহিম। ৭৮ মিনিটে সমতা ফেরায় মুক্তিযোদ্ধা। জাহেদ পারভেজের কর্নার থেকে প্রথমে হেড করেন কিংসলে এলিটা।
বল শূন্যে থাকা অবস্থায় পুনরায় হেডে জালে বল পাঠান আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক এলিটা বেঞ্জামিন। তাদের এ উচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন মিনিট পরই মরিসনের পাস থেকে জোরালো শটে মুক্তির গোলরক্ষক লিটনকে পরাস্ত করেন ইব্রাহিম। শেষ মিনিটে মরিসন গোল করে আবাহনীর দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করেন। এ জয়ে তারা তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে গতকাল পেশাদার ফুটবল লিগে প্রথম জয়ের মুখ দেখেছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং। আগের দুই ম্যাচ ড্র করে মূল্যবান চার পয়েন্ট হারালেও তৃতীয় ম্যাচে টিম বিজেএমসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে পুরো পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে তারা। ২৭ মিনিটে ওয়াহিদ ও ৮২ মিনিটে জাহিদ মোহামেডানের পক্ষে মূল্যবান গোল দুটি করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।