আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে পাড়ি জমিয়েছি বিদেশে জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে। আসলেই কি জ্ঞান বাড়ছে, নিজেকেই প্রশ্ন করি মাঝে মাঝে !! আমেরিকার গর্ভমেন্ট বেশ ইন্টেলিজেন্ট। তারা তাদের দারিদ্র খুব কৌশলে ঢেকে রাখতে জানে। তাদের বর্তমান অবস্থা তারা যে আর কাটিয়ে উঠতে পারবে না আমেরিকার বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদরা মোটামুটি নিশ্চিত।
বিষয়টি নিয়ে আমি কনফিউজড থাকলেও গত ২ বছর যাবৎ ৪/৫ টি ভার্সিটির অর্থনীতিবিদদের সাথে উঠাবাসা বেশী হওয়ার তাদের মন্তব্যে শুধু অবাকই হয়েছি। একসময় নিজেকে আমেরিকার নাগরিক মনে করে ভাল লাগত। কিন্তু এখন দেখি এই ভাল লাগার যৌক্তিকতা নস্ট হয়ে গেছে।
রসায়নের ছাত্র হওয়ায় অর্থনীতি যে খুব বুঝি তা না, তবে যতটুকু বুঝি খুব সম্ভব আমেরিকানরা ক্রমবর্ধমান ঋন সংকট আর কাটিয়ে উঠতে পারবে না। বিজ্ঞ কিছু অর্থনীতিবিদের সাথে থেকে থেকে অর্থনীতির গতি শিখছি, দেখছি, বুঝার চেস্টা করছি।
মিডল ইস্ট-এর তেলকে কেন্দ্র করে তারা যে প্রটোকলটি করেছিল তাও ভেস্তে গেছে। ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক এর মত ধনী শহরগুলোতেও বস্তি বাড়ছে দিন দিন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন শহরগুলোতে গেলে তো আরো খারাপ লাগে। আমি যখন আসি তখনো বস্তি এতটা দেখিনি। কিন্তু এখন পাল্লা দিয়ে বস্তিবাসী বাড়ছে।
বস্তির জায়গা নিয়ে মারামারি এখন সংবাদপত্রেও স্থান পায়।
একটি বস্তির চিত্র-
সরকারী হিসেব আনুযায়ী ২০১০ সালে তাদের ঋণ ছিল প্রায় ১৪.৩ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত মাসের রিপোর্টে দেখলাম এই ঋণের পরিমান ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। ফেডারেল রিসার্ভ ব্যাংক বন্ডের উপর চড়া সুদ বসিয়ে তারা টাকা কালেকশন করত। এখন এই বন্ডের সুদও তারা বন্ড ক্রেতাদের দিতে পারছে না।
সবচেয়ে বেশী বন্ড ক্রেতা চীন এর সাথে বন্ডের সুদের ঝামেলা নিয়ে কুটনৈতিক সম্পর্কও দিন দিন শীতল হচ্ছে, যা এতদিন আমেরিকার বুদ্ধিমান গভমেন্ট গোপন রাখলেও বিষয়টা এখন অনেকটাই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দক্ষিন কোরীয় (চাইনিজ বংশীয়) একজনকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট করেছে সমস্যার সাময়িক সমাধানের জন্য। একজন সিনেটর বললেন ভবিষ্যত বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রনকারী চীন-এর কুটনৈতিক চালের কারনে আমেরিকা এই মহাসংকট রুপী চোরাবালিতে আরো ডেবে যাবে। ডাবতেই থাকবে। যদিও সুন্দর ও শক্ত সেটাপমেন্টের কারণে প্রত্যক্ষভাবে এখনই দূর্দশাটা উপলব্ধিতে আসবে না।
আমাদের উপর ট্যাক্স বাড়িয়ে, প্রচুর ডলার প্রিন্ট করে যে জোড়াতালি দেয়ার চেষ্টা গভমেন্ট করছে তাও স্থায়ী সমাধান না কখনোই। কারণ প্রচুর ডলার পিন্টিং এর কারণে ডলারের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে নস্ট হয়ে গেছে।
আমি যখন আসি তখন বেকারত্ব ছিল ৫% এর নীচে, যা ২০১১ সালে এসে দাড়িয়েছে ৮% এর উপরে। প্রতি বছর এর পরিমান বাড়তেই থাকবে।
ফোর্বস এর তথ্যানুযায়ী আমেরিকার বর্তমান জিডিপি ১৫.১ ট্রিলিয়ন ডলার।
কিন্তু তাদের ঋণ ১৬ ট্রিলিয়ন ডলারের উপরে। অর্থ্যাৎ আস্ত আমেরিকা বিক্রি করলেও তাদের প্রায় ১ ট্রিলিয়র ডলার ঋণ অপরিশোধিত থেকে যাবে। উপরন্তু প্রতি বছর তাদের ঋণ বাড়ছে আরো প্রায় ১ ট্রিলিয়ন করে।
কোন দিকে যাচ্ছে আমেরিকা !!!!!!!!!!!! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।