আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলার খলনায়ক সম্রাট মিশা সওদাগর

ভালো। মিশা সওদাগর। নাম শুনলেই অনেকে জানেন মন্দ চরিত্রের অভিনয়শিল্পী। অসম্ভব বদমেজাজি। চিৎকার করে সংলাপ বলেন।

অন্যায় করেন, জবরদস্তি করে অন্যের বাড়িঘর লুট করেন। পর্দায় এখন সচরাচর এমনভাবে মিশাকে দেখা গেলেও, বাস্তবে মিশা একদম উল্টো। তাঁর বিরুদ্ধে অসদাচরণের কোনো অভিযোগ নেই। সদা হাসিখুশি এই মানুষটি সিনেমায় কাজ শুরু করেছিলেন ১৯৮৬ সালে। নতুন মুখের কার্যক্রমের মাধ্যমে সিনেমায় পা রেখেছিলেন নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।

ছটকু আহমেদের চেতনা ছবি দিয়ে যাত্রা করেন। এরপর অমর সঙ্গী সিনেমায় নায়ক হয়ে কাজ করলেন। কিন্তু সে সময় যে রাজ্জাক, সোহেল রানা, আলমগীর, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চনদের দাপট! মিশা কিছুটা যেন হতাশ হয়ে গেলেন। পরিচালকেরা মিশা সওদাগরকে খল চরিত্রে কাজ করার পরামর্শ দিলেন। মিশা বললেন, না।

তিনি নায়ক হয়েই কাজ করতে চান। এভাবেই অপেক্ষার সময় কেটে যায়। তমিজউদ্দিন রিজভী মিশাকে অনুরোধ করলেন তাঁর ছবিতে খল চরিত্রে কাজ করতে। মিশা ভাবলেন, একটি ছবি করে দেখা যায়। আশা আমার আশা ছবিতে সালমানের সঙ্গে আউটডোর শুটিংয়ে গেলেন তিনি।

বাসে তাঁর আসন হলো সবার পেছনে। অপমানের একধরনের গন্ধ পেলেন। কিন্তু কিছুই করার নেই তাঁর। আউটডোর শুটিং শেষ করে আসার পরই সাতটি ছবি হাতে নিলেন খল অভিনেতা হিসেবে। নতুন করে এক পরিচয় পেলেন তিনি।

সেখান থেকে কাজ করতে করতে মিশা এখন ৮০০ ছবির অভিনেতা। ‘বাসের পেছনের আসনে করে যাত্রা হয়েছিল। এখন আমার নিজের দু-একটা গাড়ি হয়েছে। নিজের বাড়ি হয়েছে। মানুষজন আমাকে চেনে।

এটাই তো আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। ’ মিশার মধ্যে তবু সন্তুষ্টি নেই। তাঁর কাছে মনে হয় আরও অনেক কাজ এখনো বাকি আছে। ২৬ বছরের অভিনয়জীবনে মিশা যখন মন্দ চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে তুঙ্গে, তখন নিজে বিনিয়োগ করে পর্দায় নিজেকে ভালো চরিত্রের অভিনয়শিল্পী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। এ জন্য শিক্ষক নামে একটি ছবি প্রযোজনাও করেছেন।

কিন্তু এবারও তিনি ফেল করেছেন। মিশার উপলব্ধি হলো, মানুষ একভাবে একজনকে গ্রহণ করলে এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ কম থাকে। ৮০০ ছবিতে মিশা নানা ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন। মিশা বলেন, ‘আমার জীবন সমৃদ্ধ হয়েছে একদিক থেকে যে আমি বাংলাদেশের প্রায় সব পরিচালকের ছবিতেই অভিনয় করেছি। সব শিল্পীর সঙ্গেই কাজ করেছি।

একজন শিল্পীর জীবনে এটাও অনেক বড় একটা রেকর্ড। ’ কিছুদিন আগেই মিশা সওদাগর অভিনীত বাংলা ভাই নামে একটি ছবি মুক্তি পায়। ছবিটি নিয়ে মিশা দারুণভাবে আলোচনায় উঠে আসেন। মিশা বলেন, ‘চরিত্রটিতে কাজ করার জন্য আমাকে টানা অনেকগুলো দিন সবকিছু ভুলে থাকতে হয়েছে। কষ্ট সার্থক হয়েছে তখনই যখন দেখলাম ছবিতে বড় কোনো নায়ক না থাকলেও ছবিটি দেখার জন্য মানুষ আসছে।

’ মিশা সওদাগর বর্তমানে চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এরই মধ্যে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুস্থ শিল্পীদের জন্য তহবিল গড়ে তুলেছেন। বললেন, ‘একসময় শিল্পীদের যে অসহায় অবস্থায় দেখেছি, সেই চিত্র আর দেখতে চাই না। চাই কিছু কাজ করতে। সেই লক্ষ্যেই এখন এগিয়ে চলেছি।

’  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.