কিছু পাওয়ার অপেক্ষা আছে বলেই এই পথ চলা... কল্পনা আছে বলেই বেচেঁ থাকা আরিফ বরাবরই একটু ভীতু। কিন্তু তাই বলে এরকম পরিস্থিতিতে তো আর চুপ করে বসে থাকলে চলবেনা। কথাটা রিনি আরও এক মাস আগেই আরিফকে জানিয়েছে যে ওর বিয়ের কথাবার্তা চলছে,ছেলেপক্ষ যদি পছন্দ করে তাহলে অল্পদিনের ভেতরই বিয়ে হয়ে যাবে। তাই যা করার খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। কিন্তু আরিফ এখন ফাইনাল ইয়ারে,এখনো পড়াশুনা শেষ হয়নি,এই সময় বিয়ের কথা কিভাবে ও ওর ফ্যামিলিকে বলবে?রিনি খুব জেদি টাইপ মেয়ে।
ও বলে,দেখো আরিফ তুমি যদি কিছু না করো তাহলে আমি ঐ ছেলেকেই বিয়ে করবো। আরিফ মহাবিপদে পড়ে। ও মনে প্রানে রিনিকে চায়,রিনির অন্য কারো সাথে বিয়ে হবে এটা ও মেনে নিতে পারবেনা,কিন্তু বাবা মাকে কিভাবে বলবে আর রাজি করাবে এটা নিয়েই যত ঝামেলা।
দেখতে দেখতে সময় যায় কিন্তু আরিফ ওর ফ্যামিলিতে জানাতে পারেনা।
এর মাঝে ছেলেপক্ষ রিনিকে দেখে গেছে এবং পছন্দও করেছে।
পরের সপ্তাহে বিয়ের দিন ঠিক করতে আসবে। হাতে সময় মাত্র ৭ দিন। এর মাঝেই যা করার করতে হবে।
:আরিফ,আমার কি মনে হচ্ছে জানো?
:কি?
:তোমার মত একটা কাপুরুষ হাদারামকে ভালোবেসে আমি জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল করেছি।
:ইয়ে মানে...উমম আমি আজকেই বলবো।
উমম...আচ্ছা রিনি উমম..তুমি তোমার মা বাবাকে আমার কথা বললেই তো পারো..
:ছিঃ একথা বলতে তোমার লজ্জা করলো না?অবশ্য তোমার তো লজ্জাই নেই। নিজে ছেলে মানুষ হয়ে নিজের বাবা মাকে বলতে পারছোনা আর আমাকে বলছ বলতে। ছিঃছিঃছিঃ। আর শোনো আমি বাবা মাকে অনেক আগেই কথা দিয়েছি যে উনাদের পছন্দের ছেলেকেই বিয়ে করবো। তুমি যদি কিছু করতে না পারো তাহলে আমাকে হারাতে হবে।
এই বলে রিনি চলে যায়।
আরিফ ভাবে পরদিন যেভাবেই হোক বাবা মাকে বলতেই হবে,এভাবে ভয় পেলে চলবেনা। ওদিকে রিনি ভাবে এই গাধাটাকে দিয়ে কিছুই হবেনা,হলে এতদিনে কিছু করতো। আর এই গাধাটাকে ছাড়া যে ওর চকলবেনা। তাই রিনি সিদ্ধান্ত নেয় ওকেই কিছু করতে হবে।
পরদিন আরিফ সারাটাদিন বাইরে ঘুরে বেড়ায় আর ভাবে যে বাসয় ফিরে আজ যেভাবেই হোক বলবে,যা আছে কপালে। সন্ধ্যার সময় আরিফ বাসায় ফেরে। ওর মা দরজা খুলে দেয়। আরিফ ওর রুমের দিকে যেতে যাচ্ছিল,তখন ওর মা ওকে বলল যে ড্রয়িং রুমে বসতে,জরুরি কথা আছে।
ওর বাবাও ওখানে ছিল।
বাবা:রিনি কে?
আরিফ:কোন রিনি বাবা?
মা:কয়জন রিনিকে চেনো?!
আরিফ:না মানে,আমিতো কোন রিনিকে চিনিনা। (আরিফের গলা শুকিয়ে আসে। ভাবে এসব হচ্ছে কি?!!)
বাবা:সত্যিই চেনো না?(মুচকি হাসে)
আরিফ:ইয়ে বাবা আসলে হ্যা মানে না। চিনি।
মা:কতদিন ধরে?তোমার সাথে ওর সম্পর্কটা কি?
আরিফ:তোমরা এতকিছু জানলে কিভাবে?!
বাবা:তুমি তোমার মায়ের প্রশ্নের উত্তর দাও,আমরা কিভাবে জানলাম সেটা না জানলেও হবে।
আরিফ:উমমম ৫ বছর ধরে। আর আমি ওকে ভালোবাসি,ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে,তোমরা কিছু কর,ওকে ছাড়া আমার চলবেনা....
একদমে বলে আরিফ তাড়াতাড়ি ওর রুমে চলে যায়। মা বাবা দুজনেই হাসতে থাকে।
রুমে গিয়েই আরিফ চিৎকার দেয়।
:তুমি এখানে?!!!
:হ্যা।
আমার রুমে আমিই তো থাকবো।
পেছন থেকে মা বলে ওঠে,
:মানে দুদিন পর এটাতো রিনির রুমও হবে।
বলে হেসে ফেলে।
আরিফ এবার সব বুঝে ফেলে। মনে মনে খুব লজ্জা পায়।
মা:আমার এই গাধা ছেলেটার জন্যে তোমার মতো একটা মেয়েই দরকার যাতে ওকে টাইট দিয়ে রাখতে পারো সবসময়।
আরিফ:মা.। ভালো হচ্ছেনা কিন্তু।
বাবা:রিনি মা,পারবেনা এই গাধাটাকে ঠিকমতো চালাতে?
রিনি:পারবো বাবা। খুব পারবো।
এটা বলে রিনি বাবা মা সবাই হেসে উঠে।
সবার হাসি দেখে কিছুটা লজ্জা নিয়ে আরিফও হেসে উঠে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।