ভালো। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি বাতিল করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক রোববার ওয়াশিংটন থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা, এসএনসি লাভালিন কর্মকর্তা ও বেসরকারি ব্যক্তিদের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বিশ্বব্যাংকের হাতে রয়েছে যা বিভিন্ন সূত্র দৃঢ়ভাবে প্রমাণ হয়েছে। বিশ্বব্যাংক প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশের এন্টি করাপশন কমিশনের (এসিসি) চেয়ারম্যানকে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এবং ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে দুটি তদন্তের তথ্য-প্রমাণাদি প্রদান করে। আমরা বিষয়টির ব্যাপক তদন্ত করে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।
সরকার গুরুত্ব অনুযায়ী বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেবে। কানাডায় এসএনসি লাভালিনের সদর দফতরে বেশ কয়েকটি তল্লাশি পরোয়ানা তামিল করে এবং বিশ্বব্যাংকের সরবরাহ করা তথ্যাদির ভিত্তিতে বছরব্যাপী তদন্ত পরিচালনা করে ‘ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসেস’ পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসএনসির দু’জন সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে। যুগপৎ তদন্ত ও মামলা চলতে থাকলেও আদালতের কার্যক্রমে মামলাটির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব পায় না। যেহেতু আমরা বাংলাদেশের এবং ওই অঞ্চলের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ওই সেতুর সমাধিক গুরুত্বের বিষয়টি অনুধাবন করি সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের প্রমাণ করা বড় ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিলে আমরা গুরুত্ব অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমিক সহায়তার বিকল্প প্রস্তাব দিই। কেননা উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ওই সব হুমকির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের চাপ না দেয়াটা বিশ্বব্যাংকের জন্য দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক হতো।
এজন্য আমরা চার দফা ব্যবস্থার প্রস্তাব দিই। সেগুলো হচ্ছে ১) তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহভাজন সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি দিয়ে প্রকল্প থেকে দূরে রাখা। ২) এন্টিকরাপশন কমিশনের (এসিসি) একটি বিশেষ টিমের ওপর তদন্তের ভার ন্যস্ত করা। ৩) বিশ্বব্যাংক নিয়োজিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলকে তদন্তকাজের ধারাবাহিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। আমরা যেসব বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছি তা বাংলাদেশের আইন ও পদ্ধতির সঙ্গে যাতে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ও এসিসির সঙ্গে বারবার কথা বলেছি।
আমরা প্রস্তাব করেছি যে, উত্থাপিত অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হচ্ছে এবং তা সঠিক পথে এগিয়ে চলেছে সে ব্যাপারে নিয়োজিত প্যানেলের মূল্যায়নের ভিত্তিতে আমরা এবং অর্থায়নকারী সহযোগীরা চুক্তি অনুযায়ী অর্থায়নে এগিয়ে যাব।
বিষয়টি আরও ত্বরান্বিত করতে সরকারের তরফ থেকে সাড়া পাওয়ার আশায় ব্যাংকের প্রস্তাবনা ব্যাখ্যা করতে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে সন্তোষজনক সাড়া মেলেনি।
দুর্নীতির ব্যাপারে যে তথ্য-প্রমাণাদি পাওয়া গেছে সে ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না, থাকা উচিত নয় এবং থাকবে না। কেননা আইডিএ’র সহযোগী দাতা দেশগুলোর প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ববোধ রয়েছে।
আইডিএ’র সম্পদ সঠিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা তখনই কোন প্রকল্পে অর্থায়ন করি যখন আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হই যে, আমাদের অর্থ স্বচ্ছ এবং সঠিকভাবে ব্যবহƒত হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের অপর্যাপ্ত সাড়ার কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে তার ১২০ কোটি মার্কিন ডলার আইডিএ ঋণ সহায়তা অবিলম্বে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।