আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পতিতা পল্লি থেকে ফিরে আসা মেয়েদের করুণ কথা! আমরা পারছি না আমাদের মা বোনদের রক্ষা করতে

এখন থেকে ৩ বছর আগের কথা। ওই সময় বাংলাদেশের নারীদের বড় একটি দলকে পাচার করা হয়েছিল ভারতে। সমপ্রতি তাদের ৪৮ জনকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের একটি এনজিও। তারা বাংলাদেশে ফিরে তাদের দুঃসহ জীবনের অভিজ্ঞতা খুলে বলেছেন। এ নিয়ে ২৫শে জুন ঢাকা থেকে বিবিসি’র সাংবাদিক আনবারাসান ইথিরাজন একটি প্রতিবেদন লিখেছেন।

এর শিরোনাম- ‘বাংলাদেশ ট্রাফিকড ওমেন রিকাউন্ট অরডিয়াল ইন ইন্ডিয়া’। এতে বলা হয়, ওই নারীদের ভারতের মুম্বই ও পুনের বিভিন্ন শহরে জোর করে দেহ ব্যবহার করা হতো। তাদেরকে বাধ্য করা হতো এ কাজ করতে। তাদের একজন ২২ বছরের মনিকা। তিনি বলেছেন, তার গ্রামের একটি মেয়ে তাকে কিছু একটা খেতে দেয় এবং বলে চলো- আমরা পাশের দেশ ভারতে পিকনিক করতে যাই।

কিন্তু পরে বুঝতে পারি আমাকে টেনেহিঁচড়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতের বেলা আমাকে ধানের ক্ষেতের ভিতর দিয়ে টেনে নেয়া হয়। যখন আমার চেতনা ফেরে, আমি বুঝতে পারি ভারতের দালালের কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এরপর কয়েকদিন কলকাতায় অবস্থানের পর অন্য মেয়েদের সঙ্গে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় পুনে। মনিকা বলেন, আমাদের সেখানে একটি ছোট্ট রুমে রাখা হয়।

ওই এলাকায় কয়েক শত মেয়ে আছে। সেখানে দেহ ব্যবসা করতে আমাদেরকে বাধ্য করা হতো। এতে আমি হতভম্ব হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় এজেন্ট ক্রমাগত চাপ ও হুমকি দেয়ার প্রেক্ষিতে আমার ও আমাদের সামনে আর কোন পথ খোলা ছিল না। প্রতি বছর কি পরিমাণ নারীকে এভাবে পাচার করা হয় তার কোন সুনির্দিষ্ট হিসাব নেই।

তবে বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে প্রতি বছর হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে পাচার করা হয় ভারত ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে। এক্ষেত্রে তাদেরকে লোভনীয় চাকরির প্রলোভন দেয়া হয়। কিন্তু শেষ হয় কোন পতিতাপল্লীতে গিয়ে। ভারত থেকে উদ্ধার করা রুনা নামের এক নারী বলেন, আমাদেরকে সকাল ৮টা থেকে মধ্যরাত অবধি কাজ করতে হতো। পুনের পতিতালয়ে আমার মতো কয়েক শ’ মেয়ে আছে।

সেখানে তাদের দুঃসহ জীবন। তাদের সামনে পালানোর কোন সুযোগ নেই। আমি দেশে ফিরতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি। কিন্তু তারপরও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ওমেন’স লইয়ারস এসোসিয়েশনের সালমা আলী বলেন, যদিও এসব মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তবু তাদের সামনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।

সামাজিক বঞ্চনার কারণে তাদের অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে না। কি পরিমাণ যুবতীকে ভারতে পাচার করা হচ্ছে সেদিকে তিনি দৃষ্টিপাত করেন। রুনা বলেন, আমরা দু’দেশের সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করতে। সেখানে আমাদের মতো নারীদের চলাচলের ওপর কড়া নজর রাখতে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।