চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই !
প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন সৌদি আরবের নারীরা। অনেক দেরিতে হলেও বেশ কয়েকজন যোগ্য নারী ক্রীড়াবিদদের অলিম্পিকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে দেশটির অলিম্পিক কমিটি। আগামী জুলাইয়ে লন্ডন অলিম্পিকে তারা অংশগ্রহণ করবে। বার্তা সংস্থা বিবিসি আজ সোমবার এ সংবাদ প্রকাশ করেছে।
সৌদি কর্মকর্তারা মনে করেন অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করার মতো মানসম্পন্ন তাদের দেশে একজন প্রতিযোগীই রয়েছে কেবল।
আর তিনি হলেন ‘শো জাম্পার’ (অশ্বারোহীর জন্য একধরনের প্রতিযোগিতা) দালমা রুশদি মালহাস।
এর আগে সৌদি আরব কেবল পুরুষ ক্রীড়াবিদদের অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে এসেছে। এবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর ফলশ্রুতিতে এবার নারীদের অলিম্পিকে অংশ গ্রহণ করার অনুমতি দিলো সৌদি অলিম্পিক কমিটি। তবে শর্ত জুড়ে দিয়েছে সাথে।
অংশ গ্রহণকারী নারীর ঢিলেঢালা পোশাকের সঙ্গে হিজাবে চুল ঢেকে রাখতে হবে। তবে মুখমণ্ডল খোলা থাকবে। সৌদি আরবের বহু রক্ষণশীল মানুষ এখনো খেলাধুলায় নারীদের প্রকাশ্য অংশগ্রহণের তীব্র বিরোধিতা করে। বিবিসির এই প্রতিবেদনের বলা হয়, এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। যেখানে দেশটিতে প্রকাশ্যে নারীদের যেকোনো ভূমিকার ঘোর বিরোধিতা করা হয়, সেখানে এ ধরনের সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী।
সমাজে নারীদের আরও বেশি সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ চাপে রয়েছেন।
২০২০ সালে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের অন্যতম দাবিদার কাতার ফেব্রুয়ারি মাসেই ঘোষণা করেছে, লন্ডনের গেমসে তারা এবার তাদের মহিলা অ্যাথলিটদের পাঠাবে। তবে সৌদি আরব যদি শেষ পর্যন্ত সত্যিই তাদের মহিলা অ্যাথলিটদের অলিম্পিকের আসরে পাঠায়, সেটা হবে সে দেশের নারীসমাজের জন্য বিরাট একটা জয়, তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ।
সৌদি আরবের সরকারি স্কুলগুলোতে মেয়েদের খেলাধুলো করা নিষিদ্ধ। মহিলাদের খেলা আয়োজন করে এমন কোনও ক্রীড়া ফেডারেশনও নেই, বেশিরভাগ স্টেডিয়ামে মেয়েরা ঢুকতেও পারেন না।
সৌদি আরবের ইতিহাসে একমাত্র অলিম্পিক পদকের মালিক হলেন হাদি সৌয়ান সোমায়লি, যিনি সিডনি অলিম্পিকের আসরে ৪০০ মিটার হার্ডলসের ফাইনালে রূপার পদক জিতেছিলেন।
সেই সোমায়লি তাঁর দেশের মহিলাদের সম্ভাবনা নিয়ে বিবিসিকে বলছিলেন, আমাদের মেয়েরা যে ধরনের পোশাক পরেন, তাতে কয়েকটা খেলা তাদের জন্য বেশ কঠিন � যেমন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড, সাঁতার বা এমন কী ফুটবল। তবে তিনি আশা করেন অন্য ইভেন্টগুলোতে অংশ নিতে সৌদি মহিলাদের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, আর খুব শিগগিরি হয়তো তারা সেগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও নামবেন।
তবে সৌদির ধর্মীয় নেতাদের সবাই মেয়েদের এই সব যুক্তি মানতে রাজি নন, তাদের দিক থেকে মেয়েদের খেলাধুলো করতে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিরোধও আছে যথেষ্ট। কিন্তু সব কিছু সত্ত্বেও আসন্ন লন্ডন অলিম্পিক গেমসে শেষ পর্যন্ত হয়তো সৌদি আরবের মহিলাদের অংশ নিতে দেখা যাবে, আর তা হবে সৌদি নারীদের এক মহাবিপ্লবের সামিল।
সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।