ফিরে এসেই মনে করেছিলাম খুব দ্রুত কয়েকটা পোস্ট করে ফেলব দেশ বিদেশ সংক্রান্ত। কিন্তু এইখানে মাটিতে পা দিতেই হুড়মুড় করে বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেল।
ভাল আর খারাপ যাই হোক কোন এক যাগায় লম্বা সময় থাকলে সেখানকার বিষয়ে একরকম চোখ সয়ে যায়। মানে, আমার মনে হয় যে, মানসিকভাবে একটা অভ্যাস বা এক্সপেক্টেশন হয়ে যায় যে এই জিনিষটা এরকম হবে বা এটা এভাবে হওয়া উচিত। অবচেতন এই বৃত্তবন্দী থেকে অন্য যায়গায় গেলে সেখানকার নিয়মগুলোতেও খুব।
সহজেই মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যায় কিন্তু পালাবদলের এক দুদিন মনের গহীনে কথাও টিকটিক করে ওঠে।
প্রথম যখন লন্ডনে আসি তার পরের দিনের পাঠানো একটা ইমেইল দেখছিলাম। ২০০৪ এ আমরা যেইসব কম্পিউটার ব্যাবহার করতাম তাদের জন্য মাঝে মাঝেই উইন্ডোজ এক্সপি একটু ওজনদার হয়ে যেত, কিন্তু দৃষ্টিনান্দিকতা ও কাজ করার আরামের দিক থেকে আবার এক্সপি ই ছিল পছন্দের উইন্ডোজ ৯৮ এর তুলনায়। তাই প্রথম দেখা লন্ডনের অনুভূতি যখন বাড়িতে জানাচ্ছিলাম তখন বলেছিলাম যে, লন্ডন হল উইন্ডোজ এক্সপির মতই, সুন্দর ঝকঝকে কিন্তু ভেরী ডিমান্ডিং। এখানকার কুঠুরীর মত ছোট্ট একটা ঘরের ভাড়া দিয়ে ঢাকায় একটি পরিবার সাচ্ছন্দ্যে মাস চালিয়ে দিতে পারে।
আর অন্যান্য জিনিষপত্রের তুলনামূলক আকাশচুম্বী দাম আর ন্যূন্যতম উপার্জনের জন্য মানুষের সংগ্রাম।
তবে যেই আরেকটা কারণে লন্ডনকে এক্সপি বলেছিলাম তা হল, এখানকার প্রতিটি জিনিষই অত্যান্ত স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা থাকে। তাই প্রথমবার মাটিতে পা দেবার এক ঘন্টার ভিতরেই ট্রেন নেটওয়ার্ক বুঝে নিতে সমস্যা হয়নি আর দুদিনের মাথেতেই নিজেই বুঝে গেছিলাম যেকোন যায়গায় কিভাবে বাস ধরে যেতে হয়। প্রতিটি রাস্তার শুরু আর শেষে লেখা আছে রাস্তার নাম আর পোস্টকোড। আর মূল রাস্তায় কিছুদূর পরে পরেই রাস্তা কোন এলাকার দিকে মোড় নিচ্ছে।
আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে খুব কম খরচে নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর এটা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। আমাদের দেশে এই বিষয়ে সরকার সাহেব অত্যান্ত্য কঞ্জুস অথবা অদূরদর্শী। দেশে গিয়ে বাংলামোটরের মোড় বা এইরকম এক দুইটা যায়গা ছাড়া আর কোথাও ডিরেকশন দেখলাম না। আগেও ছিল না এখনো নাই, শুধু বিদেশের রঙ্গীন চশমাটা পরায় একটু চোখ কচকচ করছিল।
কালপুরুষ বা আর কেউ কি আছেন এই রেনোভেশনের যুগে সিটি করপোরেশনের মাথায় টোকা দিতে? দেশ আরেক পা আগালে মন্দ হয় নাঃ)
ছবি ব্রিক লেনে ঢোকার রাস্তা, অসবর্ণ স্ট্রীটের মুখ থেকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।