আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপকূলীয় অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেত শিল্প

প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধি এবং প্লাষ্টিক সামগ্রীর অতি ব্যবহারে উপকূলীয় অঞ্চলের বাঁশ ও বেত শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফলে এ শিল্পের সাথে জড়িতরা এক প্রকার বাধ্য হয়ে তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করছে। বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার পরিবার বর্তমানে চরম দূর্দিনের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। উপকূলীয় অঞ্চল খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের হাজার হাজার পরিবার দীর্ঘ দিন যাবৎ ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্পের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে তারা নানা সমস্যায় জর্জরিত।

প্রয়োজনীয় ঋন, পুঁজি, বাঁশ ও বেতের স্বল্পতা, মুজুরী কম থাকার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প ক্রমান্বয়ে বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার জীবন যাপন করছে। এসব শ্রমিকরা বংশানুক্রমে এ শিল্পের সাথে জড়িত। তাদের নিপুন হাতে তৈরি কুলা, চাটাই, হাঁস-মুরগীর খাচা, সাজি, ঢাকনা, চালনী, পাল¬া, খাচা, মোড়া বেতের ধামা, পাতিল, চেয়ার, টেবিল, দোলনা, খারাই, পাখা, বই রাখার র‌্যাক, ঘুনি, ডালা ও ঝুড়ি প্রভৃতি মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় শিল্প সামগ্রী এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বাইরে সরবরাহ করতো। বর্তমানে বাঁশ ও বেত পাওয়া যায় না বললেই চলে।

প্রয়োজনীয় পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে বাঁশ ও বেতের ঝাঁড় মরে যাচ্ছে। সরকারি বা বেসরকারি ভাবে বাঁশ ও বেত গাছ রোপন এবং এর পরির্চ্চার, বংশ বৃদ্ধিরও কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। কয়েক বছর আগেও বাঁশ ও বেতের শো শো শব্দ সকলকে আন্দোলিত করতো। বর্তমানে সে সব বাঁশ বেত ঝাঁড় চোখে পড়েনা। পৃষ্টপোষকতার অভাবে গত কয়েক বছরে বাঁশ ও বেতের বাগান হারিয়ে গেছে।

এক সময় বাঁশ বেত শিল্পীদের তাদের উৎপাদিত পন্য বিভিন্ন হাট বাজার সহ রাস্থায় রাস্থায় ফেরি করে বিক্রি করতে দেখা যেত এখন আর সে দৃশ্য চোখে পড়েনা। কিছু দিন আগেও ধনী-দরিদ্র পরিবারে বাঁশ ও বেত শিল্পের সামগ্রী ব্যবহৃতসহ সৌন্দয্য বর্ধন করত বাস গৃহ ও কর্মস্থল। কিন্তু কালের বিবর্তন, প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধি এবং প্লাষ্টিক সামগ্রীর অতি ব্যবহারে বাঁশ ও বেত শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। বাঁশ ও বেতের সংকটের কারণে এ শিল্পীর সাথে জড়িত হাজার হাজার কুঠির শিল্পী ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছ্। বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরি বিক্রি ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

। গ্রামাঞ্চলে যে বাঁশ পাওয়া যায় তা চড়া মূল্যে কিনতে হয়। আর বেত নেই বললেই চলে। জিনিসপত্র তৈরি করে সঠিক মজুরি পাওয়া দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে বাঁশ বেতের সামগ্রীর বিকল্প এখন বাহারী প্লাষ্টিক সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে।

তার পরেও সৌখিনদের কাছে বাঁশ ও বেতের সামগ্রীর বেশ কদর রয়েছে। বাঁশ ঝাঁড় উজাড় হওয়ার নেপথ্যে অন্যতম কারণ, ইট ভাটা ও টালী কারখানায় বাঁশের মুড়া তুলে ব্যাপক ভাবে পোড়ানোর কারণে, পরিচর্যার অভাব ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বাঁশের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটময় হয়ে উঠছে পরিবেশ। সব মিলিয়ে বাঁশ ও বেতের অভাবে এ শিল্প আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.