আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গৌতম বুদ্ধ

গৌতম বুদ্ধ, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা। তার জন্ম বর্তমান ভারত-নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন নেপালের লুম্বিনি গ্রামে। গৌতম বুদ্ধ ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক ধর্মগুরু এবং তাঁর দ্বারা প্রচারিত ধর্ম বিশ্বাস ও জীবন দর্শনকে বৌদ্ধ ধর্ম বলা হয়। তাঁর জন্মের ও মৃত্যুর সঠিক সময়কাল অজ্ঞাত । আধুনিক ঐতিহাসিকের মতে, গৌতম বুদ্ধের মৃত্যু ঘটে ৪৮৬ থেকে ৪৮৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে ।

তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর অনুগামীরা তাঁর জীবনকথা, শিক্ষা ও বৌদ্ধ সংঘের সন্ন্যাস-বিধি লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর শিক্ষাগুলি প্রথম দিকে মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় চারশো বছর পর এগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়। তাঁকে দেবতা বা মহামানব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কঠোর তপস্যার পর তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন।

তিনি দুঃখ, দুঃখের কারণ, প্রতিকার প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলেন। এ ঘটনাটিই বোধিলাভ নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্ম গৌতম বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত একটি ধর্ম বিশ্বাস এবং জীবন দর্শন আর এর ধর্মগ্রন্থের নাম "ত্রিপিটক"। এটি মূলত বুদ্ধের নিজস্ব দর্শন এবং উপদেশের সংকলন। এটি কোরান বা বাইবেলের মত ঈশ্বরপ্রদত্ত ধর্মগ্রন্থ নয়।

বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান অনুশাসন হিসাবে এটিকে গণ্য করা যায়। আক্ষরিক অর্থে বুদ্ধ বলতে একজন জ্ঞানপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত, জ্ঞানী, জাগরিত মানুষকে বোঝায়। উপাসনার মাধ্যমে উদ্ভাসিত আধ্যাত্মিক উপলব্ধি এবং পরম জ্ঞানকে বোধি বলা হয়। গৌতম ছিলেন ছোট্ট একটি রাজ্যের রাজপুত্র। তার জন্মের সময়ই পন্ডিতেরা তার মধ্যে ভবিষ্যতে একজন অসাধারন জ্ঞানী অথবা পরাক্রমশালী শাসক হয়ে উঠবার চিহ্ন দেখতে পান।

তার পিতাও তাকে একজন পরাক্রমশালী যোদ্ধা ও শাসক হিসাবেই দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে খুব অল্প বয়সেই ধ্যানের প্রতি আগ্রহ দেখা যায় যা তাকে পরবর্তীতে একজন ধার্মিক দার্শনিকে পরিণত করে। একজন রাজপুত্র হিসেবে সিদ্ধার্থ বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা লাভ করেন। বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। বাসনা সর্ব দুঃখের মূল।

বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। এটাকে নির্বাণ বলা হয়। নির্বাণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিভে যাওয়া, বিলুপ্তি, বিলয়, অবসান। সকল প্রকার কামনা-বাসনা-বন্ধন থেকে মুক্তি লাভই হচ্ছে নির্বাণ। এগুলোকেই বুদ্ধের চারটি উপদেশ তথা "Four Noble Truths" বলা হয়।

বুদ্ধ পরকাল সম্বন্ধেও অনেক কিছুই বলে গেছেন, পরকাল নির্ভর করে মানুষের ইহ জন্মের কর্মের উপর। একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৩ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রথমে তিনি একজন বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন অসুস্থ মানুষ, এবং শেষে একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান। তিনি তাঁর সহিস চন্নকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, চন্ন তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি। একই দিন কিংবা অন্য একদিন তিনি দেখা পেলেন একজন সাধুর, যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত।

চন্নকে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী, যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে প্রাসাদ ত্যাগ করেন। সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকেই বলা হয় মহানিষ্ক্রমণ। তার মানে মানুষের বৃদ্ধ হওয়া, অসুস্থ হওয়া, মৃত্যু হওয়া, এবং সন্ন্যাসীদের সম্বন্ধে বুদ্ধের কোন ধারণা ছিল না। তিনি এগুলো জানতে পেরেছেন চন্ন নামের এক ব্যক্তি থেকে।

এই অবস্থায় ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে প্রাসাদ ত্যাগ করেন। বর্ষাকালে ভিক্ষুদের হাঁটাচলায় যাতে তৃণ বা শস্যহানি না হয় এর জন্য বুদ্ধ ভিক্ষু সংঘকে বর্ষা ঋতুতে তিন মাস একনাগাড়ে একস্থানে অবস্থান নিয়ে বর্ষাব্রত পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'যথাপি ভমরো পুপ্ফং বণ্নগন্ধং অহেঠযং সিদ্ধার্থ গৌতমের বিবাহ সম্বন্ধে দুধরনের মত আছে। প্রথম মত অনুসারে ১৬ বছর বয়সে তিনি একটি প্রতিযোগিতায় তাঁর স্ত্রীকে লাভ করেন। অতঃপর পুত্র রাহুল জন্মগ্রহণ করে।

আর একটি মত অনুসারে ২৮ বছর বয়সে তাঁকে সংসারের প্রতি মনোযোগী করার জন্য তাঁর পিতামাতা তাঁকে রাজকন্যা যশোধরার সাথে বিবাহ দেন। পরবর্তী বছরে জন্ম নেয় পুত্র রাহুল। তিনি আলারা নামক একজন সন্নাসীর কাছে যান। তার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি যান উদ্দক নামক আর একজনের কাছে। কিন্তু এখানেও কোনো ফল পেলেন না।

এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের উরুবিল্ব নামক স্থানে একটি গাছের নিচে ধ্যান শুরু করেন। কঠোর সাধণার ফলে তার শরীর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হলেন। বুদ্ধের মৃত্যুর পরে ভারতীয় উপমহাদেশ সহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার হয়। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, মায়ানমার, চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কোরিয়া সহ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে এই ধর্মবিশ্বাসের অনুসারী রয়েছে।

ত্রিপিটক হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় পালি গ্রন্থের নাম। পালি তি-পিটক হতে বাংলায় ত্রিপিটক শব্দের প্রচলন। পিটক শব্দের অর্থ ঝুড়ি, যেখানে কোনো কিছু সংরক্ষণ করা হয়। খ্রীষ্টপূর্ব ৩য় শতকে সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে ত্রিপিটক পূণাঙ্গ গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃত হয়। বৌদ্ধ ধর্মে এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার কোন ধারণা নাই।

বলা হয়ে থাকে বুদ্ধও নাকি স্রষ্টার প্রশ্নে নীরব ছিলেন। ফলে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই তাদের ধর্মগ্রন্থকে স্রষ্টার বাণী হিসেবে বিশ্বাস করা হয় না। সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনটাই ছিল প্রকৃতির মায়াজালে বাঁধা। তাঁর জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও নির্বাণ_ এ তিন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয় খোলা আকাশের নিচে, বৃক্ষের ছায়াতলে। ৩৫ বছর বয়সে গৌতম বুদ্ধত্ব লাভ করেন নৈরাঞ্জনা নদীর তীরে, বোধিবৃক্ষের ছায়াতলে (বোধিবৃক্ষ একশ্রেণীর অশ্বত্থ গাছ, সিদ্ধার্থ এর নিচে বসে ধ্যানমগ্ন হয়ে বোধি বা পরম জ্ঞান লাভ করেন বলে বৌদ্ধেরা একে বোধিবৃক্ষ বলে)।

বুদ্ধ তাঁর অর্জিত জ্ঞানের বাণী প্রথম প্রচার করেছিলেন পাঁচ বর্গীয় শিষ্যের কাছে বৃক্ষের ছায়াতলে বসে। ৮০ বছর বয়সে বুদ্ধের জীবনাবসানও হয় কুশিনারায় দু'টো শালবৃক্ষের নিচে। খুবই তাৎপর্যময় এসব ঘটনা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক পরম পবিত্র তীর্থস্থান হলো লুম্বিনি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় বুদ্ধ কোশলরাজ প্রসেনজিৎ ও মগধের রাজা বিম্বিসারকে মহান রক্ষকের ভূমিকা পালনে উদ্ধুদ্ধ করেছিলেন।

বুদ্ধের উপদেশ মেনে চললে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার কুফল আজ আমাদের ভোগ করতে হতো না। বুদ্ধ বলেন, 'চিত্তেনা নিযতি লোকো' (চিত্ত দ্বারা বিশ্ব শাসিত)। বুদ্ধ মানুষকে জীবন ও জীবিকায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে বলেন। তাই তিনি সৎজীবিকার আশ্রয় নিতে বলেন। যেখানে দেহ, অস্ত্র, প্রাণী ও মাদক বাণিজ্যের কোনো স্থান নেই।

তিনি সরল, তৃপ্ত ও মিতব্যয়ী জীবনযাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মীয় দিন পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ কক্সবাজার, বরগুনা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৌদ্ধ মন্দির ও মঠগুলোতে অনুষ্ঠিত হয় নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ভক্তরা মন্দিরে মন্দিরে অসংখ্য প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, ফুলের মালায় মন্দিরগৃহ সুশোভিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হন। ( সিদ্ধার্থ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান লেখক হেরমান হেস এর লেখা অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপন্যাস।

গৌতম বুদ্ধের সময়ে ব্রাক্ষণ পরিবারে জন্মগ্রহনকারী "সিদ্ধার্থ" নামে এক যুবকের আধ্যাত্বিক অভিযাত্রা এবং দর্শন এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য। উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল জার্মান ভাষায় , খুব সরল অথচ মাধুর্যপূর্ণ ছন্দে । হেরমান হেস ১৯১০ সালে ভারতে কিছুদিন কাটানোর পর, বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশ পায় ১৯১২ সালে । বাংলাদেশে বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশ করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, ২০০২ সালে । বইটি অনুবাদ করেন জাফর আলম এবং সম্পাদনা করেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

সিদ্ধার্থ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত সমাস, সিদ্ধ (অর্জন) + অর্থ ( সম্পদ/ জ্ঞান ) = সিদ্ধার্থ (অর্জিত জ্ঞান)। উপন্যাসের সিদ্ধার্থ এবং গৌতম বুদ্ধ দু'জন ভিন্ন মানুষ। "সাধারণভাবে পরিজ্ঞাত বুদ্ধকে অতিক্রম করে এখানে নতুন এক বুদ্ধ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ সাফল্য অভাবিতপূর্ব। ১৯৭২ সালে এর চলচ্চিত্র রুপায়ন হয় । শশী কাপুর, সিদ্ধার্থের এবং সিমি গাড়েয়াল, কমলার ভূমিকায় অভিনয় করেন।

) মহামতি বুদ্ধ মহানবী (সাঃ) সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন । যা তার স্রষ্টার একজন পয়গম্বর হওয়ার সুষ্পষ্ট প্রমাণ এবং স্রষ্টার অস্তিত্বের বিশ্বাসী বলে নিঃসন্দেহ হওয়া যায় । কারণ, কোন নাস্তিকের পক্ষে এরকম ভবিষ্যদ্বানী এবং অন্যান্যদের বুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে বলা সম্ভব নয় । স্রষ্টার পক্ষেই ভবিষ্যত জানা সম্ভব এবং উনার কাছ থেকে জেনেই নবী-রাসূলগণ সাধারণতঃ ভবিষ্যদ্বাণী করতেন । সাধারন ভাবে বুদ্ধধর্মের অনুসারীদের মাঝে এই ধারনা বিদ্যমান- বুদ্ধ বলেছিলেন , " ঈশ্বর বা God বলে কিছু নেই।

" ভুলে গেলে চলবেনা , তিনি কিন্তু আরো একটি কথা বলেছেন , "আমার সত্তা বা আমিত্ব বলেও কিছু নেই"। এর মানে কি এই যে , যেমন ঈশ্বর নেই তেমনি আমি ও নেই? তাহলে এই পোস্টটি কে লিখছে বা আপনি যদি না থাকেন , তাহলে কে এই লেখাটি পড়ছে? বুদ্ধের সময়ে উপালী নামে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী একজন বিখ্যাত পন্ডিত যুক্তি তর্কে বুদ্ধকে পরাস্ত করার উদ্দেশ্যে বুদ্ধের কাছে যান। বিভন্ন বিষয়ে আলোচনার পর তিনি বুদ্ধের দর্শন পর্যলোচনায় মুগ্ধ হয়ে নিজেই বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে বুদ্ধের অনুসারী হতে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা বুদ্ধকে জানালে বুদ্ধ উপালীকে বলেনঃ যে কোন কাজ তাড়াহুড়া করে করা উচিত নয়। সব কাজ ধীরে ধীরে নির্ভূল ভাবে করা উচিত। প্রথমে সম্যকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করুন; তাড়াহুড়া না করে এই বিষয়ে আরও প্রশ্ন করার অবকাশ নিন।

আপনার মতো একজন খ্যাতিমান পন্ডিতের জন্য এটি বিশেষ প্রয়োজন। যথার্থ বিচার বিশ্লেষণ না করে সিদ্ধান্ত নেয় সমীচিন নয়। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.