"অ্যাবসার্ড" আমি তখন মাত্র পাশ কইরা বাইর হইসি।
একদিন বিকেলে ডিউটি করছিলাম, সিলেটের একটি হাসপাতালে
ম্যানেজার আসলো দৌড়াইয়া। আইসা বলে "স্যার হলে(জলদি) আউক্কা(আসেন)। এক ভি আই পি রোগী আইসন। "
ভি আই পি সুনলে আবার আমার মেজাজ খারাপ লাগে।
কারন এরা হুদাই জালাইতে থাকে। তবে ভি আই পি এক রোগী পাইসিলাম, সিলেটের মেয়র কামরান সাহেব কে। রাজনৈতিক জীবনে বা ব্যাক্তি জীবনে সে যাই করুক না কেন, এত ভালো ব্যাবহার আর কোন ভি আই পি রোগী থেকে পাইনি।
সে যাই হোক, আসল কথায় ফিরা আসি। ম্যানেজারের ডাকে সাড়া দিয়া আমি সাথে সাথে বাইর হইলাম।
দেখি ছবির এই ভদ্রমহিলা,
পায়ে ব্যাথা পাইসেন। আমি তো চিনি না উনাকে। এক জন আইসা কানে কানে কইল," স্যার ইন্ডিয়ার নায়িকা " আমার মাথা তো কাম করতেসে না। ইন্ডিয়ার নায়িকা এইখানে আইল কেমনে??আর নায়িকাই যদি হয়, তাইলে আমি চিনি না কেন???
যাইহোক, উনাকে জিজ্ঞেস করলাম,কি ব্যাপার? বলল, শুটিং করতে এসে তাদের গাড়ী এক্সিডেন্ট করসে। এক জন মারা গেসে আরও আহত হইসে কয়েকজন।
জিজ্ঞেস করলাম কিসের শুটিং? বলে "মনের মানুষে" র শুটিং।
পরে দেখি আরও দুই রোগী আসছে। একজন ওই নায়িকার মা, মাথায় ব্যাথা পেয়েছেন। আরেক মেক আপ ওমেন মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে গেসে তার। কি ভয়ংকর অবস্থা।
মাহবুব আলী তখনও টের পায় নাই, কি আইতাসে সামনে।
তিন রোগী কে চিকিৎসা দিয়ে, কল করলাম জনৈক প্রফেসর কে। স্যার ভি আই পি রোগী। এসে দেখে গেলে ভালো হয়।
একটু পর ম্যানেজার আইসা কয়, "স্যার আপনের ফোন আসছে"
হ্যালো বলার পর ওপাশের ব্যাক্তির নাম শুনে ভিমরি খাইলাম
এই মহিলা (বিবি রাসেল)
লে হালুয়া,
আইজকা কি শুরু হইল??? সব নায়িকা , মডেল এক লগে আইসা পড়ল??
তারপর সিলেটের এস পি।
তারপর ডি সি।
পরের ফোন, রাইসুল ইসলাম আসাদ( যতটুকু মনে পড়ে)
এর মধ্যে এক দল সাংবাদিক আইসা দৃশ্যপটে হাজির।
পারলে হুড়মুড় কইরা নায়িকার রুমে ঢুইকা যায়। আমি হাসপাতালের গার্ড ২ টারে দার করাইলাম দরজার সামনে। হেরুইন বুলে কতা।
কিসুক্ষন পর আইল হাসপাতালের এম ডি। আইসা সে কি তার ভাবস
তার কিসুক্ষন পর আইসা হাজির হইল বিশাল এক বাহিনী। কলকাতার দাদা সবাই।
একজন কে জিগাইলাম, গৌতম বাবু কুতায়???
বলল, "আমাদের মাঝে সবচেয়ে বিচ্ছিরি চেহারার লোকটাই গৌতম ঘোষ। "
কিছুক্ষন পর আমার রুমে এসে ঢুকলেন, সেই বিচ্ছিরি চেহারার লোক
আমার সাথে তার রোগীদের অবস্থা নিয়ে কথা বার্তা বললেন।
এদিকে, আমি তো পরসি চরম বাটে। আমি কইতে পারতেসি না যে আমি উনার ভক্ত। কারন পরিস্থিতিটা ছিল ভয়াবহ। অনেকক্ষণ পরে, আমি কাণ্ড জ্ঞানের মাথা খাইয়া উনাকে বললাম,"জনাব আমি আপনার একজন ভক্ত, আপনার সাথে একটা ছবি তুলতে চাই। " উনি আমার কথায় খুব অবাক হলেন।
বললেন,"পরে। " কিন্তুক আমি জানতাম পরে আর ছবি তুলা হবে না। কারন উনি নিশ্চয়ই হাসপাতালে এসে বসে থাকবেন না।
যাইহোক, আমার বলদামি, এবং উনার ছবি তুলতে রাজী না হওয়ার কারনে, আমি যারপরনাই লজ্জিত হইসিলাম। যার কারনে এই ঘটনা আমি কারো সাথে শেয়ার করি নাই।
তবে ধারনা করি এইরকম পাগলামির সাথে উনি পরিচিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।