আমি ফিফা চেয়ারম্যান হতে চাই। চেয়ারম্যান হলে আমার নাম হবে জন ফু সোহেল
ডেসটিনি গ্রুপের কোনো কম্পানির অর্থপাচার বা অবৈধ আর্থিক লেনদেনের কোনো তথ্য পায়নি তদন্ত কমিটি। এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মগুলো পরিদপ্তরেও নেই বলে জানিয়েছে এ পরিদপ্তরের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির প্রধান আহমেদুর রহিমের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের ৩৩টি কম্পানির সংঘস্মারকে কোনো আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য নেই। তাই কম্পানি আইন অনুযায়ী, কম্পানিগুলোর বিদ্যমান অবস্থাকে আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ বলা যায় না।
এমনকি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নিবন্ধনের পর থেকে যাবতীয় রিপোর্টর্-রিটার্ন পরিদপ্তরে দাখিল করেছে। 'এসব রিপোর্ট-রিটার্ন অনুযায়ী কোনো শেয়ার অবৈধভাবে বিক্রি হয়েছে মর্মে দেখা যায় না'- এমন মতও দিয়েছে তদন্ত কমিটি। গত ২৮ মে আহমেদুর রহিম বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেনের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছেন।
তবে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. হুবহু ব্যাংকের মতো আমানত সংগ্রহ করছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমানত ও শেয়ার মূলধনের প্রায় ৫৪ শতাংশ 'সেলস প্রমোশন ব্যয়' হিসেবে খরচ করা হচ্ছে। অস্বাভাবিক হারে ব্যয়ের কারণে মূলধন অবক্ষয়ের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানটির মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়বে।
এ ছাড়া মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ডেসটিনি গ্রুপের প্রায় সব কম্পানির শেয়ারের মালিক। তাই এ প্রতিষ্ঠানটি মূলধন সংকটে পড়লে সব কম্পানিই বিপর্যয়ে পড়বে বলে মত দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া গ্রুপটির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিশন গঠন, ডেসটিনি গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারহোল্ডার, পরিবেশক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক জরিপ চালিয়ে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ আইনের মাধ্যমে মাল্টিলেবেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে কমিটি। ডেসটিনির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ থাকায় কম্পানি আইনের ১৯৭(খ)(অ) ধারা মোতাবেক পরিদর্শক নিয়োগের বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে কমিশন।
কমিটি ১২ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনসহ ২৭৩২ পৃষ্ঠার সংযুক্তি মিলিয়ে মোট ২৭৫৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
অর্থমন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মোট ৯টি সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে নিজেদের বেশকিছু সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে কমিটি বলেছে, অভিযোগের বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হওয়ায় মাঠপর্যায়ে দীর্ঘ সময়ের তদন্ত করা প্রয়োজন হলেও কমিটির সদস্যদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। ৫০ লাখ গ্রাহক প্রতারণা এবং তাঁদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা ও সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য গণশুনানি গ্রহণ ও মাঠপর্যায়ে তথ্য বিশ্লেষণ প্রয়োজন থাকলেও স্বল্প সময়ে কমিটির সদস্যদের তা-ও সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট রিটার্ন- বিশেষ করে আর্থিক বিবরণী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এ কমিটির প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই। তাই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন রয়েছে।
কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ডেসটিনি পরিবারভুক্ত কোনো কম্পানির মানি লন্ডারিং (অর্থপাচার) কিংবা অবৈধ আর্থিক ব্যবসায় বা কার্যক্রমসংক্রান্ত কোনো তথ্য পরিদপ্তরে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগটি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবেদনে কমিটির পর্যবেক্ষণ অংশে এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে, 'ডেসটিনি পরিবারভুক্ত কোনো কম্পানি মানি লন্ডারিং কিংবা অবৈধ আর্থিক ব্যবসায় বা কার্যক্রমসংক্রান্ত কোনো তথ্য অত্র পরিদপ্তরে (যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর) পাওয়া যায়নি।
সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের ৩৩টি কম্পানির সংঘস্মারকে কোনো আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য নেই। তবে এমন অনেক উদ্দেশ্যের কথা সংঘস্মারকে বলা আছে, যার ব্যবসা কম্পানি করছে না।
কম্পানি আইন অনুযায়ী এ অবস্থাকে আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ বলা যায় না।
ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্পানিটি বিভিন্ন মেয়াদি (৬, ৯, ১২ বছর) প্যাকেজের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে গাছ বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছে। মেয়াদপূর্তিতে আকর্ষণীয় হারে লভ্যাংশ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও আছে। এটি 'ভবিষ্যৎ প্রতারণার শামিল হতে পারে' উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। আর এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দরকার ছিল কি না এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড, ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন ও ডেসটিনি ডেভেলপারসর তাদের মোট পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে বিভিন্ন কম্পানিতে অনেক বেশি বিনিয়োগ করার বিষয়টি কম্পানি আইনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা করে আইনগত পদক্ষেপ নিতে আইন মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার সুপারিশও করেছে কমিটি।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি সম্পর্কে সুপারিশে তদন্ত কমিটি বলেছে, প্রতিষ্ঠানটির আমানত গ্রহণসংক্রান্ত কার্যক্রম বাংলাদেশের যেকোনো তফসিলি ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ কার্যক্রমের মতো হুবহু এক। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় অস্বাভাবিক। ফলে মূলধন অবক্ষয়ের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানের মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদনে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির পরিশোধিত মূলধন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৫ কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার টাকা। পরের বছর ৩০ জুন তা হয়েছে ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কাছে নগদ পরিশোধ ছাড়া ক্যাশ রিসিভেবল দেখিয়ে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
তদন্ত কমিটি আরো বলেছে, আমেরিকা, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে এমএলএম ব্যবসায়ের প্রতারণার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থাসহ কম্পানি বন্ধ করে দেওয়ার উদাহরণ আছে। সে আলোকে বাংলাদেশের এমএলএম কম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও অনুরূপ পদক্ষেপ বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান প্রয়োজন, যাতে সব এমএলএম কম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সম্পর্কে প্রকৃত চিত্র পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
ডেসটিনির অর্থপাচার বা অবৈধ লেনদেন পায়নি তদন্ত কমিটিব্যাংকের মতো আমানত সংগ্রহ করেছে ডেসটিনি কো-অপারেটিভ আবুল কাশেম
ডেসটিনি গ্রুপের কোনো কম্পানির অর্থপাচার বা অবৈধ আর্থিক লেনদেনের কোনো তথ্য পায়নি তদন্ত কমিটি। এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মগুলো পরিদপ্তরেও নেই বলে জানিয়েছে এ পরিদপ্তরের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির প্রধান আহমেদুর রহিমের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের ৩৩টি কম্পানির সংঘস্মারকে কোনো আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য নেই। তাই কম্পানি আইন অনুযায়ী, কম্পানিগুলোর বিদ্যমান অবস্থাকে আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ বলা যায় না।
এমনকি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নিবন্ধনের পর থেকে যাবতীয় রিপোর্টর্-রিটার্ন পরিদপ্তরে দাখিল করেছে। 'এসব রিপোর্ট-রিটার্ন অনুযায়ী কোনো শেয়ার অবৈধভাবে বিক্রি হয়েছে মর্মে দেখা যায় না'- এমন মতও দিয়েছে তদন্ত কমিটি। গত ২৮ মে আহমেদুর রহিম বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেনের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছেন।
তবে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. হুবহু ব্যাংকের মতো আমানত সংগ্রহ করছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমানত ও শেয়ার মূলধনের প্রায় ৫৪ শতাংশ 'সেলস প্রমোশন ব্যয়' হিসেবে খরচ করা হচ্ছে। অস্বাভাবিক হারে ব্যয়ের কারণে মূলধন অবক্ষয়ের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানটির মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়বে।
এ ছাড়া মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ডেসটিনি গ্রুপের প্রায় সব কম্পানির শেয়ারের মালিক। তাই এ প্রতিষ্ঠানটি মূলধন সংকটে পড়লে সব কম্পানিই বিপর্যয়ে পড়বে বলে মত দিয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া গ্রুপটির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিশন গঠন, ডেসটিনি গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারহোল্ডার, পরিবেশক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক জরিপ চালিয়ে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ আইনের মাধ্যমে মাল্টিলেবেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে কমিটি। ডেসটিনির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ থাকায় কম্পানি আইনের ১৯৭(খ)(অ) ধারা মোতাবেক পরিদর্শক নিয়োগের বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে কমিশন।
কমিটি ১২ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনসহ ২৭৩২ পৃষ্ঠার সংযুক্তি মিলিয়ে মোট ২৭৫৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
অর্থমন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মোট ৯টি সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে নিজেদের বেশকিছু সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে কমিটি বলেছে, অভিযোগের বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হওয়ায় মাঠপর্যায়ে দীর্ঘ সময়ের তদন্ত করা প্রয়োজন হলেও কমিটির সদস্যদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। ৫০ লাখ গ্রাহক প্রতারণা এবং তাঁদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা ও সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য গণশুনানি গ্রহণ ও মাঠপর্যায়ে তথ্য বিশ্লেষণ প্রয়োজন থাকলেও স্বল্প সময়ে কমিটির সদস্যদের তা-ও সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট রিটার্ন- বিশেষ করে আর্থিক বিবরণী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এ কমিটির প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই। তাই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন রয়েছে।
কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ডেসটিনি পরিবারভুক্ত কোনো কম্পানির মানি লন্ডারিং (অর্থপাচার) কিংবা অবৈধ আর্থিক ব্যবসায় বা কার্যক্রমসংক্রান্ত কোনো তথ্য পরিদপ্তরে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগটি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবেদনে কমিটির পর্যবেক্ষণ অংশে এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে, 'ডেসটিনি পরিবারভুক্ত কোনো কম্পানি মানি লন্ডারিং কিংবা অবৈধ আর্থিক ব্যবসায় বা কার্যক্রমসংক্রান্ত কোনো তথ্য অত্র পরিদপ্তরে (যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর) পাওয়া যায়নি।
সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের ৩৩টি কম্পানির সংঘস্মারকে কোনো আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ উদ্দেশ্য নেই। তবে এমন অনেক উদ্দেশ্যের কথা সংঘস্মারকে বলা আছে, যার ব্যবসা কম্পানি করছে না।
কম্পানি আইন অনুযায়ী এ অবস্থাকে আইনবহির্ভূত বা অসংগতিপূর্ণ বলা যায় না।
ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম্পানিটি বিভিন্ন মেয়াদি (৬, ৯, ১২ বছর) প্যাকেজের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে গাছ বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছে। মেয়াদপূর্তিতে আকর্ষণীয় হারে লভ্যাংশ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও আছে। এটি 'ভবিষ্যৎ প্রতারণার শামিল হতে পারে' উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। আর এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দরকার ছিল কি না এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া যেতে পারে।
এ ছাড়া ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড, ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন ও ডেসটিনি ডেভেলপারসর তাদের মোট পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে বিভিন্ন কম্পানিতে অনেক বেশি বিনিয়োগ করার বিষয়টি কম্পানি আইনের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা করে আইনগত পদক্ষেপ নিতে আইন মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার সুপারিশও করেছে কমিটি।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি সম্পর্কে সুপারিশে তদন্ত কমিটি বলেছে, প্রতিষ্ঠানটির আমানত গ্রহণসংক্রান্ত কার্যক্রম বাংলাদেশের যেকোনো তফসিলি ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ কার্যক্রমের মতো হুবহু এক। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় অস্বাভাবিক। ফলে মূলধন অবক্ষয়ের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানের মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদনে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির পরিশোধিত মূলধন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধন ছিল ৫ কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার টাকা। পরের বছর ৩০ জুন তা হয়েছে ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কাছে নগদ পরিশোধ ছাড়া ক্যাশ রিসিভেবল দেখিয়ে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ৫২ হাজার টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
তদন্ত কমিটি আরো বলেছে, আমেরিকা, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে এমএলএম ব্যবসায়ের প্রতারণার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থাসহ কম্পানি বন্ধ করে দেওয়ার উদাহরণ আছে। সে আলোকে বাংলাদেশের এমএলএম কম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও অনুরূপ পদক্ষেপ বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান প্রয়োজন, যাতে সব এমএলএম কম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সম্পর্কে প্রকৃত চিত্র পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।