.............সুন্দর দিনের আগামী। অন্যায়ের শাস্তির সঙ্গে ব্যবসা চালাতে দিন
ডেসটিনি গ্রুপের সব ব্যবসায়িক ও আর্থিক লেনদেন সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে দাবি করে অন্তত ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (ডিএমসিএসএল) সব ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার আবেদন করেছেন গ্রুপটির সভাপতি (চলতি দায়িত্ব) মো. আশরাফুল আমীন। একই সঙ্গে মো. রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনের জামিনে মুক্তি চেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ডেসটিনি গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডে সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় তদারকিও চেয়েছেন তিনি। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা স্বাভাবিক গতিতে চলুক- এমনটিও বলেছেন আশরাফুল আমীন।
গত ২৭ মার্চ বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদের কাছে আবেদনটি পাঠিয়ে আশরাফুল আমীন বলেন, 'ডেসটিনির ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এমএলএম বা পিরামিড পদ্ধতির ব্যবসা নয়। এটি সমবায়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। সরকারের সংশ্লিষ্ট আইন মেনেই এটি পরিচালিত হয়েছে।
তবে কিছু অবৈধ, লোভী, আত্মসাৎকারী অসৎ ব্যবসায়ীর কারণে প্রতিষ্ঠানটি ভুলভ্রান্তির শিকার। ডেসটিনি গ্রুপের কেউ অন্যায় বা রাষ্ট্রের নীতিমালার বাইরে দুর্নীতি করে থাকলে তাদের শাস্তি দিন।
তবে গুটিকয়েক ব্যক্তি ও অল্প কিছু পত্রিকার সংবাদের ভিত্তিতে পুরো প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ৪৫ লাখ পরিবেশক ও দুই কোটি জনগণের স্বার্থ বিনষ্ট না করার অনুরোধ জানাই। '
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির সদস্যসংখ্যা সাড়ে আট লাখের বেশি উল্লেখ করে আবেদনে আশরাফুল আমীন বলেছেন, কম্পানিতে তাদের বিনিয়োগ দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। গড় হিসাবে তাদের মাথাপিছু বিনিয়োগ ২৫ হাজার টাকার কম। এতে স্পষ্ট যে, নিম্ন আয়ের মানুষই কম্পানিটির বিনিয়োগকারী। সমিতি ও ডেসটিনি-২০০০ সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হলেই কেবল এসব বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগ এবং প্রতিশ্রুতি ও কাঙ্ক্ষিত লভ্যাংশ পেতে পারে।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে বেশকিছু অনিয়ম হয়েছে স্বীকার করে নিয়ে আশরাফুল আমীন তাঁর
আবেদনে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে কোনোরূপ মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত না হলেও ডিএমসিএসএলে বেশকিছু অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। মো. রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হলে এক বছরের মধ্যেই সমবায় অধিদপ্তরের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সংঘটিত সব অনিয়ম দূর করে প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড নিয়মিত করবেন এমন শর্তারোপ করা হোক। ডেসটিনি-২০০০ ও ডিএমসিএসএলের মূল পরিচালনাকারী মো. রফিকুল আমীন উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়েছে, তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মূল বিনিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। তা না করে অন্য যেকোনো পন্থা অবলম্বন করলে বিনিয়োগগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। '
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, সমবায় অধিদপ্তর এবং যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর নিয়মিতভাবে ডিএমসিএসএল ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের নির্দিষ্ট সময় পরপর আর্থিক প্রতিবেদন সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা ও উপদেশ দেওয়ার মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে।
এই প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যবসা পরিচালনায় কোনো ধরনের আইনি প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা দূর করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আশরাফুল আমীন বলেছেন, পাশাপাশি দুদকের দায়ের করা মামলা দুটি সংশ্লিষ্ট আদালতে আইনের স্বাভাবিক গতিতে চলতে দেওয়া হোক।
ডেসটিনি গ্রুপের সংগ্রহ করা অর্থ ও তার ব্যয় বিবরণী তুলে ধরে আবেদনে বলা হয়েছে, 'ডেসটিনি গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০-এর পণ্য বিক্রয়, ডিএমসিএসএলের সদস্যদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ ও সদস্যদের কাছে শেয়ার বিক্রি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন অগ্রিম বৃক্ষ বিক্রি করে ২০০০ সাল থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ১২১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর বিপরীতে সরকারি কোষাগারে আয়কর ও ভ্যাট খাতে ৪১০ কোটি টাকা পরিশোধ ও সম্পদ ক্রয়সহ মোট পাঁচ হাজার ১০৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। '
বাণিজ্যসচিবের কাছে পাঠানো আবেদনের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (নিবন্ধন), যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
সুত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।