আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাত সংযুক্ত বিএনপি কে না বলুন !!!

আমি একা নই......আরও অনেকে আমার সাথে । জামায়াত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এবং ওই সময় ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষার নামে, ধর্মের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণ নিজেরা করেছে এবং পাকিস্তানি সেনাদের এসব জঘন্য কাজে যেভাবে সহায়তা করেছে তার বিবরণ এখন শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, বিশ্বের মানুষও জানে। ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে শান্তি এবং প্রগতি। এ বিশ্ব জগতে দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান যা কিছু আছে এবং যত নবী-পয়গম্বর এসেছেন তা কেবলই মানুষের শান্তি এবং কল্যাণের জন্য সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন এবং পাঠিয়েছেন। মানুষের জন্যই যেখানে সবকিছু, সেখানে শুধু কেউ ভিন্নমত ও পথের অনুসারী হওয়ার জন্য একজন আরেজনকে হত্যা করবে_ তা কোনোক্রমেই কোনো ধর্মের বার্তা হতে পারে না।

রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য পবিত্র ধর্মের অপব্যবহার করে জঙ্গিদের এহেন ঘৃণ্য কাজ মুসলমানদের হেয়প্রতিপন্ন করছে বিশ্ব দরবারে। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য জীবনের সব ক্ষেত্রেই সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ রেখে গেছেন ইসলামের সর্বশেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) তার নিজের জীবন ও কর্মের মাধ্যমে। হুদায়বিয়ার সন্ধি এবং মুলতবি হজের পর মুতা অভিযান ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম শিক্ষণীয় অধ্যায়। মুতা অভিযানে যাত্রা শুরুর আগ মুহূর্তে হজরত মোহাম্মদ (সা.) সবাইকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, 'সাবধান! কোনো সাধু-সন্ন্যাসী, বালক-বালিকাকে বা স্ত্রীদের বধ করিও না। শত্রুদের কোনো বৃক্ষ ছেদন করিও না।

কোনো গৃহ জ্বালাইয়া দিও না। শুধু শত্রুকে বধ করিবে এবং সর্বদা আল্লাহকে ভয় করিয়া চলিবে' (গোলাম মোস্তফা : বিশ্বনবী পৃঃ-৩০৮)। মহানবীর এমন দৃষ্টান্ত থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং আজকের জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক জামায়াত ১৯৭১ সালে ধর্মের নামে দেশব্যাপী ব্যাপক হারে মহিলা-শিশুসহ নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। অগণিত বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে এবং লুটপাট করেছে। তাহলে ধর্ম থাকল কোথায়।

ইসলামে যে জিহাদের কথা বলা হয়েছে তার অপব্যাখ্যা করে জঙ্গিরা এবং তাদের রাজনৈতিক সুবিধাভোগীরা সরলপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ইসলামের দৃষ্টিতে একজন মুসলমানের সর্বোৎকৃষ্ট জিহাদ হচ্ছে, তার নিজের মধ্যে যে পশুত্ব রয়েছে তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে সেটিকে দমন ও পরাজিত করা এবং সবসময় মানব আত্মার শ্রেষ্ঠত্ব নিজের মনে ও দেহে বজায় রাখা। ২০০১-২০০৬ সময়ে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে জামায়াত-বিএনপি সরকার বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানানোর যে চেষ্টা করেছিল তা ব্যর্থ হয়ে যায় বিগত নির্বাচনে তাদের শোচনীয় পরাজয়ের মাধ্যমে। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি বিএনপি যেভাবে নির্বাচন করতে চেয়েছিল তার মাধ্যমে যদি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতো এবং এখন যদি দেশে বিএনপি-জামায়াতের যৌথ শাসন চলত তাহলে এতদিনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শত নামের জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপের ভয়াবহতা কি রকম হতে পারত তা শুধু একবার পাকিস্তান-আফগানিস্তানের দিকে তাকালে যে কেউ বুঝতে পারবেন। জঙ্গি বা জঙ্গিবাদ কথাটির সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের পরিচিতি মাত্র কয়েক বছরের।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট প্রায় একই সময়ে সারা দেশে ৬১টি জেলার প্রায় ৫২৫টি স্থানে একযোগে বোমা বিস্ফোরিত হলে তার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের পরিচয়, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের সম্যক পরিচয় ঘটে। তবে এর আগে ১৯৯৯ সালে যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে এবং ২০০১ সালে রমনার বটমূলে এবং আরও কয়েকটি জায়গায় এ জঙ্গিদের দ্বারা ভয়াবহ বোমা হামলা হয় এবং তাতে আহত-নিহত হয় অনেক নিরীহ মানুষ। বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় হামলাটি হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ওপর। ওই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং আহত হন কয়েকশত লোক। ২১ আগস্ট হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০১ থেকে ২০০৬, জামায়াত-বিএনপি সরকারের সময় দেশব্যাপী এ জঙ্গিদের ব্যাপক উত্থান ঘটে। হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ (আহাব) এবং হিজবুত তাহরীর জঙ্গিরা জড়িত। এসব গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালিয়ে তারা মানুষ হত্যা করেছে ধর্মের নাম ব্যবহার করে এবং তাদের মতে, ইসলাম ধর্মকে রক্ষা করার জন্য। জেএমবি ও জেএমজেবি'র যেসব নেতা গ্রেফতার হয়েছে তাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও কর্মকাণ্ডের ইতিবৃত্ত থেকে জানা যায়, তারা প্রায় সবাই আগে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দলের নির্দেশেই তারা বিভিন্ন নামের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন। তা ছাড়া আটককৃতদের আস্তানা ও বাড়ি থেকে যেসব প্রকাশনা ও পুস্তিকা পাওয়া গেছে তার সবই জামায়াতের গুরু পাকিস্তানের প্রয়াত নেতা আবুল আলা মওদুদী ও তার শিষ্য গোলাম আযম এবং অন্যদের।

২০০১-২০০৬ বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে যে চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আদর্শ অনুসরণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল সেখান থেকে বিএনপির অবস্থানের কোনোরকম পরিবর্তন এখনো হয়নি। সুতরাং ধরে নেওয়া যায়, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ হবে। বিএনপি নেত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী যেহেতু ওই অভিযুক্তরা রাজবন্দী, তাই ক্ষমতায় এসে তাদেরকে মুক্ত করে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হবে_ এমন আশঙ্কাই স্বাভাবিক। @সুলতান মির্জা ১২/০৬/২০১২ ইং ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.