লেখালেখিই হোক আমার জীবন...
শিক্ষাজীবনের প্রায় ১৭টি বছর অতিবাহিত করেছি। কখনো কখনো কোন কোন শিক্ষকের আচরনে এমন অভিভূত হয়েছি যে ভাবতাম, মানুষ এত ভালো হয় কি করে !! ক্লাসে প্রথম অভিভূত হয়েছিলাম সমাপিকা আপার ক্লাস করতে গিয়ে। মাত্র এক বছর তার ক্লাস করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এতেই তার অন্য বিদ্যালয়ের বদলি হওয়ার সময় চোখের জল রুখতে পারিনি(যদিও আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি)। এরপর আমাকে মুগ্ধ করে গেলেন একে একে জিতেন স্যার, নকুল স্যার, তৈয়ব স্যার, এক আপা(দুঃখিত নাম মনে করতে পারছিনা) সহ আরো অনেকে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পদার্পন করলাম। বুঝলাম এই জগতটা আলাদা। পরীক্ষার খাতা মুল্যায়নে, ক্লাসে, পড়াশুনার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রাপ্তিতে কিছুটা পক্ষপাতিত্বের স্বাদ পেলাম। যদিও তাদের মাঝে ব্যাতিক্রম ছিলেন মোবারক স্যার, খালেক স্যার, নীলকান্ত স্যার, শাহজাহান স্যার, বংকীম স্যার। অন্যরাও ভালো ছিলেন।
যাই হোক সমাপ্ত হল স্কুল জীবন।
কলেজ জীবনের শুরু । প্রথম দেখলাম শিক্ষকদের মাঝে রাজনীতি। আগে শুনতাম ছাত্ররা রাজনীতি করে, ওরা খারাপ। কিন্তু শিক্ষকরাও যে রাজনীতি করে, স্বার্থের পিছনে দৌড়ান তারও নজির দেখলাম কলেজ জীবনে।
শিক্ষকদের কোন্দলে ক্লাস হয়না, শিক্ষকেরা মুখোমুখি অবস্থানে, অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখা, বহিরাগত লোকজন এনে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা,হাতাহাতিও হয়েছে কয়েকবার। তখন ভাবতাম শিক্ষকেরা এমন করলে আমরা কি করব??? তবুও কয়েকজন শিক্ষাগুরু ছিলেন অসাধারন সেলিম স্যার, ফজলু স্যার, কালাম স্যার,ইমতিয়াজ স্যার, মোহসেন আরা ম্যাম, অনুপম স্যার ছিলেন অসাধারন...।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। খুব কাছ থেকে দেখছি দেশের সেরা বুদ্ধিজীবী, জ্ঞানতাপসদের। দেশের কাণ্ডারি এরা।
অথচ সামান্য স্বার্থের জন্য এরা কিই না করতে পারে? শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি তো শিক্ষকরাই করে ! সরকারের সমস্ত সুবিধার সুযোগে সদ্ব্যাবহার তো তারাই করে ! মেধার অবমূল্যায়ন তো আজ শিক্ষকরাই করে! তাহলে এই দেশের উন্নতি হবে কিভাবে?? আজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রে রাজনীতি চলে, রাজনীতি না করলে প্রশাসনে যাওয়া যায় না। আর প্রশাসনে না গেলে তো পরিবর্তনই সম্ভবনা। তাহলে কি দেশ পরিবর্তনের কোনই সম্ভাবনা নাই??
এবার আসি মূল প্রসঙ্গেঃ
আমাদের প্রিয় স্যারেরা প্রায়ই বলে থাকেন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। ছাত্ররাজনীতির কোন মান নেই। আমার প্রশ্ন শিক্ষক রাজনীতির কি আসলে কোন মান আছে?? তারা কোন পর্যায়ভুক্ত হলে রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী কিংবা এম পির কাছে পর্যন্ত তেলবাজি করতে পারে।
স্যার আপনারা আমাদের গুরু, আমাদের আদর্শ। এই বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আপনাদের অবদান অপরিসীম। আপনারাই পারেন এই দেশে আমুল পরিবর্তন এনে সুন্দর করে বিনির্মান করতে। শুধু আত্নস্বার্থ বাদ দিয়ে দেশের কথা একটু ভাবুন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকরী এবং দুর্ণীতিমুক্ত হলে ছাত্ররা আবার সুস্থ ধারায় ফিরতে বাধ্য।
সবকিছুই আপনাদের হাতে। আপনারা চাইলেই পারেন। আপনাদের কি সেই সময় কিংবা আত্নস্বার্থ বিসর্জনের মানসিকতা নিয়ে একবার এগিয়ে আসুন। সারাদেশ আপনাদের অপেক্ষায়...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।