আনন্দবতী মেয়ে আমি হাওয়ায় উড়াই চুল,চোখের ভেতর ছলাৎ ছলাৎ মনের ভেতর নীল ঘাসফুল এন্টিগোনিশ , কানাডা
৬ মার্চ , ২০১২ ইং
দোলা ,
কি রে আছিস কেমন ? চমকে গেলি না তো ! তোর তো চমকে যাবার অভ্যেস চিরকাল জুড়ে । বিনী কি যে ক্ষ্যাপাতো তোর এই চমকে যাওয়া নিয়ে , এই দেখ হাসিতে কুঁকড়ে যাচ্ছি । মনে আছে তো সেসব কথা ? নিশ্চিত তোর ঠোঁট থেকে বেড়ুবে সেই একই কথা – “ইস তোরাই যেনো ভালো ছাত্রী আমি মধ্যমানের তা বলে এসব মনে থাকে না বুঝি ?”
তুই কি জানিস তোর পেছনে তোকে সকলেই আমরা ভালোবাসতাম । অথচ সামনে এলেই ক্ষ্যাপানো । সবচেয়ে তোকে অনুকরণ করতো বিনী ।
আমাকে বলতো , “দেখ আসছে ও , কি করি আমি !” বলতাম কেন ওকে এতো ক্ষ্যাপাস ? বলতো বিনী , “ভালোবাসি যে খুব , তাই । ” আচ্ছা ভালোবাসা মানেই কি এমন পাগলামী ? কি জানি রে ! ভালোবাসতেই তো পারলাম না তোদের মতো ।
এই সেদিন জানিস স্মিতার সাথে দেখা ? চিনতেই পারিনি ওকে দেখে । কি ভারিক্কী গিন্নী-গিন্নী চেহারা । সাথে ওর গো-বেচারা স্বামী ঈয়ন ভাই ।
ঈয়ন ভাইকে কি নাম দিয়েছিলো বিনী মনে আছে ? দোলা রে আমি লিখতেই পারছিনা ওই নামটা ভেবে । স্মিতা বেশ বুদ্ধিমতী , তাই তো এমন মানুষের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছে যাকে ও কথায়-কথায় ওঠ-বস করায় । এসব কি আর ভোলা যায় রে ?
“দরোজার ওপাশে যা কিছু ফেলে রেখে আসি
তার মধ্যে অনেক স্মৃতির বালু ভরে যায়
মাঝে-মধ্যে এই যে মনে করিয়ে দেয়া
কোনো প্রিয়বান্ধবীর চমকে দেয়া স্বস্তির ঝড়ে
সবটুকু ধূলো উড়ে যায়
ঢেকে রাখা স্মৃতিগুলো পরিষ্কার হয়ে ফুঁটে ওঠে
বর্তমান সময়ের ফুলে । ”
এই দেখ কবিতার যন্ত্রণায় অসহ্য । কি রে এমনই তো বলবি , তাই না ? দেশের বাইরে চলে আসবার পরে এই কথাটা এখন আমি আমাকেই বলি ।
আসলেই রে বড়ো বিরক্তিকর । বিষয় খুঁজে পাইনা , যত্তোসব ন্যাকা ন্যাকা লেখা লিখি । তবে মজা কি জানিস ? ভেবেছি এ জীবনে যতোগুলো চিঠি লিখেছি , তার সব একসাথে করে একটি বই বের করবো । কিন্তু যখনই এমন সিদ্ধান্ত নিলাম , দেখি কি কতোজন যে আমার মতো করে চিঠি লেখা শুরু করে দিলো । হাসি পায় , জানিস ? পেশাদারী মনোভাব কেন নেই আমার বলতো ?
ধ্যৎ কখন থেকে ছাইপাশ লিখেই যাচ্ছি ।
লেখার আগে কতো কথা ভেবে রেখেছিলাম লিখবো , যেইনা শুরু করলাম লেখা অমনি সব কথা ঢেঁড়স মস্তিষ্ক থেকে হাওয়া । আর কতো মনে রাখা যায় বল , বয়স তো আর কম হলোনা এই মাথার ভেতরের কোষগুলোর । এই দেখ হাসবি না বলে দিলাম । হাসলেই মাথায় নারকেল তেল ঢেলে দেবো কিন্তু ।
এবার আসি আসল কথায় ।
আরে ভয় পাসনা তোর ব্যাগ থেকে এতো দূরে বসে টাকা মেরে নেবো না । ঠিক চারদিন পরে মানে সামনের বুধবার বিকেল চারটায় বিনীর বাসায় যাস , তোর জন্যে একটা জিনিস পাঠিয়েছি । শোন কিছুতেই যেনো মিস না হয় , ঠিক আছে ? তবে ম্যাডাম আপনার যা কন্ঠ এমন চিৎকার দিস না , যাতে বিনীর মেয়েটার ঘুম ভেঙ্গে যায় ।
দোলা একটা প্রশ্ন করেই শেষ করবো এ চিঠিটা । আমাকে কি মনে করিস কখনো ?
তোর ন্যাকা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।