জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। দুবাইয়ের মুরশিদ বাজার ও ড্রাগনমাঠে পাইকারী ও খুচরা পন্য বিক্রয় করা হয়। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, রাশিয়া, ও মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসায়ীরা মুরশিদ বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করে নিজ দেশে নিয়ে যায়। বিক্রেতাদের মধ্য বেশীর ভাগ ইরানী, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, পাকিস্থানী, বাংলাদেশী ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে থেকে আগত। এই মুরশিদ বাজারের দোকানগুলোতে হাজার হাজার কর্মচারী কাজ করছে।
কর্মচারীদের বেশীর ভাগ ভারতীয়। তারপর বাংলাদেশীদের অবস্থান। মজার ব্যাপার হচ্ছে চাইনিজ দোকান গুলোতে শতকরা ৯০ ভাগই বাংলাদেশী সেলসমান কাজ করছে। চাইনিজরা বাংলাদেশীদেরকে খুব পছন্দ করে। তাই চাইনিজ দোকানে কর্মরত কোন বাংলাদেশীর অনুরোধে চাকরী পেতে কষ্ট হয় না।
প্রথম কয়েকদিন ভালভাবে কাজ করতে পারলেই চাকরী স্থায়ী হয়ে যায়। চাইনিজরা আরবী, হিন্দী, রাশিয়ান ভাষা বুঝে না। ইংরেজী ভাষা ও খুব কষ্ট করে বলে থাকে। তাই তারা বাধ্য হয়েই বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শী কর্মচারীকে কাজ দেয়।
চাইনিজ দোকানে কর্মরত এক বাংলাদেশীর অনুরোধে তার এক বন্ধূর চাকরীর প্রথম দিনটি কেমন ছিল শুনুনঃ
চাইনিজের সাথে হায়, হ্যালো বলার পর বাংলাদেশী সেলসম্যান কাষ্টমারের অপেক্ষায় থাকে।
প্রথম কাষ্টমার ইন্ডিয়ানঃ ইসকা প্রাইজ কিতনা?
সে সঠিক উত্তর দিল। (বাংলাদেশীরা খুব দ্রুত হিন্দী ভাষা শিখে ফেলে)
দ্বিতীয় কাষ্টমার রাশিয়ানঃ তাকই ইসকুল কারোক্কা?
কাষ্টমারের কথা বুঝতে না পেরে সে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলল।
তৃতীয় কাষ্টমার এরাবিয়ানঃ কাম হাজা?
সে সুরা ফাতিহা বলে দিল। (কাষ্টমারের সাথে কি বলল না বলল চাইনিজ কিছুই বুজতে পারেনি)
বিভিন্ন কাষ্টমারের সাথে সুন্দর ভাবে কথা বলতে দেখে চাইনিজ খুশী হয়ে তাকে চাকরীতে রেখে দিল। কাষ্টমারের সাথে কথা বলতে না পারলে তার চাকরী হতো না।
আমরা তার মুখ থেকে এই কথা শুনে সবাই হাসতে হাসতে -- -এখন সে রাশিয়ান, আরবী, হিন্দী, ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। এই চার ভাষা জানা থাকলে দুবাইতে চাকরী পেতে কষ্ট হয় না।
তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশের প্রবাসী ভাইয়েরা চাইনিজ দোকানে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় লোভ সামলাতে না পেরে টাকা মেরে পালিয়ে যায়। যার কারনে বাংলাদেশীদের উপর তাদের আস্থা কমে আসছে। তারপরেও ইন্ডিয়ানদের পছন্দ করে না বলে বাংলাদেশীদেরকে রাখতে বাধ্য হয়।
চাইনিজরা প্রবাসে যেমন বাংলাদেশীদেরকে পছন্দ করে ঠিক তেমনি আমাদের দেশের উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে তাদের অবদান ও অনেক বেশী। চীন মৈত্রী সেতু, চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র (বর্তমানে অন্য নামে পরিচিত) সহ আরো অনেক কিছুতে তারা সহযোগিতা করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।