অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই পলাশী'র ইতিহাস থেকে একটা বিষয়ই শিক্ষনীয়, বিদেশীরা আমাদের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খেয়ে যাচ্ছে হাজার বছর ধরে!
নবাব সিরাজ- মীর জাফর- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী, সব কয়টাই বিদেশী। এই বিদেশীরা ক্যাচাল করতেছিল আমাদের দেশের উপর দখন নিয়া, এবং এই ক্যাচালে আমাদের দেশীদের কোন ভূমিকাই ছিল না!
আর আমরা এতটাই আত্মসন্মানহীন যে, নিজেদের অস্তিত্বহীনতাও আমাদের এতটুকু নাড়া দেয় না।
পলাশী দিবস না করে আজকের দিনটা আমাদের "অনুশোচনা দিবস" হিসেবে পালন করা উচিত!
"আমাদের ভূমিতে মোঘলরা বহিরাগত ছিল, পলাশী'র ঘটনার সাথে বর্তমান বাংলাদেশীদের কোন সংশ্লিষ্টতাই নেই। "
এই সত্যটি প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া নতুন চেতনার ব্যাপার না, বিষয়টা হলো নিজেদের অস্তিত্ব বুঝে পাওয়া নিয়ে।
আমাদের দেশ প্রাচীনকাল থেকে বার বার বহিরাগতদের আক্রমনের শিকার হয়েছে।
গ্রীক-ফার্সি থেকে আরব-ব্রিটিশ সবাই দু মুঠো ভাতের সন্ধানে, একটু ভাল জীবনের আশায় আমাদের ষড়ঋতু'র নদীমাতৃক সুজলা সুফলা দেশটাতে বারবার হানা দিয়েছে।
শান্তিপ্রিয় আমরা বরাবর তাদের সাহায্য করেছি এবং পিঠে ছুড়ি খেয়েছি। যাদেরই আমরা সাহায্য করেছি, তারাই আমাদের অসামরিক ন্যাচারের অন্যায় সুবিধা নিয়েছে।
দীর্ঘ বিদেশী শাসনের অধীনে থেকে থেকে আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ভিনদেশী শাষকেরা আমাদের মনে নানা রকমের দ্বিধা ও দ্বন্দ ঢুকিয়ে গেছে, এবং আমাদের নিজেদের কাছে নিজেদের অপরিচিত করে দিয়ে গেছে।
তাই আমাদের ভাষা'র ব্যাকরন লিখেছে দস্যু ওলন্দাজেরা, আমাদের মানচিত্র একেছে শৃগালসম ব্রিটিশরা! ফলাফল, ধরা'র উপরে ধরা! ফলাফল, আমরা নিজেদের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব এবং অধিকারই হারিয়ে ফেলেছি!
আমাদের পারিপার্শ্বিক যত সমস্যা রয়েছে, সেসবের শিকড়ে আমাদের আত্ম পরিচয় এবং আত্মমর্যাদাবোধের অভাবের সাথে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
আমাদের ইতিহাস খুবই শান্তিপূর্ণ এবং কঠোর ন্যায্যতার। আমরা কোনদিন কোন দেশ আক্রমন করি নাই, অযথা জাতিগত হানাহানি মারামারি করি নাই, স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামোর ভেতর আমরা ছিলাম উৎকৃষ্ট সুশাসনের নজির, আমাদের অর্থনীতি ছিল ওয়েলফেয়ার বেইজড, নৌ যোগাযোগের কল্যানে আমরা ছিলাম ওয়েল কানেক্টেড, আমাদের ছিল প্রাচীন সামাজিক বিধান, এই বিষয়গুলো উপলব্ধি করে নিজেদের এবং আগামী প্রজন্মের মেরুদন্ড শক্ত করার বিকল্প নেই।
বর্তমানে গ্লোবালিজমের যুগ চলছে, এই যুগে এসে দেশ-জাতি-ধর্ম-ভাষা এসব নিয়ে বিভেদ বা অহংকার করা বর্বরতাই। তাই, নিজেদের খুঁজে পাওয়ার এই প্রয়াসকে কোনরকমের ইজমের আন্ডারে ফেলা উচিত হবে না।
নিজেদের ফিরে পেতে হবে কারন বাস্তব জগতে অসত্যকে সত্য বলে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা কি সেটা জানতে হবে নিজেদের উন্নয়নের জন্যই। নিজেদের প্রোডাক্টিভ করে গড়ে তোলার জন্যই।
আমরা আদতে হলাম শান্তি'র পায়রা, কিন্তু নিজেদের পরিচয় ভুলে আজ আমরা অন্যদের কাছ থেকে শুনে শুনে নিজেদের কাঁক বানিয়ে রেখেছি! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।