সাদ আহাম্মেদ “দোস্ত ডিভিডি দে দুইটা, নাক ফাটায় দেয়া মুভি দিবি” – আমাকে যখন ফসু এই কথা বললো আমি মনে মনে গুনতে থাকলাম এই হারামজাদা আমার কয়টা ডিভিডি নিয়েছে এখনো পর্যন্ত আর ফেরত দিয়েছে কয়টা। আমি ঢোক গিলে বললাম, “দোস্ত ঘটনাটা হইছে কি আমি আমার ডিভিডি সব আমার চাচাতো ভাইরে দিয়ে দিছি। একটাও আর নাই”।
ফসু আমার দিকে বিটলা টাইপ একটা হাসি দিয়ে বললো, “তোর চাচাতো ভাই কোনজন?”
আমি আরেকটা ঢোক গিলে বললাম, “দোস্ত ওইযে আকবর ভাই, মেকা ইঞ্জিনিয়ার”।
ফসু ভ্রু কুচকিয়ে আমার গলা টিপে ধরে বললো, “ওই হালার তো দাড়ি আছে।
ও মুভি দেখে নাকি?”
আমি হাসিমুখে বললাম, “দাড়ির চিপা দিয়া দেখে দোস্ত”।
ফসু আমার গলা ছেড়ে দিয়ে বলে, “দোস্ত মাইন্ড খাইস না। আমি আসলে আগেই দুইটা ডিভিডি নিয়ে নিছি। তুমি তোমার খাটের নিচে লুকায় রাখবা আর আমি সেটা খুজে পাবোনা এইটা ভাবা ঠিক হয়নাই। এখন যাই, তুই মুড়ি খা”।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। ডিক্যাপ্রিওর শাটার আইল্যান্ড আর ইনসেপশন নিয়ে গেছে আমি জানি। ওর জন্য এক গ্লাস পানি আনতে রুম থেকে বের হয়েছিলাম, তখনই এই দুর্ঘটনা হয়ে গেছে। আবারো প্রমাণিত হলো যে আমি একজন বিশিষ্ট মদন। উন্নত হাইব্রীড মদন।
পাঠককে আমার পরিচয় দেয়া উচিত। আমার নাম ইশতিয়াক মির্জা। আমার মধ্যে ছোটকালে নাকি একটা বাদশাহী ভাব ছিলো, তাই মির্জা টাইটেল দেয়া হয়েছে। বড় হওয়ার পর আমার বাবা প্রায় দিন নাশতার টেবিলে আমাকে বলে, “বাবা তোমার নাম মির্জা না দিয়ে ফকিরা দিলে ভালো হতো। ছেড়া জামা, ময়লা জামা পড়ে ঘুরাফেরা করো।
স্যান্ডেলের ফিতার অর্ধেক বাহির হয়ে থাকে। এমন কুজাত সন্তান আমার বিশ্বাস করতে বড়ই কষ্ট হয়”।
দাদা এই সময় সোফায় বসে পেপার পড়তে থাকেন। তিনি আমার বাবার কথা শুনে একটু গলা খাকাড়ি দিয়ে ওঠেন। আমার বাবা তখন চুপ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু কন্ঠে বলেন, “দাদার বয়স হয়েছে তো।
তাই মাঝে মাঝে গলা পরিষ্কার করেন”।
দাদা একথা শুনে আবার গলা খাকাড়ি দেন। বাবা হাসিমুখে দাদাকে মিনমিন করে জিজ্ঞেস করেন, “আব্বা কিছু লাগবে?”
দাদা পেপারের ফাক দিয়ে তাকিয়ে বলেন, “আমার নাতিরে কিছু কচ্ছো মনে হলো”।
বাবা মিউ মিউ করে বলেন, “না না বাবা। ওই একটু আদর করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বুঝাচ্ছিলাম”।
দাদা আবার পেপারে চোখ দিয়ে বলেন, “অনেক বলিছো। এখন সুন্দর করি অফিস যাও”।
আমার দাদার চোখে আমি হলাম প্রিন্স অফ পারসিয়া। আর আমার কাছে দাদা হলো জগতের সবচেয়ে তরতাজা মনের মানুষ। তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ আমার সাথে কম্পিউটারে গেমস খেলা।
প্রিয় গেমস কল অব ডিউটি। আমি বাজি ধরে বলতে পারি আমার দাদার মত এমন চমৎকার দাদা আর কারো নাই, নাই তো নাই।
আমার মা অত্যন্ত জাদরেল প্রকৃতির মহিলা ছিলেন বিয়ের আগে। শুনেছি আমার বাবা যখন আমার মাকে প্রথম প্রেমপত্র দিয়েছিলেন তখন মা বাবাকে ঝাড়ু নিয়ে তাড়া করেছিলেন। বাবা আর মা ছিলেন ক্লাসমেট।
আমার বোকা বাবা অবশ্যই মার প্রেমে পড়েছিলেন। আমার এটাই ভাবতে অবাক লাগে যে মা কিভাবে বাবার মত এমন বোকাসোকা মানুষকে বিয়ে করতে রাজি হলেন। দাদা অবশ্য কিছু কিছু বলেছেন। শুনেছি মা নাকি একদিন দাদাবাড়িতে এসে দাদাকে বাবার নামে বিচার দিয়ে গিয়েছিলেন। দাদা এরপর বাবাকে ডেকে বলেছিলেন, “বাবাজী তুমি জীবনে ভালো কোন কিছু তো করতে পারোনাই।
এই প্রথম একটা ভালো কাজ করছো। সাহস করে একটা তেজস্বী মেয়েকে পছন্দ করে ফেলেছো। মেয়ে আমার বেশ ভালো লাগছে। তোমার আম্মাকে নিয়ে কবে যাবো বলো?”
বাবা সেদিন আনন্দে বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে যান। এরপর দিন দাদা দাদী যেয়ে আমার মাকে আংটি পরিয়ে দিয়ে আসেন।
যেদিন মা প্রথম ঘরে আসেন সেদিন দাদী মাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুমি অনেক রাগী মা?”
মা মাথা নাড়লে দাদী মার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, “একটা কথা মনে রাখবা। আমার ছেলেটা হলো একটা সোনার টুকরা। সমস্যা একটাই তাকে বিশুদ্ধ করা হয়নাই। তোমার কাজ তাকে ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণ বানানো, পারবা?”
মা মাথা দুদিকে নেড়ে বলেছিলেন, “তা তো পারবোনা। সে অতীব বোকা।
আমি প্রথম বর্ষ থেকে তাকে পছন্দ করি। সে শেষ বর্ষে এসে এই কথাটা বুঝলো এবং প্রেমপত্র দিলো। এই ব্যাপারটা আগে বুঝলে কি হতো বলেন তো মা?একটু প্রেম করা যেত”।
দাদী মাকে জড়িয়ে ধরে সেকি হাসি। দাদী মাকে নিজের ছেলের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন, মা দাদীকে তার থেকেও বেশি ভালোবাসতেন।
দাদী মারা যাওয়ার পর মা তিনদিন মুখে কিছু দেন নাই। মা এরপর থেকে খুব ধার্মিক হয়ে উঠেন। দাদী প্রতিদিন সকালে কুরআন শরীফ পড়তেন। মাও পড়েন। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় দাদীই যেন সুর করে কুরআন শরীফ পড়ছেন।
মার সাথে সেই অসাধারণ শ্রুতিভাস্কর শব্দমালার পার্থক্য করতে পারিনা।
আমার বাবা মার বিয়ের পাচ বছর পর আমি জন্ম নেই। আমার ওজন খুব কম ছিলো জন্ম নেয়ার সময়। মাত্র দুই পাউন্ড। আর জন্মের প্রথম বছর আমি বিভিন্ন রোগে শোকে ভুগে মৃতপ্রায় হয়ে ছিলাম।
আমাদের আত্নীয়স্বজনরা বলতো, আমার আয়ু বেশি নাই। আমার বাবা মা এমন একদিন ছিলোনা যখন হুজুরদের কাছে ধন্না দেন নাই। আমার দাদী সারাদিন নামাজে বসে আমার জন্য প্রার্থনা করতেন। আমি মানুষ হয়েছি দাদার কোলে। দাদা আমাকে কোল ছাড়া করতেন না, কারো কোলে দিয়ে ভরসা পেতেন না।
রাতে আমাকে কোলে নিয়ে ঘুম পাড়াতেন, তারপর নিজে ঘুমাতেন।
দুনিয়ার সবার থেকে শ্রেষ্ঠ হলেন আমার মা। বেশিরভাগ মা বাচ্চাদের জোর করে দুধ নামের একটা অখাদ্য খাওয়ান। আমার মা কখনো এমন করতেন না। আমার অর্ধেক গ্লাস দুধ খাওয়া হলে আমি যখন কাদো কাদো চোখে মার দিকে তাকাতাম তখন মা বাকি অর্ধেকটা খেয়ে ফেলে বলতেন, “থাক বাবা অনেক খাইছো”।
মা কখনো আমাকে পড়াশোনা নিয়ে চাপ দেন নাই। আমি যেদিনই বলছি আজকে ক্লাসে যাবোনা। মা আমাকে নিয়ে সেদিন ক্যারাম খেলতেন, দাবা খেলতেন। আমার মার্কস খারাপ হলে মা কখনো কিছু বলতেন না। আমি জানি মার মতো এমন জাদরেল মহিলা আমার বেলায় এত নরম কেন।
আমার জন্মের পর ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন, আমার আর কোন ভাই বোন হবেনা। মার জন্য তাই আমি ছিলাম এক এবং একমাত্র প্রাণের টুকরা। শুধু মার জন্য না, সবার জন্য। পাঠক আশা করি বুঝতে পারছেন আমি সবার কত আদরের ছিলাম। আমাকে কেউ বকতে পারেনা, বাবা ট্রাই নেন কিন্তু দাদার ভয়ে কিছু বলতে পারেন না।
এবার নিতুর কথা বলি। নিতু হলো আমার কাজিন। আমার বড় চাচার মেয়ে। আমার বড় চাচা থাকেন কানাডায়, ওখানেই তারা পাকাপাকিভাবে বসবাস করেন। দুই তিনবছরে একবার আসেন।
নিতু আমার থেকে এক বছরের বড়, কিন্তু ও সাইজে অনেক ছোটখাটো। আমার অর্ধেক অনেকটা এমন। আমি নিতুকে গোপনে প্রচন্ড ভালোবাসি। নিতুর সব কথা আমি ডায়েরীতে লিখে রাখি। এই ব্যাপারটা আমি দাদা ছাড়া আর কাউকে বলিনাই।
মা অবশ্য মাঝে মাঝে সন্দেহ করেন নাই তা না। কিন্তু আমি যতটা সম্ভব লুকিয়ে রাখি।
নিতুকে ভালো লাগার সূচনাটা বলি। আমার তখন বয়স ৭-৮ বছর হবে। আমার চাচা তখন দেশে।
আমি একদিন নিতুর সাথে বসে টম এন্ড জেরী খেলছি। বাংলায় যাকে বলে, হাড্ডি ভাঙ্গা মারামারি। আমি একটু দুর্বল ছিলাম তো তাই খালি মার খেতাম। মার খেয়ে আম্মুর কাছে কাদতে কাদতে যেয়ে বলতাম, “আম্মু আমাকে ঘুটনী দিয়ে পিটাইছে”।
আম্মা আমাকে আদর করে মাথায় হাত বুলায় বলতেন, “এটা কোন ব্যাপার না বাবা।
তুমি যেয়ে ওকে একটা কিল মেরে আসো”।
আমি নীতুকে ভয় পেতাম বেশ, তাই কিল মারবো এই সাহস আমার ছিলোনা। এটা মাও জানতেন। যাই হোক সেদিনও এমন করেই মার খাচ্ছিলাম তখন মা চাচীকে বললো, “আপনার মেয়েটা ওর থেকে ছোট হলে দুজনকে বিয়ে দিয়ে দিতাম”।
আমি তখন নিতুর দিকে তাকালাম যেমন করে সেই সময় জাহিদ হাসান সুমি কায়সারের দিকে তাকাতো অথবা তৌকির আলী বিপাশা হায়াতের দিকে।
নিতু ভয় পেয়ে চাচীর কাছে যেয়ে বললো, “মা দেখো ও কেমন ছ্যাবলা ছ্যাবলা করে আমার দিকে তাকায়”।
এরপর থেকে আমি নিজেই নিতুর পিছ পিছ ঘুরতাম মার খাওয়ার জন্য। ও মার দিলে আমি মিষ্টি হাসি দিয়ে বলতাম, “আরেকটু মারো সখী”।
নিতু একসময় আমার হাবভাব দেখে ভয় পেয়ে যায়। আমার আর ওর হাতে মার খেতে হয়না।
সমস্যা হলো সেই মেয়ে আমাকে পাত্তাই দিতোনা। কিন্তু আমার মাথায় ছোটকালে মায়ের বলা কথাটার ভয়ংকর প্রভাব ফেলেছিলো। এখন ভার্সিটি পাশ করে ফেলবো প্রায়, বয়স অনেক হলো মনে হয়। নিতুর প্রতি আমার অনুভূতি আর বদলায়নি।
কাল নিতু বাংলাদেশ আসবে, শেষ দেখা হয়েছিলো প্রায় পাচ বছর আগে।
ও পড়াশোনার জন্য কানাডায় ওর খালার কাছে থেকে যেতো, দেশে আসতোনা চাচা চাচীর সাথে। শেষবার যখন ঢাকায় এসেছিলো তখন ও চশমা পড়তো। আমি তখন মাত্র এস.এস.সি পাশ করেছি। ও যখন এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় আসে ওর পরনে ছিলো সাদা একটা জামা। চোখে গোলাপী একটা ফ্রেম।
আমি ওর দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম। নিতু আমাকে সেবারও পাত্তা দেয়নি। কেন যেন আমার সাথে তেমন একটা কথা বলতোনা। এমন না যে সে চুপচাপ, কিন্তু ও শুধু মনে হয় আমাকেই ওভাবে গুরুত্ব দিতোনা।
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম।
সত্য কথা হলো আমি তো রাতে ঠিকমতো ঘুমাইনাই। চোখ লাল করে সুন্দর একটা টিশার্ট পরে ঘরে দরজা লাগিয়ে বসে থাকলাম। ঘর থেকে বের হতে ইচ্ছা করছিলোনা। কেন হচ্ছিলোনা তাও বুঝতে পারছিলাম না। নিতুকে দেখে কি বলবো? আমি কি একটু ভাব নিবো?ওকে দেখে না চেনার ভাব করলে কেমন হয়?
আমি হঠাৎ করে খুব অভিমানী হয়ে গেলাম।
আমি ওকে কত মেইল লিখেছি, ও কখনো আমার মেইলের রিপ্লাই করেনি। ইয়াপ, নপ এমন দু একটা শব্দ দিয়ে কখনো কখনো এক দুটা উত্তর পেয়েছি। আমি ঠিক করলাম আমি নিজে থেকে ওর সাথে কথা বলবোনা। দেখাও করবোনা। আজকে ভেবেছিলাম ভার্সিটিতে যাবোনা, কিন্তু এখন ঠিক করলাম আমি যাবো।
অবশ্যই যাবো। ওর জন্য এভাবে ছাগলের মত অপেক্ষা করার দরকার নাই।
রুম থেকে বের হয়ে মার কাছে ভাড়া নিতে গেলাম ভার্সিটি যাওয়ার। দরজা দিয়ে যখন বের হবো তখন খুব ভয়ংকর একটা ব্যাপার হলো। নিতু আমাদের ড্রইং রুমের সোফায় বসে আছে।
ওরা কি তাহলে রাতেই এসে পড়েছিলো? আমার চাচা চাচীর কন্ঠ পেলাম দাদার ঘর থেকে। আমি মনের অজান্তেই চোখ বন্ধ করে নিতুকে বললাম, “কখন আসলে?”
নিতু আমার এমন উদ্ভট অবস্থা দেখে সোফা থেকে উঠে মার রুমে যেতে যেতে বললো, “এট নাইট। সি ইউ”।
আমি ঢোক গিলতে গিলতে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। সারা রাস্তা আমি চুপ করে একটা কথাই ভাবছিলাম, নিতুকে দেখলে এমন লাগে কেন? আমি অনেক আগেই একটা ব্যাপার বুঝে গিয়েছিলাম যে ওর সাথে আমার সম্ভব না।
আমার মত ঢিলা টাইপ ছেলে এত সুন্দর একটা পরীর সাথে মানায়না। আজকে যখন ওকে দেখলাম তখন বুকের মধ্যে বিশাল একটা ধাক্কা খেয়েছি। আমি জানিনা সবার সাথে এমন হয় কিনা। কিছু কিছু সময় অনেক পুরনো স্মৃতি মানুষের মাথায় এক সাথে জেগে ওঠে। আমার সাথে তেমনটাই হয়েছিল।
ওইযে ওকে প্রথম ভালো লাগার অনুভূতিগুলো, তা আমার ভেতরে এখনও জেগে আছে। সেই একই রকম অনুভূতি, ভালো লাগার উত্তাপ। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্য কিছু ভাবার চেষ্টা করলাম। পারলাম না।
এক সপ্তাহ কেটে গেলো।
নিতুর সাথে টুকটাক যে কথা হয়নি তা না। একদিন বেশ অনেকক্ষণ গল্প হলো। গল্পের মাঝে নিতু একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করলো, “ইশতি তুমি কি আমার ওপর ক্রাশ করছো?”
আমি তখন কম্পিউটারে একটা প্রেজেন্টেশন বানাচ্ছিলাম। সেটা বন্ধ করে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, “এমন কথা বললা কেন?”
নিতু চোখ থেকে চশমা খুলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, “এটা তো বোঝাই যায়। আমি খুব অবাক হয়েছি এটা বুঝে , ইউ নো!”
আমি ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললাম, “এমন কোন ব্যাপার নাই।
আমার তোমাকে অনেক ভালো লাগে। এই আর কিছু না”।
নিতু হেসে দিলো। আমাকে বললো, “কেন ভালো লাগে?”
আমি ওর পাশে যেয়ে সাহস করে বসলাম। কিভাবে যেন সাহসটা হয়ে গেলো।
নিতু একটু সরে বসলো এবং ওকে দেখেই বুঝলাম ও খুব অবাক হয়েছে আমি এত কাছে বসাতে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, “তুমি অনেক সুন্দর তো তাই। এত সুন্দর একটা মানুষকে কে পছন্দ করবেনা বলো?”
নিতু গম্ভীর হয়ে বললো, “ঘটনা খারাপ। ক্রাশ খেয়েছো বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাপার না।
তোমার জন্য একটা সুন্দর মেয়ে খুজে বিয়ে দিয়ে দিবো। আমার থেকেও সুন্দর”।
আমি বললাম, “আচ্ছা দিও”।
নিতু আমার কম্পিউটারে যেয়ে বসে বললো, “তোমাকে একজনের ছবি দেখাই ফেসবুকে। যার ছবি দেখাবো তার নাম সাদিক রায়হান।
ছেলেটা আমাকে জানো পাত্তাই দেয়না”।
আমি নিতুর পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসে বললাম, “বোকা ছেলে তাই পাত্তা দেয়না। তোমাকে হয়তো সেভাবে দেখেনাই”।
সাদিক রায়হান ছেলেটাকে দেখলাম। বিশাল হ্যান্ডসাম একটা ছেলে।
নিতুর প্রোফাইলে সাদিক সাহেবের সাথে ওর একটা হিডেন এলবাম ছিলো যেটা আমি আগে দেখিনি। সেখানে ওদের বেশ অনেকগুলো ছবি। আমি খুব মনোযোগ দিয়ে ছবিগুলো দেখলাম। নিতুকে জিজ্ঞেস করলাম, “ছেলেটা তোমার বয়ফ্রেন্ড?”
নিতু স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে বললো, “হা। ওয়ান এন্ড অনলি।
আসলে ছিলো, এখন ও আর আমাকে পাত্তাই দেয়না”।
আমি নিতুর চোখে পানি দেখলাম। ও কি বলছে আমি শুনতে পারছিলাম না। আমি ওর চোখের পানির দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার মনে হলো আমার আশেপাশে সব কিছু ঘুরছে।
নিতু আমাকে বললো, “আমি ওকে আমার সব কিছু দিয়েছি। আমি তাকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছি, একটাসময় ও যে আমার কত্ত কেয়ার করতো। এখন ফোন করলেও বিরক্ত হয়। আমি দেখতে ভালো না তাই না?অনেক বিরক্তকর?”
নিতু আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে মনে হলো অবাক হলো। কারণ তখন আমার চোখে পানি টলমল করছে।
আমাকে বললো, “কাদছো কেন ইশতি?”
আমি ওর থেকে চোখ সরিয়ে বললাম, “তোমার চোখে পানি দেখে না খুব কষ্ট হলো। আমি কখনো ভাবিনাই এমন কিছু দেখবো। আমি কি তোমার কোন উপকার করতে পারি নিতু?”
নিতু আমার নাকে একটা গুতো দিয়ে বললো, “সাদিকের আগেও আমার দুটো বয়ফ্রেন্ড ছিলো। আমি অনেক খারাপ মেয়ে বুঝেছো?”
আমি মাথা নেড়ে বললাম, “বুঝিনি। বুঝাতে পারবেও না।
তুমি শুধু আর কখনো এভাবে কেদোনা, ঠিক আছে?”
নিতু শীষ বাজিয়ে বললো, “ভয়ংকর। তুমি তো সত্যি সত্যি ক্রাশ খাইছো। আমি যাই, যাই যাই”।
নিতু সেদিন চলে যাওয়ার পর আমি অনেকক্ষণ ঝিম ধরে বসে ছিলাম। সারারাত ঘুমাতেও পারিনাই।
মাথায় তখন শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে, নিতুর চোখে পানি।
নিতু চলে যাওয়ার দুদিন আগে খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো, অনেক বৃষ্টি। আ্মি ছাদে যেয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিলাম। রাত তখন দুটা বাজে। শীতকালে কেন বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করছিলো আমি জানিনা।
কিন্তু মনটা ভালো ছিলোনা, একদম না। মাঝে মাঝে মনকে ঠান্ডা করার জন্য বৃষ্টির থেকে বড় ওষুধ কিছু নাই আর। আমার মন ঠান্ডা হওয়ার আগে আমি নিচে নেমে এলাম। ঘরে ঢুকে দেখি নিতু ড্রইংরুমের সোফায় শুয়ে আছে। আমি ওর পাশে যেয়ে বসতেই ও বললো, “মনটা ভালো না ইশতি বুঝছো।
ভাবছি একগাদা ঘুমের ওষুধ খাবো”।
আমি ওর পাশের আরেকটা সোফায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়েলাম। তারপর বললাম, “আমাকে একটা কথা বলবা নিতু?”
নিতু বললো, “বলো কি?”
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে ভাবতে লাগলাম ওকে কোন কথাটা জিজ্ঞেস করার আছে। আমি জানি আমার ওকে কিছু বলার আছে। কিন্তু কি সেটা জানিনা।
একটা সময় বললাম, “আমি যে তোমাকে আসলেও পছন্দ করি এটা তুমি জানো তাই না?আমাকে এভাবে ইগনোর করো কেন জানতে পারি?”
নিতু ঘুমজড়ানো গলায় বললো, “ইগনোর করি কিনা জানিনা। কিন্তু ব্যাপারটা কেমন যেন অদ্ভুত লাগে। তুমি আমার থেকে বয়সে ছোট। আর তাছাড়া তোমাকে আসলে ওইভাবে ভাবতে কেমন যেন লাগে। তুমি আমার টাইপ না”।
আমি উঠে চলে গেলাম। আমি জানতাম এমনই কঠিন কোন উত্তর আমাকে শুনতে হবে। আসলে ভুলটা আমারই। কেন শুধু শুধু জিজ্ঞেস করতে গেলাম। নিজের ঘরে যেয়ে ঘুমুতে চেষ্টা করলাম।
ঘুম আসছেনা, একদম না। একসময় উঠে বসলাম। আমি আবার ড্রইংরুমে ফিরে গেলাম। নিতু তখন সোফা থেকে উঠে বসে নিজের ঘরে ঘুমুতে যাবে। আমি ওর হাত ধরলাম।
ওকে বললাম, “আচ্ছা আমার একটু কথা শুনবে”।
আমি অন্ধকারেও নিতুর চোখে খুব ভয় দেখলাম। হাত না ছেড়ে বললাম, “আমি তোমাকে যখন থেকে জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে তখন থেকে চাই জানো? তুমি আমাকে কখনো চাওনাই জানি, তবুও তোমাকে কেমন যেন অনেক আপন লাগে। আমি প্রতিটা রাতে যখন ঘুমুতে যাই তখন তোমার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমাই। তুমি আমাকে ছোট্টকালে একটা লাল রঙের গাড়ি দিছিলা, একটা আধখাওয়া চকোলেট দিছিলা, একটা চৌম্বক দিছিলা।
সব আমি আমার ড্রয়ারে গুছায় রাখছি। আসো দেখবা”।
আমি নিতুকে টেনে নিয়ে গেলাম নিজের ঘরে। নিতুকে সব দেখালাম। তারপর বললাম, “তোমার ছোট্টকালে যে লাল জামাটা হারিয়ে গিয়েছিলো সেই জামাটা আমি আসলে লুকিয়ে রাখছিলাম।
আমার যখন তোমাকে অনেক মনে পড়ে তখন এই জামাটার গন্ধ নেই। আমি তোমাকে একজন মানুষ হিসেবে অনেক চাই জানো। তুমি আমাকে কখনো পাত্তা দাওনাই বুঝতে পারতাম। কিন্তু আমার তোমাকে এই কথাগুলো বলা দরকার ছিলো। আমাকে যদি কেউ এভাবে চাইতো তাহলে আমি নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান ভাবতাম।
তুমি কেন এত্ত ভেঙ্গে পড়ছো জানিনা। একজন তোমাকে ধোকা দিয়েছে তো কি হয়েছে। তোমার সামনে ইয়া বিশাল একটা জীবন পড়ে আছে। আর কখনো এমন হতাশ হবেনা, ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কথা বলবেনা। ঠিক আছে?”।
নিতু হা করে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে। আমি ওর হাত ছেড়ে দিয়ে আবারো বললাম, “আমি তোমাকে অনেক চাই এটা তোমাকে বলার দরকার ছিলোনা। কখনোই ছিলোনা। আজকে খুব অসহায় লাগছিলো তোমার কথা শুনে, এই জন্য এই কথাগুলো বললাম। কিছু মনে করোনা।
আমি তোমার সাথে এই জীবনে আর কথা বলবোনা। যাও প্লিজ”।
আমি নিতুকে বাহিরে বের করে দরজা আটকিয়ে দিলাম।
পরের দিন আমি খুব ভোরে ভার্সিটির জন্য বের হয়ে যাই। ক্লাস সকাল দশটায়, আমি ক্যাফেটরিয়াতে যেয়ে বসলাম ৭টা ১৬ মিনিটে।
ফয়সাল ওরফে ফসুকে দেখলাম ক্যাফেটরিয়ায় বসে কফি খাচ্ছে। আমাকে দেখে এগিয়ে এসে বললো, “আজকে খুব ইউরোপিয়ান হতে মন চাইলো বুচ্ছিস। তাই একটু কফি খাইতাছি আর কি”।
আমি চোখ লাল করে বললাম, “সামনে থেকে যা। মেজাজ খারাপ আছে।
আমার ডিভিডি গুলা দিয়ে যা”।
ফসু হাই তুলতে তুলতে বললো, “পরে পাবি। নেক্সট ইয়ার। আমি মুভি আস্তে আস্তে দেখি”।
ফসু আমার পাশে বসে বিতলা হাসি দিয়ে বললো, “কি হইছে দোস্ত? তোর কাজিন কি ছ্যাকা দিছে আবার?”
আমি ফসুর পেটে একটা ঘুষি দিয়ে বললাম, “আমি তোর মত লুইস চৌধুরী না যে প্রতিদিন ছ্যাকা খাই”।
ফসু পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বললো, “আমিও তোর মত মদনা না যে একই মেয়ের কাছে প্রতিদিন দুইবার করে ছ্যাকা খাই”।
আমি হালকা নাস্তা করে উঠে গেলাম। ভার্সিটিতে ক্লাস শেষ করে বাসায় না ফিরে ফসুর বাসায় চলে গেলাম। তাকে বেদম মার দিয়ে আমার থেকে এই জীবনে যত ডিভিডি সে চুরি করেছিলো অথবা মারামারি করে নিয়ে আসছিলো সব আদায় করলাম। সন্ধ্যা যখন হয় হয় তখন ওকে বললাম, “দোস্ত আজকে তোর বাসায় থাকবো ভাবতেছি।
রাতে ভালো খাবার রান্না করিস”।
ফসু গরম হয়ে বললো, “তুই কি আমার দুলাভাই নাকি? ছোট মাছের মাথা দিয়ে কাটাযুক্ত ভর্তা আছে, ওইটা খেয়ে বাসায় দৌড় দিবি। ব্যাটা ছাকা খেয়ে রাগ করে বন্ধুর বাসায় আশ্রয় চাস, লজ্জা করেনা?”
আমি হাসিমুখে বললাম,” আচ্ছা ঠিক আছে চলে যাবোরে বাপ। এখন একটু শান্তিতে থাকতে দে”।
ফসু রুম থেকে বের হয়ে আন্টির কাছে রান্নাবান্নার কথা বলতে লাগলো।
আজকে বেশ ভালো ফিস্ট হবে বুঝতে পারছি। কিন্তু আমার আসলে বাসায় যেতে ইচ্ছা করছিলোনা, পালিয়ে থাকতে খুব ইচ্ছা হচ্ছে। মোবাইল বন্ধ করে রেখেছি যেন কেউ ফোন করতে না পারে।
রাত এগারোটা বাজে সিদ্ধান্ত বদল করলাম। মা বাবা, দাদার কথা ভাবছিলাম।
উনারা হয়তো অনেক চিন্তা করছেন। একটা সি.এন.জি নিয়ে বাসায় পৌছালাম। বাসার সামনে যেয়ে দেখি আমার দাদা গলির মাথায় হাটছে। আম্মা গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি বেশ লজ্জিত ভঙ্গিতে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম, “রাস্তায় বিশাল জ্যাম বুঝছো।
আমি একটা বন্ধুর বাসা থেকে ব্যাক করতে করতে অনেক দেরী হয়ে গেলো”।
আম্মা আমাকে দেখে প্রায় ফিট হয়ে গেলো। আমার দাদা আর আমি মিলে আম্মাকে টেনেটুনে ঘরে নিয়ে আসলাম। দাদা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, “দাদু মার সাথে কখনো মিথ্যা বলবানা। আর কখনো এমন রাত করে ঘরে আসবানা।
তুমি ছাড়া আমাদের কে আছে বলো?তোমার এই শুকনা পাতলা দেহে কত্তগুলা মানুষের জান লুকায় আছে জানো?”
দাদা এরপর বাবাকে ফোন করলেন। বাবা তখন বাহিরে আমাকে খুজছিলেন। ঘরে এসে বাবা আমাকে দেখে প্রায় কেদে ফেলার ভঙ্গি করলেন। আমি কখনো বাবাকে এমন ভেঙ্গে পড়তে দেখিনাই। নিজেও অবশ্য এমন গাধার মত কখনো কিছু করিনি।
বাবার চোখ টকটকে লাল। তার উপর দিয়ে যে বিশাল ঝড় গেছে এটা বুঝতে পারলাম। আমাকে জড়ায় ধরে বললেন, “আব্বা তুমি আর এমন করোনা। আমি আজকে আরেকটু হলে হার্ট এটাক করতাম”।
আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম এমন আর কখনো করবোনা।
যার থেকে লুকানোর জন্য এই কাজগুলো করলাম সে তখন আম্মুর ঘরে বসে তার পাশে বসে ছিলো হাত ধরে। আমি আমার ঘরে যখন ফিরে যাই তখন একটা সময় সে আমার ঘরে আসলো। আমার বিছানায় বসে চুপ করে ছিলো। আমি নিজেই তাকে বললাম, “কিছু বলবা?”
নিতু আমার পাশে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত কাজটা করলো। আমাকে ভয়ংকর একটা চড় মারলো।
তারপর বললো, “এই চড়টা কালকে যে আচরণ করছো তার জন্য না। আজকে যেটা করছো তার জন্য”।
আমি আমার গালে হাত দিয়ে ছিলাম যেখানে ও চড় মারল। চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো। নিতু নামের এই মানুষটাকে সেই কতকাল থেকে চেয়েছি, আমার সবগুলো অস্তিত্ব দিয়ে ভালোবেসেছি।
আমাকে সে কখনো চায়নি, তবুও তাকে আমি নিজের সব আবেগ দিয়ে চেয়েছি। কাল সে চলে যাবে, আর হয়তো কখনো দেখা হবেনা। এটা ভাবতেই বুকের ভিতর একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো। আমি পাগলের মত ওর হাত ধরলাম। ওকে বললাম, “নিতু আমাকে আরো দশটা চড় মারো, কিন্তু তুমি যেওনা।
কোথাও যেওনা। বিশ্বাস করো, আমার থেকে বেশি তোমাকে কেউ কখনো চায়নি, কেউ চাইতেও পারবেনা। তুমি কখনো কারো জন্য না, কখনো কারো জন্য ছিলেনা। কক্ষনো না”।
নিতু আমার থেকে হাত ছাড়িয়ে দৌড় দিলো।
আমি ঠিক সেভাবেই বসে রইলাম। নড়তে পারছিলাম না। আমার ভিতরে সেসময় ভয়ংকর ঝড়। ভাবছিলাম এমন হলো কেন সবকিছু। একটা সময় আমি বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম।
আমার আত্নাটা তখন খুব ক্লান্ত, তাকে বিশ্রাম দেয়া প্রয়োজন।
অনেক রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি নিতুর নিঃশ্বাসের আওয়াজ পেলাম। ও আমার পাশে শুয়ে খুব কাদছে। আমাকে জেগে উঠতে দেখে ও আমার কাধে হাত দিয়ে বললো, “আমাকে কেন এত চাও?আমি তোমাকে সবসময় ইগনোর করেছি, তাও কেন এত চাও?এমন ভয়ংকরভাবে আমার ভেতরে তাকাও কেন?”
আমি কিছুই বলার সাহস পাচ্ছিলাম না।
আমি চোখ বন্ধ করে ওর প্রশ্বাসের গন্ধ নিচ্ছিলাম। ও আমাকে কাদতে কাদতে বললো, “আমি ভালো না তোমার মত। আমাকে অনেকে ছুয়েছে”।
আমি ওর হাত ধরে বললাম, “কেউ ছোয়নি। তুমি, তোমার আত্না সবসময় আমার কাছে ছিলো বিশ্বাস করো।
কেউ কেমন করে তোমাকে ছোবে?”
নিতু আমার আরো কাছে এসে বললো, “আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেনা কথা দাও। কোনদিন আমাকে ঘৃণা করবেনা বলো”।
আমি ওর কানে কানে বললাম, “নিজেকে কেমন করে ঘৃণা করে বলো? তোমাকে আমি রাখবো চোখের পাতায়। প্রতিটা পলকে শুধু তোমাকে দেখবো। একজন শুধু তোমাকে”।
***************************************************************
একটা খুব সাধারণ গল্প। সবার অতি পরিচিত চিরন্তন আলাভু টাইপ গল্প। কিন্তু কাল গল্পটা খুব মনে ধরেছিলো। আমি হয়তো একজনকে জানতাম যে এমন করেই আরেকজনকে চাইতো। আর কেউ যদি কাউকে এমন করেই চায় তাহলে গল্পটা সেই তাদেরও জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।