অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথপানে চেয়ে বসে আছি
এম এ জলিল ওরফে অনন্ত। হলিউড-বলিউড ছাড়িয়ে যার জনপ্রিয়তার ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে আমাদের এই বাংলাদেশেও। পর পর তিনটি ব্লকবাস্টার ছবি উপহার দিয়ে যিনি ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, হুমু এরশাদ বা ডঃ ইউনূস কে টেক্কা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন এদেশের মানুষের মনের শীর্ষস্থান। আমার এই কথায় যদি আপনাদের কারও কোন দ্বিমত থাকে, তাহলে শুধু একটি প্রশ্নের জবাব দিনঃ হাসিনা, খালেদা বা এরশাদ সারাদিন স্টার সিনেপ্লেক্সে নাচতে থাকলে কয়টা মানুষ ২০০/২৫০টাকা দিয়ে তা দেখতে যাবে বলুন তো? আমার তো মনে হয় একটা কুত্তা বিলাইও যাবে না। কিন্তু গুরুর সিনেমা হলে আসার পর থেকে গত ২সপ্তাহ যাবত সব কয়টা হলের সব কয়টা শো হাউসফুল! কী বুঝলেন???
অন্যান্য সকল মহামানবের মত এম এ জলিল ওরফে অনন্ত সাহেবেরও পছন্দের শীর্ষে রয়েছে দৈনিক আইইউটি।
তাইতো তার সাম্প্রতিকতম সিনেমা “দ্য স্পীডঃ ডু অর ডাই” এবং ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি খোলামেলা আলোচনা করেছেন দৈনিক আইইউটির সাথে। পাঠকদের জন্য অনন্তর এই সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলোঃ
দৈনিক আইইউটিঃ কেমন আছেন স্যার?
অনন্তঃ আম ফাইন। হাউ ইয়ু?
দৈনিক আইইউটিঃ আম ফাইন মানে কি আপনার গাছে ফাইন ল্যাংড়া আম ধরেছে?
অনন্তঃ হা হা হা! চো পানি! আম ফাইন মানে আমি ভালো আছি।
দৈনিক আইইউটিঃ আপনার সাম্প্রতিক ছবি “দ্য স্পীড” প্রথম দুই সপ্তাহেই ঢালিউড হলিউড বলিউড থেকে শুরু করে মংগলিউড (মঙ্গল গ্রহের সিনেমা জগৎ), সবখানেই বক্স অফিস কাঁপিয়ে ফেলছে। এটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
অনন্তঃ আপনার কি মনে হয় না এটা না হওয়াটাই অস্বাভাবিক কিছু ছিল? মানুষ সব সিনেমায় ৩টা জিনিস চায়- এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট।
আমার সিনেমায় এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাভোগেড্রো সংখ্যার (৬.০২৩x১০^২৩) চেয়েও বেশিবার আছে। তাছাড়া আমার মতে শুধু আমাকে দেখার জন্যই সবাই অন্তত একবার এই সিনেমা দেখতে যাবে। কেননা আমার আছে সালমান খানের মত মাচ্যল, হৃত্বিক রোশনের মত এশটাইলিষ অ্যাটুচুড, অমিতাভ বচ্চনের মত নেসারাল অ্যাখটিং, আয়েশা টাকিয়ার মত নেসারাল…..
দৈনিক আইইউটিঃ থাক থাক স্যার। আর বলতে হবে না। সমঝদার কে লিয়ে ইশারাই কাফি হে।
তো বাংলাদেশে এত বিজনেস থাকতে আপনি চলচ্চিত্রে কেন বিনিয়োগ করছেন?
অনন্তঃ হো হো হো মাই প্রেণ্ড, ইয়ু আর চো পানি! আমাদের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা রিজেক্ট মাল কি করে? বংগবাজার, নিউ মার্কেট অথবা এক্সটেসিতে বেইচা দেয়। আপনারা জানেন, আমার লিপস্টিক, আন্ডার গার্মেন্টস, ডায়াপার এবং সোনো পাউডারের বিজনেস আছে। এখন এইসব ফ্যাক্টরিতে যখন কিছু রিজেক্ট হয়, ওগুলো আমি বাইরে বিক্রি করে না দিয়ে নিজেই ইউজ করি, যেন লস না হয়। এজন্যই আমি আমার সব সিনেমায় আমার নিজের ফ্যাক্টরীর লিপস্টিক মারি, স্যান্ডো-জাইঙ্গা পরি, সারা মুখে পাউডার মারি, আর দর্শকদের ফ্রী ডায়পার দেই!
দৈনিক আইইউটিঃ দর্শকদের ডায়াপার দেওয়ার ব্যাপারটা বুঝলাম না। কাইন্ডলি একটু ভেঙ্গে বলবেন?
অনন্তঃ ও মাই প্রেন্ড, ইয়ু আর নট এ গুদ আন্ডারইষট্যান্ডার।
আমার সিনেমা দেখে শুনেছি অনেকেই হাসতে হাসতে প্যান্ট ভিজায়া ফেলে। তাই হলে ঢোকার সময় সবাইকে একটা করে ডায়াপার দিয়ে দেই, যেন সিনেমার মাঝে তাদের টয়লেটে যেতে না হয়।
দৈনিক আইইউটিঃ আপনার সব ছবিতেই বিদেশীদের ছোঁয়া থাকে। এর কারণটা বলবেন?
অনন্তঃ বেরী ঘুড খশ্চান! আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, আমার সব সিনেমার অর্ধেকের বেশি অংশ বিদেশে শ্যুটিং হয়। তাছাড়াও আমার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ইতালীর নিনো আর মালয়েশিয়ার পারভীন।
তারা কিন্তু টম ক্রুজ বা ক্যামেরন ডিয়াজের সমপর্যায়ের শিল্পী। ভেবে দেখুন, টম ক্রুজ বা ক্যামেরন ডিয়াজ যেমন কখনো অস্কার পায় নি, তেমনি এরা দুজনও কখনো পায় নি। তাহলে পার্থক্য কোথায়, বলেন তো?
দৈনিক আইইউটিঃ আপনার সিনেমায় সবসময় আপনিই নায়ক থাকেন কেন?
অনন্তঃ ও মাই গট! চো চিলি খুএশছেন!! বাংলাদেশে তো আমিই সর্বপ্রথম নায়ক। আপনারাই বলেন, কিসের বিচারে শাকিব খান, ইমন, নীরব, রুবেল, জসিম, মান্না, ওমর সানি- এদের আপনারা নায়ক বলবেন? আমার বাসার দারোয়ানগুলাও এদের চেয়ে অনেক চমার্ট। আমি সবসময়ই ফীল করতাম, এদেশের তরুণীরা নায়কের অভাবে ভিনদেশের শক্তি কাপুর, নানা পাটেকার আর গোবিন্দর প্রেমে হাবুডুবু খায়।
তাই মূলত এদেশের নারী সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতেই আমি সবসময় নায়কের ভূমিকায় থাকি।
দৈনিক আইইউটিঃ চলচ্চিত্র নির্মাণে আপনার এত আগ্রহ কেন?
অনন্তঃ দেখুন, পৃথিবীর চলচ্চিত্রের বিবর্তনকে আমি এভাবে দেখাতে চাই—গডফাদার> দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন> টার্মিনেটর> ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে> দ্য ম্যাট্রিক্স> ট্রান্সফর্মার্স> অ্যাভাটার> মাচেত্তে। এরপর হঠাৎ করেই পৃথিবীতে চলচ্চিত্রের অগ্রযাত্রা থেমে গেছে। একটি গতিশীল মাধ্যম কে এভাবে মরে যেতে দেখে আমার হৃদয় কেঁদে উঠেছে। সমগ্র পৃথিবীকে এই ভয়ঙ্কর দুঃসময় থেকে মুক্তি দিতেই আমার চলচ্চিত্রে আসা।
দৈনিক আইইউটিঃ আচ্ছা, এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু বলুন।
অনন্তঃ ব্যক্তিগত জীবনে আমি একজন সমকামী। সমকামী বলতে আমি বুঝাতে চাচ্ছি সমসাময়িক সবার মত আমিও কামনা করি যেন চলচ্চিত্রে সুদিন ফিরে আসে। তাই তো একের পর এক উড়াধুড়া ছবি বানাচ্ছি।
আসলে ব্যক্তিগত-পেশাদারী সব জীবনেই আমার ধ্যান জ্ঞান একটাই- সিনেমা, সিনেমা এবং সিনেমা।
দৈনিক আইইউটিঃ আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
অনন্তঃ আমি আইইউটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই।
দৈনিক আইইউটিঃ এত কিছু থাকতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন স্যার?
অনন্তঃ দেখুন, প্রায় সময়ই আমার ছবির সেটগুলো আমার লোড নিতে না পেরে ভেঙ্গে পড়ে। এছাড়াও এফডিসির একটা বিল্ডিং আমার ড্যান্সের শটের সময় কাত হয়ে পিসার হ্যালানো টাওয়ারের মত হয়ে গেছে। তাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে আমি নিজের ফিল্মের সেট নিজেই বানাতে চাই।
আর আইইউটিতে পড়তে চাই, কারণ আমি সবকিছুতেই আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে চাই। তাছাড়া আইইউটি ক্যাফেটেরিয়ার সুস্বাদু খাবার আমার সুডৌল দেহকে আরও চকচকে করে তুলবে।
দৈনিক আইইউটিঃ আমাদের পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
অনন্তঃ আমি রোমিও, আপনারা সবাই জুলিয়েট। প্রেম করিতে আপনারা কেউ করবেন না লেট।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।