আমি সরকারি দল আজকাল যুদ্ধের পন্থা হিসেবে প্রচলিত অস্ত্র-শস্ত্রের যুদ্ধের চেয়েও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের হাতিয়ারগুলো চিন্তাগত ও সাংস্কৃতিক। মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বলতে শত্রুপক্ষের মানুষের চিন্তাধারা, সংস্কৃতি, নীতিমালা, রাজনীতি, অনুভূতি, ঝোঁক-প্রবণতা ও আচরণকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে প্রচারণা এবং এ সংক্রান্ত মাধ্যমগুলোর যথাযথ ও সুপরিকল্পিত ব্যবহারকে বোঝায়।
অন্য কথায় কোনো সমাজ বা জাতিকে টার্গেট করে সেই সমাজ বা জাতির ওপর মনস্তাত্ত্বিক ও গণমাধ্যমের প্রচারণাগত প্রভাব ফেলে কোনো যুদ্ধ ও বল প্রয়োগ ছাড়াই ওই সমাজ বা জাতিকে নতজানু বা পরাজিত করাই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের উদ্দেশ্য। মিডিয়ার লড়াই, মনস্তাত্ত্বিক হামলা, শ্বেত যুদ্ধ বা প্রচার যুদ্ধ ইত্যাদি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধেরই কিছু ভিন্ন নাম।
মানুষের চিন্তাধারার ওপর প্রভাব ফেলার বিচিত্রময় মাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রচারণা ও যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমান যুগে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, এসব হাতিয়ার দিয়ে সমাজের চিন্তাধারার ওপর হামলা কেন্দ্রীভূত করা যায়। মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের হোতারা এসব হাতিয়ার ব্যবহার করেই স্থানীয় সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও মূল্যবোধগুলোকে কোনঠাসা করে নিজস্ব চিন্তাধারা ও বিশ্বাসকে স্থানীয়দের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বেশ জটিল ও সর্পিল। মারপ্যাচে পরিপূর্ণ এ যুদ্ধের সূচনা থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধান অস্ত্র কেবল যোগাযোগ মাধ্যম।
প্রত্যেক মিডিয়া বা যোগাযোগ মাধ্যমের রয়েছে নিজস্ব প্রভাবক ক্ষমতা। ওই ক্ষমতাগুলোর আলোকেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে বিশেষ ধরণের মিডিয়ার রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।
মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ মোকাবেলা আধুনিক বা বর্তমান যুগে যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
প্রচলিত যুদ্ধের বিপরীতে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে মানুষের মন-মগজের ওপর প্রভাব ফেলাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। "২০১৫ সাল নাগাদ বিশ্বের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ ওয়ারলেসের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করবে।
আর এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো প্রধান ভূমিকা রাখবে। " বর্তমানে সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকের গ্রাহক সংখ্যা ৫০ কোটি। বছরে এ নেটওয়ার্কের আয় ১১০ কোটি ডলার। টুইটারের গ্রাহক সংখ্যা ১৬ কোটি। শতকরা ৮৯ ভাগ গ্রাহক তাদের সঠিক নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে এইসব নেটওয়ার্কের সদস্য হচ্ছে এবং এই মিডিয়াগুলা গুপ্তচরবৃত্তির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।