আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিলারির ফেইসবুক কুটনীতিতে ডিজিটাল বাংলাদেশের মুখে চুনকালি - দীপু আশারাফ করে ছাগলামি ...

Digital Bangladesh Warriors - fb.com/openbd ৬ মে হিলারির A Conversation with Bangladesh: নামের এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গিয়ে চার দিনের মাথায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ১০ মে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনিকে সামনে রেখেই বলেন, "হিলারির টাউন হল স্টাইলে অনুষ্ঠান করলেন। " "তথাকথিত ইয়াংদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। কলকাতায়ও একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। তারা ২/৪ দিন আগে থেকে অনুষ্ঠানটির বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। আর বাংলাদেশে অনুষ্ঠানটি হওয়ার দিনও আমরা জানতাম না।

অথচ ঢাকায় অবস্থিত মার্কীনদূতাবাস হিলারি ক্লিন্টন আসার দশদিন আগে থেকে হিলারির বাংলাদেশ সফরে বিষয়ে সবাইকে পাবলিকলি আপডেট রেখেছে। আপনি হিলারিকে ব্রেকফার্স্টে লাঞ্চে ডিনারে কি বাংলা খাবার খাওয়াতে চান সেই প্রশ্নও পাবলিকলি করেছে দূতাবাস, আর তরুনদের সাথে আড্ডার ঐ অনুষ্ঠনটির জন্য দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে, অনেকে ফেইসবুকে আগেই তার প্রশ্নটিও করে রেখেছে। অনুষ্ঠান থেকে ফেইসবুকে করা প্রশ্নেরও লাইভ উত্তর দেয়া হয়েছে আর আমাদের মন্ত্রীমিনিস্টাররা বলছে হিলারির "এ্যা কনভার্সেশন উইথ বাংলাদেশ" অনুষ্ঠানটির কথা জেনেছেন হিলারি কোলকাতা থেকে যাওয়ারও একদিন পরে। এক কথায় এত ব্যাকডেটেড আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালায় ও রাষ্ট্র পরিচালনা, জাতীর জন্য সত্যতিই অতি ভয়ংকর, বিপদজনক ! গত ৬ মে, ২০১২ সকাল ১১:০০টায় এটিএন নিউজের তত্ত্বাবধানে, মুন্নি সাহার সঞ্চালনায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন সোসাইটির হাজার খানেক তরুনতরুনি পূর্ন এক হলরুমে, A Conversation with Bangladesh নামে একটি লাইভ অনুষ্ঠানে যোগদিয়ে সেদিনই দুপুরে হিলারি কোলকাতায় চলে যান। এই অনুষ্ঠানের খবর আমার মত দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাস করা সাধারনও কয়েকদিন আগেই জানতো।

মূলত হিলারি ক্লিন্টনের বাংলাদেশ সফরের পুরো বিষয়টি ঢাকায় অবস্থিত মার্কীনদূতাবাস তাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে নিয়মিত প্রচার করে। হিলারির আসার এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু করে হিলারি যেকয় ঘন্টা বাংলাদেশে অবস্থান করেন, তার প্রতিটি মুহুর্ত, প্রতিটি ইভেন্ট ফেইসবুক পেইজে আপডেট পেয়েছি ঐ পেইজে। হিলারি বাংলাদেশে এলে তাকে আপনি কি বাংলা খাবার খাওয়াতে চান, তাও প্রায় দেড় লক্ষ বাঙালীর কাছে কমেন্ট চেয়েছে সপ্তাহ জুড়ে। ঐ পেইজেই প্রতি মুহুর্তের লাইভ স্ট্রিমিং, ইউটিউব ভিডিও, টুইটার বার্তার সাথে অসংখ্য মানুষ আপডেট থেকেছি। একই সাথে বিশ্বের অন্যান্য দূতাবাস, সিআই, র, আইএসআই সহ সারাবিশ্বের সবাই জেনেছে হিলারির প্রতি মুহুর্ত।

অথচ যেই ঢাকায় এই ঘটনা সেখানে অস্থিত বাংলাদেশের খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রালয়ই তার খবরই রাখে না, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ডিজিএফআই, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কারও খবর নেই, হিলারি ঢাকায়, দেশের তরুনদের সাথে একটি রাজনৈতিক আড্ডা দিয়ে গেছে। এটাও সত্যি, যদি আগে সামান্য খবরও পেত তাহলে সেখানে গোয়েন্দা গিজগিজ করতে থাকতো সেদিন, অনুষ্ঠান না করতে দেয়ার সমস্ত পায়তারা করতো, সরকার। দেখে নেয়া যাক আমাদের মিডিয়াতে খবরটি কিভাবে এসেছে ? ঢাকা, মে ১০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে, গত ৭ মে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এক অনুষ্ঠানে হিলারি ক্লিনটন ‘তথাকথিত তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে বৈঠক করেন, সেখানে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকে ইউনূসের পদ নিয়ে ‘বিরোধের’ বিষয়টি তিনি ওয়াশিংটন থেকে লক্ষ্য করেছেন। তিনি আশা করেন, সরকার এমন কিছু করবে না যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়। এদিকে ঐ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গিয়ে চার দিনের মাথায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গত ১০ মে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিতিতে বলেন, “মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি আর বিদেশ থেকে লিল্লার টাকা এনে এনজিও করে দেশের উন্নয়ন হয় না।

ক্ষুদ্র ঋণে আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে না। একশ বছরেও বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে না- ক্ষুদ্র ঋণে। ” তিনি বলেন, “ইউনূসের বেসিক সাবজেক্ট ছিল অর্থনীতি। তিনি অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন না। কোনো যুদ্ধ বন্ধ না করেই, তিনি শান্তিতে নোবেল পেলেন।

নোবেল কীভাবে আসে- তা আমাদের এখানে অনেকেই জানেন, তিনি আরও বলেন, “আয়ারল্যান্ডের দুই মহিলা মাদারল্যান্ড পিস নামের একটি সংগঠন করে। এই সংগঠন করার দুই মাসের মধ্যে তারা শান্তিতে নোবেল পান। আর নোবেলের টাকা নিয়ে ওই দুই মহিলার মধ্যে ঝগড়া লাগে। তিন মাসের মধ্যে তাদের ঝগড়া আদালতে গড়ায়। আর শান্তি থাকে না।

” ঐ অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনিকে সামনে রেখেই মন্ত্রী বলেন, ‘আড্ডা উইথ বাংলাদেশ’ "হিলারির টাউন হল স্টাইলে অনুষ্ঠান করলেন। " "তথাকথিত ইয়াংদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। কলকাতায়ও একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। তারা ২/৪ দিন আগে থেকে অনুষ্ঠানটির বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। আর বাংলাদেশে অনুষ্ঠানটি হওয়ার দিনও আমরা জানতাম না।

” কলকাতার মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না, সেখানে বিশ্বমন্দা বা ইরান প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছে। “আর আমাদের এখানে সঞ্চালক আগে থেকেই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তরুণদের প্রশ্ন শিখিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশকে ছোট, দরিদ্র ও অগণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। ”ওই অনুষ্ঠানে হিলারির বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতও।

গত ৮ মে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে হিলারি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তিনি তা রাবিশ বলে আখ্যা দেন। শিল্পমন্ত্রী দিলিপ বড়ুয়াও প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে অনুষ্ঠানটির সমালোচনা করেন। হ্যাঁ, "কনভার্সেশন উইথ কোলকাতা" নামে ৭ মে সকাল ৯:৩০ মিনিটে ভারতের এনডিটিভির সহযোগিতায় একই রকম একটি অনুষ্ঠান হয়েছে কোলকাতাতেও। সম্ভবত আমাদের মন্ত্রীরা দুইদিন পর কোলকাতার কোন দিক্ষাগুরুর সাথে টেলিফোনে আলাপে বাংলাদেশের অনুষ্ঠানটির খবর শুনতে পান।

তাই ৬ তারিখের অনুষ্ঠানের কমেন্ট ১০ তারিখে করেছেন, আর বিডিনিউজ২৪ এর সাংবাদিকও ঐ ভারতের অনুষ্ঠানেরই রিপোর্ট করেছে, তা তার দেয়া তারিখ তাই বলে। ভারতেও মার্কীন দূতাবাসের ফেইসবুক পেইজ থেকে হিলারির সফর আপডেট প্রচার করছিল সপ্তাহ জুরেই। আর সেই পেইজ থেকেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়, কোলকাতার গণমাধ্যম সহ সারা ভারতের গণমাধ্যম কয়েকদিন আগে থেকেই হিলারির প্রতিটি সিডিউলের প্রচার করছিল। এই দিকে বাংলাদেশে, গণমাধ্যম দূরে থাক খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ই কোন খবর রাখে না। কি লজ্জ্বা, যদি আমাদের থেকে থাকে ! আসলে গত তিন চার বছর ধরেই আমেরিকার সব দূতাবাসেরই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফেইসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কের বাটন এ্যাড করে নাগরীক ও বিশ্বের সাথে আরও দ্রুত ও সহজেই কমিউনিকেইট করছে।

যেমন বাংলাদেশে মার্কীনদূতাবাসের ফেইসবুক পেইজটি খোলা হয় ১৫ জুলাই ২০০৯ সালে। তখন থেকে এ্যামবিসি তার মূল ওয়েবসাইট এরচেয়ে ঐ পেইজেই বেশি নিউজ, আপডেট করছে, পেইজটির এই মুহুর্তে ব্যবহারকারীও কয়েক লাখ। শুধু ফেইসবুক না, ইউটিউব, টুইটার এ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছে তাদের পররাষ্ট্র দপ্তর , হয়াইট হাউজ সহ সকল রাষ্ট্রীয় দপ্তরের জন্য। আধুনিক, সহজ ও দ্রুত কমিউনিকেশনের যুগে ফেইসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা অফিস করবে এটাই স্বাভাবিক। আজ ২০১২ সালে তাদের প্রতিটি সরকারী দপ্তরের ওয়েবসাইটে সোশ্যাল মিডিয়ার বাটনগুলো লেগে গেছে।

শুধু আমেরিকা না, ইউরোপের অনেক দেশেই ইগভার্নেন্সে সোশ্যাল মিডিয়ায়র ব্যবহার শুরু করছে গত দশকেই। এমনকি সিঙ্গাপুর পুলিশ ডিপার্টমেন্টও ফেইসবু পেইজ পরিচালনা করে। অথচ দেখুন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অন্যান্য মন্ত্রনালয় বাদ দিলাম, খোদ পররাষ্ট্রদপ্তরই খবর রাখতে পারলো না এত গুরুত্বপূর্ন অতিথির সিডিউল, যা ফেইসবুকের মত পাবলিক ডোমেইনে সরাসর প্রচার হয়েছে। কত বড় লজ্জ্বার বিষয় আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এসে একটা টাউন হলে, তরুন প্রজন্মকে নিয়ে একটি রাজনৈতীক সন্মেলন করে চলে যায় - যেখানে দেশের সামর্থ, সম্ভাবনা, রাজনীতি, গণতন্ত্র, বর্তমান ভয়ংকর শ্বাসরুদ্ধ রাজনীতিক পরিস্থীতি, সর্বচ্চো পর্যায় থেকে সর্বনিম্ন পর্যন্ত নিমগ্ন দুর্নীতি, হত্যা, গুপ্তহত্যা, গুম, পুলিশ, থানা, প্রশাসন ও লুটতরাজ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়- আর আমাদের পররাষ্ট্রদপ্তর আগে থেকে সেই অনুষ্ঠানের কোন খবরই রাখে না। তিন দিন পর কোলকাতার কোন বন্ধুর টেলিফোনে জানতে পারেন ঘটনাটি।

অথচ আগে জানতে পারলে পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি হইচই ফেলে দিতেন। ৫ তারিখ থেকেই বারীধারার সমস্ত পথঘাট বন্ধ করে দিতেন। ঐ এলাকা ডিজিএফআই, এনএসআই, সিআইডি সহ আইন শৃংখলা বাহীনিতে গিজগিজ করতে থাকতো, সেদিন ঐ পথে যেতে যেকাউকে দশবার চেকপোষ্ট ফেইস করতে হতো, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বিশ্রী একটা ব্যাপার হতো। ভালোই হয়েছে টের না পেয়ে। পুরো বিষয়টি অন্তত এক সপ্তাহ কাল ধরে পাবলিকলি প্রচার করা হয়।

তারপরও ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে ক্ষমতায় আসা সরকার যদি সাড়ে তিন বছর পরে এই কথা বলেন, তাহলে তা দেশের জন্য মারাত্মক বিপদজনক, সামনে অন্ধকারে নিমজ্জিত ভবিষ্যত। আসলে নীতিনির্ধারকরা কিছুই বুঝতে পারছেন না, উনাদের তথ্যপ্রযুক্তিতে গন্ডমূর্খ বললেও কম বলা হবে অথবা দেশ, মানুষের স্বাধীনতা নিয়ে তারা সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র করছে। একই সাথে দেশকে আরও অনেক অনেক পিছিয়ে দিচ্ছেন, দ্রুতগতীতে এগিয়ে চলা এই বিশ্বে। ডিজিটাল বাংলাদেশ দূরে থাক দেশে গত সাড়ে তিন বছরে তথ্যপ্রযুক্তির এক ইঞ্চিও বেসিক উন্নয়ন হয়নি। ইউনিভার্সাল ব্রডব্যান্ড, ইকমার্স, ইন্টারনেট পেমেন্টে আজও আমাদের কল্পনাতেও নেই।

আজও সরকার একটা ইমেইল সার্ভার পর্যন্ত করতে পারেনি। আজও আমরা এক দেশ থেকে আরেক দেশে দূরে থাক দেশের ভেতর থেকেই সরকারী একপাতার চিঠিও বিশেষ বাহক মারফত গাড়ি করে পাঠাচ্ছি। অথচ এই সামান্য ওয়েব কমিউনিকেশনের উদ্দেশ্যে সরকার ক্ষমতায় এসেই, খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআই নামক একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে বেশকিছু উচ্চপদস্থ কাঠেরমিস্ত্রী আমলার আইডিয়ায় শত কোটি টাকা ও মহামূল্যবান সময় ব্যায় করে সরকারী প্রতিটি মন্ত্রনালয় দপ্তর জেলা উপজেলার জন্য ওয়েবপোর্টাল বানিয়ে যাচ্ছে, নিরলস পরিশ্রম করে। ঐ পোর্টাল দিয়ে সংস্থাগুলো নাকি নাগরীকের সাথে ইন্টারেক্ট করবে, সরকারি সেবা পৌছে দেবে জনগণের দোরগোরা থেকে হতের মোবাইলে। এর এক প্রজেক্টে প্রথম দুই বছরে জুমলা নামক একটা ফ্রি সিএমএস ব্যবহার করে জেলা তথ্যবাতায়ন, ন্যাশনাল ওয়েবপোর্টাল, মন্ত্রনালয়, দপ্তর অধিদপ্তরের যে সাইটগুলো বানিয়েছে সেগুলোকে ডিজিটাল ব্যানার এর বেশি কিছু বলা যাবে না।

সেইযে প্রধানমন্ত্র ভিডিও কনফারেন্স করে উদ্বোধন করেছে, আর কোন চেইঞ্জ নেই, আপডেট নেই, ইন্টারেকশন নেই। যেন রাস্তায় বৃষ্টিতে ভেজা কোন ছাগল ব্যানার অনন্তকাল দাড়িয়ে আছে। তিন বছর আগের এই ডিজিটাল ব্যানারে তিন বছর আগের তথ্যটিও পাবেন না, সেদিন একটা নিউজ করতে ফেনী জেলা তথ্যবাতায়নে ফেনী সদরের এ্যাসিল্যান্ডের একটা ছবি পর্যন্ত পেলাম না। অথচ এই সাইটগুলো উদ্বোধনের সময় প্রতিটিজেলায় শুধু প্যান্ডেল ডেকোরেশন বিলই দিয়েছে একলক্ষ টাকা করে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের সাধ মেটাতে সারাদেশ জুড়ে কয়েকটি সরকারী অফিসের জন্য মাত্র পাঁচশ সংযোগের হজার কোটি টাকা ব্যায়ে পাঁচ এমবিপিএস অপটিক ক্যাবল বসাচ্ছে,যন্ত্রপাতি কিনছে - দেশে যেখানে এক ইঞ্চিও পাবলিক ডমেস্টিক অপটিক ব্যাকবোন নেই, সেখানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের জন্য সতন্ত্র ব্যাকবোন, যে কাজটি শুধু দেশে ব্রডব্যান্ডের সংঙ্গা পরিবর্তন করলেই দেশে যেকোন নাগরীক স্কাইপি ইয়াহু দিয়ে সারাদিন ফ্রি করতে পারতো।

আর ওয়েবসাইট বানাতে যে ট্রেনিং ৩০ মিনিটের একটা ভিডিও টিউটরিয়াল দিয়েই করা যায়, তা হাজার হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীকে গাড়ি, তেল, অনারিয়াম, সময় খরচ করে ঢাকায় এনে দিয়ে, এ্যাকসেস টু ইডিয়টের বাতায়ন বানিয়ে রেখেছে। যা গত দেড় বছর ধরে পরিত্যাক্ত ঘোষনা হওয়ার অপেক্ষায় আছে, কারন এবার নাকি আরেক ফ্রি এসএনএস ধ্রুপল দিয়ে ন্যাশনাল ওয়েব ফ্রেমওয়ার্ক বানানোর চাইল্ডিশ পরীক্ষা চলছে। অথচ আমাদের মত সামান্য তথ্যপ্রযুক্তি সচেতন মানুষেরাও তিন বছর আগেই বলেছিলাম বাংলাদেশের প্রতিটি মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর, ব্যাংক, ডিসি, এসপি অফিস সহ সকল সরকারী দপ্তর গুলোর জন্য এখনই ওয়েবসাইট বানানোর চেয়ে শুধু ডোমেইন কনফার্ম করে ফেইসবুক পেইজে রিডিরেক্ট করে রাখা উচিত। তাহলে কার্যালয়গুলোর যেমন ইন্টারনেটের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে, সেই সাথে খুব সহজেই তথ্য আপডেট রাখতে পারবে এবং তাদের নিজেস্ব সাইট বা নেটওয়ার্ক কেমন হতে হবে তার ধারনা তৈরী হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! আজও কোন সাইটে ফেইসবুক পেইজটা পর্যন্ত ঢুকালো না এটুআই, সুপার এ্যাডমিন ওদের হাতে।

তাহলে সাইট গুলো অন্তত আপডেট থাকতো। এতদিনে পররাষ্ট্রদপ্তর আমেরিকান দূতাবাসের পেইজটা অন্তত খুজে পেত। প্রকৃতপক্ষে ফেইসবুকের নাম শুনলেই এরা কেন যেন ক্ষেপে যায়, বল ঐটা ফাউল ছেলেমেয়ের ফাইজলামী করার জায়গা, নীল ছবি দেখার জায়গা। বর্তমান সরকার ফেইসবুকের ঘোর বিরোধী। প্রধানমন্ত্রী নিজে ফেইসবুকের নাম শুনতে পারে না।

তাই এত বাঁধা পেরিয়ে এটুআই মুক্ত একমাত্র তথ্যকমিশন এর সাইট ছাড়া আর কোন সরকারী প্রতিষ্ঠানের ফেইসবুক পেইজ নেই আজ পর্যন্ত এবং এই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটটিতেও কোন আপডেট না থাকলেও পেইজটিতে ঠিকই আপডেট আছে। কেন বিষয়টা এরকম হলো ? ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনা দিয়ে ক্ষমতায় এসেও আজ কেন এই দুর্রবস্থা ? সামান্য ওয়েব কমিউনিকেশ না থাকায় এত বড় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ন, জাতীয় নিরাপত্তা ঝুকিপূর্ন একটি খবর সম্পর্কে কোন তথ্যই ছিলনা রাষ্ট্র যন্ত্রের। তাহলে কারা ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে সরকারকে উপদেশ দিচ্ছে, যে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় শুধু ওয়েব কমিউনিকেশনে মিনিমাম ডেভলপমেন্ট না হওয়ায়, মন্ত্রনালয়ের মত প্রতিষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মত অফিস খোজও রাখতে পারলো না। শেখ হাসিনা আর সজিবওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশের মুখে চুনকালি মেখে হিলারি ফেইসবুকে অরগানাইজ করে ঢাকার বুকে গোপন রাজনৈতিক মিটিং করে গেল, যার রকর্ড নিয়ে বিশ্বব্যাপী তোলপার চলছে - কি করে একটা দেশে এত মঘের মুল্লুকের মত চলছে, তাই সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্ধু। কি করছি আমরা এত মূল্যবান সময় ও অর্থ ব্যায় করে, আবার পথেঘাটে মাঠে ময়দানে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে।

এর উত্তর খুজতে আমাদের যেতে হবে ২৯ মে, ২০১০ সালে। সেদিনের পত্রিকার খবরগুলো ছিল এরকমঃ ফেইসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ব্যাঙ্গাত্মক ছবি প্রকাশের অভিযোগে শনিবার ভোরে একজনকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর ওয়েবসাইটটি বন্ধ (ব্লক) করা হয়। একটি চিঠির প্রেক্ষিতে ওয়েবসাইটটি সাময়িরকভাবে বন্ধ (ব্লক) করা হয়েছে। চিঠিটি কোন র্কতৃপক্ষের তরফ থেকে এসেছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এছাড়া শুক্রবার কয়েকটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ফেইসবুক বন্ধের দাবি জানায়।

দুপুরে মুক্তাঙ্গনে এক সমাবেশে এ দাবি জানানো দলগুলো। ২৯ মে, ২০১০ প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীর ব্যাঙ্গাত্মক ছবি প্রকাশের অভিযোগে রাজধানীতে মাহবুব আলম রডিন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক আইডি ব্যবহার করে নানা ধরনের সাইবার অপরাধ করার অভিযোগ করে র‌্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার নাম দিয়েছে ‘ফেসবুক ক্রিমিনাল’ ফেসবুকে কখনও ব্রিগেডিয়ার, কখনও সিপাহি, আবার কখনও ইমাম মাহদী হিসেবে পরিচিত সে। প্রকৃত নাম মাহবুব আলম রডিন।

তার টার্গেট ছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা। সামপ্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার নামে একাধিক ফেসবুকে আইডি নিয়ে মানবজমিন-এ অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় নানা মহলে। পরবর্তী সময় র‌্যাব ইন্টেলিজেন্স উইং ও কমিউনিকেশন অ্যান্ড এমআইএস’র সমন্বয়ে গঠিত এন্টি সাইবার ক্রাইম টিম কাজ শুরু করে।

টানা কয়েকদিন কাজ করার পর তারা সন্ধান পান মাহবুব আলম রডিনের। শুরু হয় তার ওপর পর্যবেক্ষণ ও গোয়েন্দা নজরদারি। র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন। অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাত দু’টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার ৭/সি র‌্যাংকিং স্ট্রিট (ওয়ারী) থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রডিন অকপটে বলেছে, প্রায় এক বছর আগেও সরকারের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে আপত্তিকর ও ব্যঙ্গাত্মক বক্তব্য ফেসবুকের মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে সে।

রডিন এর আগে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যঙ্গাত্মক ছবি ও মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন বলে র‌্যাব সূত্র জানায়। এ চক্রের প্রধান হোতাকে গ্রেপ্তার ও অন্য সহযোগীদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। পাশাপাশি অন্য মদতদাতাদেরও তদন্তের মাধ্যমে বের করার চেষ্টা চলছে। কি বুঝলেন ? আসলে কিছুই বোঝেন নি। সেদিন মূল সমস্যাটা ছিল ২০ মে ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফেইসবুকে ব্যঙ্গাত্মক ছবি প্রকাশ করা নিয়ে সারাবিশ্বে তোলার চলছিল।

পাকিস্তান আফগানিস্তান সহ অনেক দেশে ফেইসবুক ব্যান করেছিল। বাংলাদেশেও ইসলামী দলগুলো বিষয়টি নিয়ে মিছিল করেছিল। রডিনে ঐ সামান্য ব্যাপারটা একটা আইওয়াশ মাত্র। ঐ সময় বহির্বিশ্বে দেশের ধর্মীয় উগ্রতা গোপন করতে বাংলাদেশের অতিচালাক অন্ধকার প্রিয় আমলা ও বুড়ো রাজনীতিবিদরা বিশ্বের সাথে বিচ্ছিন্ন দেশের জনসাধারনকে অন্ধকারে রাখতে আসল বিষয়টা চেপে গিয়ে রডিনকে গ্রেফতার করেছিল, সেই সাথে আর একটি সুদূর প্রসারি পরিকল্পনার বীজ বপন করেছিল। এই ঘটনার মাধ্যমে সারাদেশে প্রতিটি আমলা, এমপি, মন্ত্রীর মাথায় একটি ম্যাসেজ ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিল।

তাহলো, প্রধানমন্ত্রীর ফেইসবুক খুবই অপছন্দ। তিনি বলেন ওখানে অশ্লিল ছবি, ভিডিও, পর্ণগ্রাফিতে ভরপুর থাকে। মূর্খ ফাজিল বদমাশ খারাপ লোকেরা ফেইসবুক করে। সেদিন থেকে পুরো প্রশাসন, আমলা, মন্ত্রী ফেইসবুক সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। আমি নিজের কানে অনেক মন্ত্রী, সচিবের মুখে ফেসবুক নিয়ে জঘন্য সব মন্তব্য শুনেছি।

সেদিন এক জেলার ডিসি তার কার্যালয়ে ইয়ং অফিসারদের ফেসবুক ব্যবহার না করার চিঠি দিয়েছেন। এবার বুঝুন কোথাকার জল কোথায় গড়ায়। ডিজিটাল সরকারের প্রথম দিনগুলোতেই তুচ্ছ একটা বিষয়ে ফেইসবুক সম্পর্কে এই ধারনা আর কারো কোন ক্ষতি না করলেও দীপুমনির পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়কে অদক্ষ অথর্ব অপদার্থ করে রেখেছে তা নির্দিধায় বলে দেয়া যায় আজ। আর ফেইসবুক ডিপ্লোমেসিতে হিলারি ক্লিন্টন প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়ে গোপন রাজনৈতিক ইয়ং মিটিং করে ডিজিটাল বাংলাদেশকে দুই গালে সজোরে দুই থাপ্পর দিয়ে বলে যায় এই তোমাদের দেশ, এই করে রেখেছ তোমরা ? আর সেই থাপ্পরে ধরাসায়ী হয়ে আশরাফ, দীপুমনি সহ জাঁদরেল সব মন্ত্রী আমলারা নির্লজ্জ্বের মত ঘটনার পাঁচ দিন পর বলছে, আমাদের না জানিয়ে, কোন প্রচার ছাড়া হিলারি তথাকথিত তরুনদের নিয়ে টাউন হল মিটিং করে গেছেন। যাই হউক, দুইটি ঘটনাই মে মাসে, ২৯ মে ২০১০ ফেইসবুককে ব্লক করেছিল আর ৬ মে, ২০১২ ফেইসবুক আমাদের নেতা আমলাদের থাপ্পর দিয়ে বলে দিল, তোরা ভুল করছি।

সেদিন, আমরা জাতীয় বীর রবিনের মুক্তি চেয়েছিলাম সাথে আর একটা ঘোষনা দিয়েছিলাম, প্রতি বছর "২৯ শে মে আমরা সবাই নেতাদের কার্টুন আঁকি দিবস পালন করবো। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ জাতিয় স্বার্থে আমরা বছরের একটা দিন নেতা, নেত্রী, আমলাদের কার্টুন একে সবাইকে ভিজুয়াললি দেখিয়ে দেই উনারা এক একজন কত বড় ছাগল ! আবার বলি আমরা "২৯শে মে -আমরা সবাই নেতা-গ কার্টুন আঁকি, এ-গ ঠিক করি দিবস"। A Conversation with Bangladesh: জয়েনঃ ২৯ মে-সবাই নেতানেতি গ কার্টুন আকি দিবস Edp মূলপোষ্টঃ ফেবু ডিপ্লোমেসিতে ধরাসায়ী আশরাফ, দীপুমনি ও জাঁদরেল মন্ত্রীআমলা অথবা সহজ পৃথিবী'র বাংলাব্লগ  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.