কি লিখব কিছুই মাথায় আসছেনা।
তখনও মাথায় আসেনি, যখন চুয়েটে পড়তে আসি। চুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর সংবাদপত্রে প্রায় দেখতাম চবি / চুয়েটের ছাত্রদের বিছানায় সাপ শুয়ে থাকে। ভয় লাগতে লাগল। মাকে বললাম চুয়েটে পড়ব না।
মা কোন কথায় শুনলেন না। মা আমাকে জোর করেই চুয়েটে পাঠালেন। আসলাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের শহর চট্টগ্রামে। অনেক সুন্দর একটা ক্যাম্পাস শুধু ঘুরতে ঘুরতে আর ব্যাকলগ সাথে নিয়ে ১ম সেমিষ্টার পার করলাম। তারপর একে একে পার হয়ে গেল ৭ম সেমিষ্টার।
আর ৮ম সেমিষ্টারে এসে সময় বলছে, দিন শেষ হয়ে এল। এই শেষ দিনগুলির কিছু উৎসবমুখর মুহূর্তের ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
রক্তদান কর্মসূচি।
গেঞ্জি পড়ে সবাই র্যা লির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু মজার ব্যাপার প্রায় অনেকের গেঞ্জি , গায়ে দেওয়ার পর শর্ট পাঞ্জাবি হয়ে গেছে।
আমাদের শ্রদ্ধেয় ভিসি স্যার সহ আমাদের সবার প্রিয় স্যাররা এসে আমাদের র্যালিকে আরও উজ্জ্বল আর আনন্দমুখর করে তুললেন।
ক্যাম্পাস র্যালি শেষ করে, আমাদের শ্রদ্ধেয় ভিসি স্যার আমাদের উদ্দেশ্যে উনার মহামূল্যবান বক্তব্য রাখলেন। তাঁর বক্তব্যে আমরাও অনুপ্রাণিত হলাম।
আমাদের ক্যাম্পাসের আঁতেলদের গ্রুপ। সিরিয়াস আঁতেল।
তারপরও তারা তাদের মহামূল্যবান পড়ার সময়গুলো আমাদের সাথে ব্যয় করে আমাদের ধন্য করেছে। ধন্যবাদ আঁতেল ভাইয়ারা, ধন্যবাদ চার্লি গ্রুপ।
বন্ধুদের মনের খাতায় নিজেদের কিছু আবেগ শেয়ার করলাম।
শহরের উদ্দেশ্যে আমাদের ক্যাম্পাস বাসে যাত্রা। ঢোল বাজিয়ে আর সবার মনের খাতায় নিজেদের কথাগুলি লিখে কিছু মজার সময় কাটালাম।
আমাদের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা। সবাই চিৎকার করে জানাতে চাইলাম, আজ আমাদের কোথাও হারিয়ে যেতে নেই মানা।
সিএসই ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা। এরা আবার খুব ভদ্র কিসিমের। মাঝে মাঝে নিজেদের মনকে প্রশ্ন হয়, সিএসই তে আমাদের ব্যাচে কেউ পড়ে কিনা? এদের উপস্থিতি ক্যাম্পাসে অনুভব করা যায় না।
তারপরও তাদের উপস্থিতি আমাদের ধন্য করেছে।
আমার মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা। নিজেদের ডিপার্টমেন্ট বলে বলছিনা, আমার দেখা, আমার ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরাই সেরা। আমাদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ক্যাম্পাসের যে কোন অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে তুলে। আমি তাদের খুব মিস করব।
আজ যে যেভাবে পারে নাচুক, লাফালাফি করুক সমস্যা নেই।
তারপর শহরে আমাদের র্যালি। সবাইকে জানিয়ে দিলাম আমাদের হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। জানিয়ে দিলাম র্যাগ’১২ এর কথা।
সাথে আমাদের রাজা-রাণী।
রঙের খেলা।
07…………………………চিৎকার করে জানিয়ে দিলাম প্রকৃতিকে। আকাশ-বাতাসে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল আমাদের আনন্দ চিৎকারে।
দয়া করে নেতিবাচক কিছু ভাববেন না। ছেলেটি কিন্তু ভদ্র।
আমাদের নেপালী বন্ধু উজ্জল। সেও কিন্তু কম মজা করেনি।
দয়া করে এই ছেলেটিকে ভূত ভাববেন না। ও আসলে আমাদের ঘুমরাজ বন্ধু। ঘুম থেকে উঠেই দেখে তার গায়ে রঙের মেলা।
ক্যাম্পাস মামা………..আমাদের সবার প্রিয় মামা……..তবে তার আওয়াজে জোর কম। পেটে পারমাণবিক বোমা ফাটালেও অমায়িক হাসি দেওয়া ছাড়া কিছুই পারেনা।
আমাদের ক্যাম্পাসের 07 ব্যাচের ২ সেলেব্রেটি। তারা ছাড়া আমাদের যে কোন অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ মনে হয় । আসুক না শাকিরা অথবা ব্রায়ান অ্যাডামসের মত কেউ, তারা না থাকলে অনুষ্ঠান জমে উঠেনা।
চাইতে পার আনন্দ, চাইতে পার খুশি, অর্থহীন জানিয়ে গেল র্যা গ’১২ এ 07 এর সাথে আমরা আছি।
অর্থহীনের অন্ধ-পাগল ভক্ত আমাদের sumon3d …………ওর কোন ভাল ছবি পাইলুম না।
শিরোনামহীন সাথে আমরাও গান গাইলাম।
সোলসের শেষ গানের সাথে শেষ হল আমাদের র্যাগ’১২। আর র্যাগ’১২ ঘন্টা বাজিয়ে আমাদের জানিয়ে দিয়ে গেল তোদের সময় শেষ।
মায়ার বাঁধন ছেড়ে দিয়ে চলতে হবে জীবনের বাঁকি পথ। দেখা হবে কি হবে না, দেখতে পাব কি পাব না, বন্ধুর সে প্রিয় মুখখানা। এই ভয় মনের ভিতর ঘন্টা বাজিয়ে দিল। আবেগতাড়িত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলাম, হৃদয়ের গভীর থেকে কান্না ভেঙে আসল, ভালবাসার অশ্রুজলে ভেসে গেল আমাদের হৃদয়। মাঝে মাঝে মনে হল সময়টাকে আকড়ে ধরে থাকি।
কিন্তু পারলাম না। সময় তার চলার পথে নিরলস। থামতে চাইলনা।
কেউ থামুক বা চলুক, আমাদের চলার পথে বন্ধুরা আবারও দেখা হবে কারণে আর অকারণে,মনের চাপা অভিমান ভেঙে বলব, তোরাও হয়ত বলবি- “কেমন আছিস বন্ধু?”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।