আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার প্রতি রাষ্ট্রের কোন দায়িত্ব নাই

সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রয়োজনী কর্ম শেষে বাইরে বের হতে হয়। পেশাগত কারণে প্রথমে সচিবালয় তারপর শিক্ষা ভবন কিংবা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে কিংবা প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করে প্রেসক্লাব অথবা অন্য কোথাও যাওয়া। অবশেষে প্রায়ই দুপুরের ভোজনপালা শেষ করতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসা। কোনরকম মুখে দিয়েই তিনটায় অফিসে ঢুকতে হবে, সাংঘাতিক যানজট এমন নানা রকম ভাবনায় রিপোর্টার্স ইউনিটির আড্ডায় আর বসা হয়না। কোন সহকর্মী মোটরযানে একসঙ্গে অফিসে আসতে চান, তাকে নিজ খরচে মুঠোফোনে কল করে খুঁজে বের করে অবশেষে তেজগাঁও অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়।

কাঠফাটা রোদে হাসফাস করে অফিসে ঢুকে এসির বাতাসে শরীর জুড়িয়ে যায়। আহ! কত চমৎকার অফিস। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা সব সময় এসির হাওয়া। নিজের ডেস্কে এসে কম্পিউটার অন করে, বাথরুমে মুখ ধুয়ে এসে দেখি ফ্লোরে হট্টগোল। এই আজ বেতন দেওয়ার তারিখ ছিল।

পুরো বেতন দিবে বলেছিল এখন বলছে দুই হাজার কিংবা পাঁচ হাজার টাকা দিবে। লে বাবা পকেট পুরো ফাঁকা। গত তিন মাস ধরে বেতন বকেয়া। দুই বছর ধরে বেতন অনিয়মিত হতে হতে এখন মাসের পর মাস যায় বেতন মিলে না। কতক্ষণ চিল্লাপাল্লা, হইচই।

একসঙ্গে একজোট হয়ে কোন এক কক্ষে সভা, ভাষণ, স্লোগান। অবশেষে কোন ফল নাই। ওই দুই হাজার, পাঁচ হাজার হাত পেতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আর নতুন করে বেতনের তারিখ নির্ধারণ। আবার নিজের ডেস্কে এসে বসা। এটা তো সৃজনশীল কাজ, মুটে মজুরের কাজ নয়।

দেড়ী হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত কম্পিউটারের কি বোর্ড চাপতে হয়.......তথ্য, উপাত্ত.... সংবাদ। আর ওইদিকে মাথার মধ্যে ঘুরছে পকেটে তো টাকা নাই। কি করা যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী।

মাধ্যমিক থেকে শুরু করে সবটাতেই ফাস্ট ক্লাশ। তাহলে............। মিলাতে পারিনা। প্রতিযোগীতামূলক নানা পরীক্ষা ভালো দিয়েও যখন কোটার প্যাচে পড়ে বারবার সোনার হরিনের দেখা না মিলে তখন হতাশ হতে হয়। কিংবা যখন বারবার প্রিলিমিনারি, লিখিত পরীক্ষার বাঁধা ডিঙ্গিয়ে ভাইভা বোর্ড।

কিন্তু ফলাফলে কোন ফল আসে না, তখন কি যে হয় বোঝানো যাবে না। কি বোর্ডে চেপে চেপে কত মুদ্রাস্ফিতি, দুর্নীতি, হত্যা, গুমের মতো ভারি ভারি সব বিষয় বের করি কিন্তু নিজের সহকর্মীর হত্যা রহস্য রহস্যই থাকে। তখন অন্যরা টিপ্পনি কাটে নিজ গোষ্ঠিভুক্তর ঘটনা নিজেরাই রহস্যের কিনারা করতে পারেনা! ভাল্লাগে না। ভাল্লাগে না। মা বা বলেন, বাবা দিনকাল খারাপ বেশি দেরি করিস না।

বাইরে আড্ডা দেওয়ার দরকার নেই। দিনে কয়েকবার ফোন করেন আর ঘ্যান ঘ্যান করেন, কোথায়? অফিসে? শুনেছিস ওইখানে নাকি বোমা হামলা হয়েছে। ওইখানে নাকি ........? টেলিভিশন, পত্রিকা সবখানে শুধু অনিরাপত্তা আর হতাশার খবর। কোন সুখবর নেই। ভালো খবর নেই।

হঠাৎ গায়েব করে ফেলা কিংবা আমজনতাকে বিনা দোষে অগ্নিদগ্ধ করা খুবই ছোট ব্যাপার। মেধার দাম নেই। দলবাজী, চামবাজী এখন বড় যোগ্যতা। আমার মতো আমজনতার প্রতি রাষ্ট্রের কোন দায়িত্ব নেই। সংবিধান, মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এগুলো কেবল কিছু প্রতীকি শব্দ মাত্র।

এরবেশি কিছু নয়। কত ফুলঝরি, কত স্বপ্ন দেখিয়ে এখন সব ভুলে গেছে। ক্ষমতা..............আহা রে মা, মাটি, দেশ। বি.দ্র. কল্পনাপ্রসূত একটি কল্পকথা। কাকতালীয়ভাবে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা.কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সঙ্গে মিলে গেলে আন্তরিক অর্থে দুঃখিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.