: বাবুল, তুই জেলে কেন? তোকে ডিবি পুলিশ ধরছে কেন? তুই কি হামজার সাথে গত পরশুদিন এলাকার মন্দির আর প্যাগোডা ভাঙায় ছিলি?
: না স্যার, কী যে বলেন! মূর্তি ভাঙলে ডিবি ধরে নাকি! হামজা তো বহাল তবিয়তে আছে। আসলে ২০০৭ সালে আমি একটা ফেসবুক পেজে 'লাইক' দিছিলাম। আর সেটা নাকি নাস্তিক পেজ। তাই ডিবি বাড়ি ফেরার পথে আমাকে ধরে এনেছে।
: কোন পেজ? পেজের নাম কী?
: স্যার, পেজের নাম 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'।
: এটা নাস্তিক পেজ হলো কিভাবে? এটা তো জাতীয় সঙ্গীতের নামে একটা পেজ।
: স্যার, 'আমার সোনার বাংলা' কথায় 'সোনা' একটা অশ্লীল শব্দ, অন্য অর্থ করলেও সোনা ব্যবহার করে মূলত হিন্দুরা। দেবদেবীর মূর্তি বানায় সোনা দিয়ে। মূর্তির গলায় আবার সোনার অলংকার দেয়। কপালে সোনার টিপও নাকি পরায়।
সুতরাং সোনা নাস্তিক। 'বাংলা' শব্দটাও নাস্তিক স্যার। নাস্তিক শাহবাগীরাই তো 'জয় বাংলা' শ্লোগান ছড়ায় দিয়েছিলো সাধারণ মানুষের মাঝে।
: কী বলিস বাবুল!
: হ্যা স্যার। এগুলো হামজা আমাকে বলেছে।
: হামজা! হামজা এসব বলে বেড়াচ্ছে?
: হ্যা স্যার। আমাকে দেখতে এসেছিলো। জামিনের ব্যবস্থাও করবে বলেছে। ও স্যার, বাকিটা শেষ করি। 'আমি তোমায় ভালোবাসি' তো স্যার ব্লাসফেমি আইন বিরোধী।
ছোট ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন সকালে এই গান গায় বলেই তো বড় হয়ে উচ্ছন্নে যাচ্ছে। বিজাতীয় সংস্কৃতির শাড়ি পড়ে, কপালে লাল টিপ দিয়ে পহেলা বৈশাখে যায়, ভালোবাসাবাসি করে।
: এও হামজা বলেছে?
: হ্যা স্যার। আরো বলেছে গান হারাম। রবীন্দ্রনাথও নাকি নাস্তিক-মুরতাদ ছিলো।
তাই তো এত এত গান লিখেছে। কী শয়তান, সবই গানেই আবার বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার রেখেছে। হিন্দু হয়ে নাস্তিক-মুরতাদ ছিলো না শুধু প্রতুল মুখোপাধ্যায়। সে বাদ্য যন্ত্র ছাড়া গান করতো।
: থাম, থাম! হামজা আমার ছাত্র নামের কলঙ্ক! এখন কী করবি, বাবুল?
: স্যার, হামজা বলেছে 'বাশেরকেল্লা' আর 'আমার দেশ' পেজে লাইক দিলে এবং মাহমুদুর রহমানকে সাবস্ক্রাইব করলে ৭ দিন পর জামিনের ব্যবস্থা ওই করে দেবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।