...............................................................................................................................................................। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন গাজীপুর-৪ আসনের সাংসদ তানজিম আহমেদ(সোহেল তাজ)। বেশ কিছুদিন পর এ দ্বায়িত্ব থেকে অব্যহত চেয়ে সরকারের কাছে নিজের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তাকে আর সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
বলাচলে রাজনীতি থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন। কিছুদিন আগে হঠাৎ করে আবার মিডিয়ার শিরোনাম হলেন,প্রতিমন্ত্রী থেকে পদত্যাগের পরও কেন তার আকাউন্টে বেতন পাঠানো হচ্ছে সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। কতটা সততা থাকলে,রাজনীতির প্রতি কতটুকু শ্রদ্ধাভক্তি থাকলে,কি পরিমান দেশপ্রেম থাকলে এমন কাজটি করা যায়?ক্ষমতার লোভে,টাকার লোভে যখন দেশের আনাচে কানাচে অহরহ হত্যা,খুন,ডাকাতি,ছিনতাই হচ্ছে আর তখনি টাকার লোভ পরিহার করে সততার এক মুর্ত প্রতীক হয়ে নিজেকে আবির্ভুত করলেন। তিনি অকপটে বলে দিলেন দ্বায়িত্ব না থাকা স্বত্তেও কেন আমার একাউন্টে বেতনের টাকা পাঠানো হচ্ছে?তবে এতে জনগন খুব বেশি অবাক হয়নি,কেননা এমন কোন কিছু কেবল তার কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত নয়। তার শরীরে যে বইছে এক আদর্শ পিতার রক্ত।
যিনিও সততা আর দেশপ্রেমের সাথে রাজনীতি করে গেছেন,তার সন্তান হয়ে যে এর বিরোধী কোন কাজ করা তার মানায় না তা সোহেল তাজ ভালো ভাবেই উপলব্ধি করেছেন। পিতার আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। গত সোমবার ২৩ এপ্রিল আবার মিডিয়ার শিরোনাম হয়ে আবির্ভুত হলেন, সাবেক পি এসকে দিয়ে সাংসদ থেকে পদত্যাগের জন্য পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। আরেক কীর্তি গড়ে নিজেকে নিয়ে গেলেন আরো উচুতে। আজ ২৪ এপ্রিল দৈনিক প্রথম আলোতে তার খোলা চিঠিতে তিনি বিষয়টি নিয়ে বিশদ ভাবে জানিয়েছেন।
বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে এমন নেতার রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো আমাকে ব্যাথিত করেছে,আমার কাতারে হয়ত আরো কেউ থাকতে পারে। আমাকে ব্যাথিত করার পেছনে কারন হল-এমনিতেই বর্তমানে রাজনীতির অবস্থা চরম ভয়াবহ। আর রাজনীতিক অবস্থা ভয়াবহ হলে দেশের অবস্থাও মোটেও ভালো থাকেনা,তাছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতিও জনগনকে খুব বেশি প্রশান্তি দিতে পারছেনা। আইন শৃংখলা রক্ষাকারীরা নিজেরাই আইন শৃংখলা বিনষ্ট করছে,সন্ত্রাস চাদাবাজি লেগেই আছে,সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই, বন্ধ নেই ডাকাতি,হত্যা,শিশু ছিনতাই,আবার নিখোজও হচ্ছে অনেকেই। ছোট বড় যে কোন কারনকে ইস্যু বানিয়ে সময়ে অসময়ে হরতাল ডাকছে বিরোধীরা,হরতালের দিন তো ভাংচুর,গাড়িতে আগুন,পুলিশের সাথে সংঘর্ষ,ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলেই,হরতালের আগের দিনও চলে এসব।
কারো গাড়ি পুড়লে তাদের কি?কেউ নিঃস্ব হলে তাদেরতো কিছু যায় আসেনা, জীবিকার তাগিদে গাড়ি চালানো কোন ড্রাইভার মারা গেলে তাদের কি?ড্রাইভারের পরিবার অভাবে কষ্ট পাবে,তাদের তো কিছু যায় আসেনা। তারা শুধু মাইক্রোফোনের সামনে বড় বড় কথা বলবে,গনতন্ত্র রক্ষার কথা বলবে,…,গনতন্ত্রের নাম গাড়ি পোড়ানো??গনতন্ত্রের নাম মানুষ হত্যা?? নেতা হারিয়ে গেছে বলে দিনের পর দিন হরতাল দিচ্ছেন,আগুনে পুড়ে গাড়ির ড্রাইভার যে হারিয়ে যায়নি, মারা গেল তার কি হবে?তার জন্য তো হরতাল ডাকবেনা,সমাবেশে এক মিনিট নিরাবতাও পালন করবেন না। সাধারন জনগনের জন্য প্রয়োজনীয় ইস্যু নিয়ে তো হরতাল ডাকবেন না,তাদের শুধু হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করছেন,সহজ সরল অবুঝ বাঙ্গালীদের সাথে এক ধরনের প্রতারনায় মেতে উঠছেন। আপনাদের গনতন্ত্র তো জনগনের জন্য না,আপনাদের গনতন্ত্র নেতাদের ভোগ বিলাস,গনতন্ত্রকে আপনারা নেতাতন্ত্রে রুপ দিয়েছেন। দেশের এমন পরিস্থিতি সাধারন মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকেও নিরাপদ মনে করছেনা।
এমন পরিস্থিতি পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে না আসলে দেশের অবস্থা কী হবে একবার ভেবে দেখেছেন?বর্তমান রাজনীতিবিদদের মধ্যেও কেউ কেউ আছেন যারা রাজনীতিকে শ্রদ্ধার সাথে দেখেন,আর সোহেল তাজ তাদের অন্যতম। তিনি যদি তার পিতার আদর্শ ও দেশপ্রেম রক্ষা করতে গিয়ে হার মেনে চলে আসেন তাহলে তা বেমানান মনে হয়,কেননা শুরু থেকেই তার প্রতি সব শ্রেনী পেশার মানুষের অন্যরকম এক ভালোলাগা ও শ্রদ্ধা ভক্তি ছিল। আমার কাছে মনে হচ্ছে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তোরনে সোহেল তাজের মত লোকদেরই বেশি প্রয়োজন। আমার মতে তিনি আরেকটু উদ্যোগি হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হবার দরকার ছিল। তরুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তরুন নেতৃত্বকেই প্রয়োজন।
এটা ঠিক বর্তমান রাজনীতির মাঠ এতটাই কর্দমাক্ত হয়েছে যে একে পরিষ্কার করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু এই কর্দমার বাহিরে থেকে কেউ এসে একে পরিষ্কার করা আরো দূরহ ব্যাপার। এর জন্য কর্দমার ভেতরে থাকা কাউকে আগে অগ্রগামী হতে হবে। আপনার রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো সত্যি আমাদের জন্য খারাপ সংবাদ। দয়া করে আরেকটি বার বিবেচনা করুন!আপনার রক্তে যে একজন সৎ ও আদর্শবান রাজনীতিবিদ পিতার রক্ত বইছে,তাদের হাত ধরে শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনীতি আজ দুষিত হয়ে তার স্বাভাবিকত্ব হারাচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে আপনি হাল ছেড়ে দিতে পারেন না,একে উদ্ধার করার দ্বায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।