অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
একটা জিনিষ খেয়াল করে দেখালাম সেলিব্রিটি হলেই মানুষ দুইটা জিনিষ করে, রান্না করে আর কাপড় সিলায়।
ক্যাম্নে কি? নান্টু ফারুকের দিকে তাকিয়ে বললো।
না দেখ, বাংলাদেশে চ্যানেল কয়টা? এক ডজন তো হইবোই, প্রতিদিন চ্যানেল খুলবি দেখবি কোনো না কোনো সেলিব্রিটি চুলার পাশে রান্না করতেছে। তার সামনে একজন খাড়ায়া আছে, হাসি মুখে কথা কইতেছে। এইটা কমন দৃশ্য একটা।
আর দর্জিগিরির বিষয়টা বুঝলাম না, সেইটা ভাইঙ্গা ক ব্যাটা।
খোঁজ নিয়া দেখ, যারা মিডিয়ায় আছে, তাদের একটা বড় অংশ হোটেল না তো রেস্টুরেন্টের ব্যবসা করে, আর অন্য সবাই হইতেছে ফ্যাশন ডিজাইনার। হয় কস্ট্যুইম ডিজাইন করে নাইলে নিজের বাটিক বুটিক শপ আছে। এর বাইরে অন্য ব্যবসা হলো নাটক আর বিজ্ঞাপন বানানোর ব্যবসা। এইগুলা হইলো স্টারডম।
কাঁচি আর সুঁই নিয়া বইয়া থাকা হইলো আমাদের স্টারডম।
কথা মিথ্যা না। বাংলাদেশে কতজনের বাটিক বুটিক শপ আছে, জমিদারতনয়া থেকে শুরু করে চন্ডালকন্যা সবাই শেষ পর্যন্ত নিজের রুচি অনুযায়ী কাপড় তৈরী করে বেচতেছে। এইটাই ব্যবসা। মানুষ কাপড় এখন লজ্জা ঢাকবার জন্য পড়ে না।
কিংবা রোদ বৃষ্টি আর শীতের কামড় থেকে বাঁচবার জন্য কেউ কাপড় পড়ে না। সবাই কাপড়ের চেয়ে কাপড়ের লেবেলের দাম দিচ্ছে বেশী। যার যেমন সামর্থ্য সেই সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে ব্রান্ডের কাপড় পড়ে।
নান্নু মাঝখান থেকে লাফ দিয়ে পড়লো আলোচনায়- আমারে একটা জিনিষ বুঝায়া দিবি তোরা কেউ, কেকা ফেরদৌসী বলে একজন আছে, বিভিন্ন দেশে গিয়া ছুটা বুয়ার মতো রান্না কইরা বেড়ায়। চ্যানেল আই এর সাগরের বোন হওয়া ছাড়া ওর আর কি যোগ্যতা আছে? কিসের যোগ্যতায় ও এত কিছু করে?
এইসব স্বজনপ্রীতি দোষের না, স্টারের ভাই বোন বোনের ছেলে আর ভাইয়ের মেয়ে, সবাই টিভির স্ক্রীন জুড়ে নাচাকুঁদা করলেও সেটা স্বজনপ্রীতির উদাহরণ হয় না, কিন্তু রাজনীতিকের ছেলে মেয়ে রাজনীতির ময়দানের আশে পাশে হাঁটলেই সেটা স্বজনপ্রীতি হইয়া যায়।
এইসবের কোনো মানে আছে?
ময়না ভাই আমাদের কথা শুনছে মনোযোগ দিয়ে, অন্তত আমাদের এইসব আলোচনা হয়তো ভবিষ্যতের বিনিয়োগ তার। সেও বাসায় গিয়ে হয়তো তার পরিচিত জনকে এইসব গল্প শুনাবে। আমরাও আমাদের পরিচিত মানুষদের মুখে শুনি এইসব গোপনসত্যগুলো। তেমন ভাবেই আমাদের মুখবাহিত এইসব গুজব আর হুজুগের সংবাদ পৌঁছে যাবে ময়না ভাইয়ের পরিচিত মহলে, আমরা এভাবেই তারকাপূজা করি, তারকা আমাদের মুখচর্চায় তারকা হয়ে উঠে। আমরা যার সমালোচনা করছি কিংবা যাকে নাকচ করছি চায়ের আড্ডায় বসে, সেই চায়ের আড্ডায় তার সার্বক্ষণিক উপস্থিতির পূজা হচ্ছে।
মারুফ চায়ের কাপ হাতে বসে আছে এক কোনে, ও এখনও কোন কথা বলে নি। ওর প্রাক্তন প্রেমিকা বর্তমানের মডেল, তাকে নিয়মিত টিভিতে দেখা যায়, এটার দুঃখে ও ইদানিং মনে হয় না টিভি দেখে। সুতরাং আমাদের এই আলোচনায় তার কোনো উপস্থিতি নেই। সে নিরব শ্রোতাও নয়, বরং আমাদের ভেতরে থেকেও একেবারে বিচ্ছিন্ন।
বরং নান্নু আগুণ জ্বালিয়ে দিলো, বুঝলি, বিপাশার একটা নতুন বিজ্ঞাপন দেখায়, দুধের বিজ্ঞাপন।
মারুফ নড়ে চড়ে বসে বললো বিপাশার দুধের বিজ্ঞাপন?
ধুর শালা, তোগো লগে কথা কইয়া কোনো শান্তি আছে। মার্কস গুড়া দুধের বিজ্ঞাপন, পারলে একবার দেখিস। ওরে দেইখ্যাই মনে হইলো আবুল হায়াত কথা কইতেছে মেয়েদের গলায় উইগ পড়ে।
তাইলে তো ভালোই হইলো।
ক্যানো?
নাহ ধর আবুল হায়াতের শিডিউলে গ্যাঞ্জাম হইলে বিপাশা মাথায় উইগ লাগায়া প্রক্সি দিবো।
হ ও যদি ওর বাপের প্রক্সি দেয় তাইলে ওর দর্জির দোকান দেখবো কে?
হ্যায়ও কি কাপড়ের দোকান খুলছে?
কব্বে, তোরা তো এইসব কুনো খবরই রাখলি না।
সোহেল ভাই কোথা থেকে উদয় হইলো বুঝতে পারলাম না , তার বিসিএস রিটেন চলতেছে বলে আমরা কেউই তার সাথে ব্যপক যোগাযোগ রাখি না।
কি খবর সোহেল ভাই, এতদিন পর কোথা থেইক্যা আইলেন?
ধুরো মিয়া রাখো এইসব প্যাঁচাল, বিশ্বের অবস্থা কিরম বুঝতেছো?
সোহেল ভাই মনে হয় বিসিএসের আন্তর্জাতিল পরীক্ষার প্রিপারেশন নিয়ে সেই জড়তা এখনও কাটাতে পারে নি। আজকে সন্ধ্যায় আমাদের আন্তর্জাতিক রাজনীতির কোর্স করতে হবে সোনা মুখে এটা দিব্যি দিয়ে বলা যায়।
ক্যান সোহেল ভাই, দুনিয়ায় কি গ্যাঞ্জাম হইলো?
দুইন্যাটাই তো গ্যাঞ্জাম মিয়া।
নতুন কইরা কি হইবো। ধরো ওবামা। ওর জন্য সবাই মন্দির মসজিদ গীর্জায় প্রার্থনা করলো। সে না কি বদলায়া দিবে যুক্তরাষ্ট্রকে,
কিসের কি, একফোঁটা বদলাইছে দেশটা?
নিজেদের পেটে ভাতের যোগান নাই, দুনিয়ার মানুষরে খাওয়ানোর ঠিকা নিয়া বইয়া আছে হেরা। আর কয় বছর যাইতে দাও, রোগের সময় ঔষধ না পাইয়া সেখানের গরীবগুলা মারা যাবে।
এমনিতেই মরতেছে, ৪ কোটি মানুষ রাতে না খাইয়া ঘুমাইতে যায়, এই দেশের নেতা বোমাবাজির জন্য বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ করে।
এইরকম বর্বর দেশ আর পাইবা না। তারা নিজের মাটিতে সন্ত্রাস পছন্দ করে না, কিন্তু বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাস আর সন্ত্রাসী রপ্তানী করে আর লালনপালন করে ওরাই। দে এক্সপোর্ট টেরোরিস্ট এন্ড টেরোরিজম ইন দি এনটায়ার ওয়ার্ল্ড।
সোহেল ভাই নতুন কিছু হইছে।
হইয়া থাকলে কন। এইসব তো হগ্গলেই জানে যে কিছুই বদলাইবো না। ধরেন দৈত্যের চেহারায় প্লাস্টিক সার্জারি কইরা মাদার তেরেসার মুখ লাগায়া দিলেন দৈত্য কি রক্ত খাইবো না?
হ কথা সেইটাই, কিন্তু নতুন যা করতেছে সেইটার ইফেক্ট কি হবে সেইটা ভাবতেছি, ওবামা কত কি কইলো দুনিয়ার সামনে কানে হাত দিয়ে, কোনো বর্বর ব্যবস্থা তারা টিকায়া রাখবে না, বিভিন্ন গোপন কারাগারে যাদের নির্যাতন করা হইছে, সেইগুলা আমেরিকার ভাবমুর্তি নষ্ট করছে, এই হারানো ভাবমুর্তি ঠিক করতে হবে। এখনও ৫ মাস যায় নাই, পুরা পাল্টি খায়া গেছে ও।
ওরা থাকুক না ওদের নিয়া।
ওরা কি আমাদের নিয়া কোনো চিন্তা করে? আমরা ওগোরে নিয়া এত ফালাফালি করি কেনো?
তোগোরে নিয়া এই এক সমস্যা। তোরা না বুইঝ্যাই ফাল পারোস। ধর আমাগোর দেশটা কি তোর মনে হয় আওয়ামী লীগ চালায়। হেরা তো সামনের পুতুল নাচের পুতুল। হেগোরে নাচায় কারা।
ঐ আমেরিকা আর ব্রিটেন, হেগোর অবস্থা না বুঝলে আমাগোর অবস্থা বুঝোন যাইতো না। ধর মতিয়া চৌধুরী, হ্যায়ও দেখ মরিয়ার্টির পাশে খাড়ায়া ছবি তুলতেছে হাসি মুখে, সেমিনারে গিয়া কইতেছে হাইব্রীড বীজ ভালো না, এইগুলা বন করো, আর মরিয়ার্টিরে কইতেছে কৃষিতে সহায়তা দাও, হাইব্রীড বীজের প্রযুক্তি দাও। এইভাবেই চলে সব কিছু।
তো আপনের কি পুন মারছে আমেরিকা? আপনি এত বেচেইন কেনো ভাই কন তো?
আমারে মারে নাই, আর মারতে যেনো না পারে সেইজন্যই এত চিন্তা। তোমরা হইলো ভাবের জাতীয়তাবাদী পাগল, পুন মাইরা ফকফকা কইরা ফেলাইলেও হুঁশ হইবো না।
মাইরা চইলা যাওনের পরে দেখবা ট্রাক ঢুকতেছে আর বাইরাইতাছে, তুমি গান গাইতাছো আনন্দে।
ফারুকের সাথে সোহেল ভাইয়ের এই বিতর্ক আমরা উপভোগ করতে পারি না। যাই হোক নাই হোক সোহেল ভাই আমাদের সম্মানিত বড় ভাই। অন্য পাড়ার পোলাপান আইসা এইসব কইয়া যাইবো, সেইটা আমরা হজম করুম না।
আব্বে ফারুইক্যা তুই অফ যা।
একটু সোহেল ভাইরে ফ্লোর দে।
আপনের খবরই তো দিলেন না মিয়া। পরীক্ষা কেমন হইলো
হইলো আর কি কোনো রকম। দেখি কি হয়।
ক্যান, প্রশ্ন কঠিন হইছে।
আরে প্রশ্ন কঠিন কইরা কি ওরা বিপদে পড়বে? ওগোর দরকার কেরানী, যার জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হবে একটা সরকারী কলোনিতে বৌ বাচ্চা বাপ মা নিয়া থাকা। ঈদের বোনাস আর পূজার ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে যাওয়া। একটু উচ্চপদস্ত হইলে ঘুষ খাইবো। এর বাইরে যাগোর উচ্চাশা নাই, তারা খুব বেশী কষ্ট কইরা বিসিএসএ পরীক্ষা দেয় না।
তাইলে আপনি?
আমার তো দেশের প্রশাসনটাকে বদলানোর ইচ্ছা আছে।
কিন্তু পরিস্থিতি যা দেখতেছি, সেই উৎসাহ আর নাই। তোগোরে একটা উপদেশ দেই, মনে রাখিস
আর কয়েক দিন, এরপরে তোগোরেও চাকুরির খোঁজে রাস্তায় নামতে হইবো।
উপদেশ বিনামূল্যে দেওয়া যায় বলে সবাই বিতরণ করতে চায়, তবে সোহেল ভাই অনেক ভেবেচিন্তেই বলে, সুতরাং কথা শোনা যায়ই।
আমরা সবাই বললাম বলেন সোহেল ভাই।
শুন যখন ইন্টারভিউ দিতে যাবি, সার্টিফিকেটের ব্যাগের ভেতরে একটা পকেটে সব সময় একটা রেজার নিয়া যাবি।
আর একটা রুমাল, একটা ছোটো বডি স্প্রে।
তালিকা দেখে আমরা সবাই হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম সোহেল ভাইয়ের মুখের দিকে।
ক্যানো সোহেল ভাই।
ঢাকা শহরের অবস্থা দেখছিস? এখন? ধর ঢাকা শহর এখন ৫০ হাজার গাড়ীর লোড নিতে পারে, মানে যে পরিমাণ রাস্তা আছে ঢাকা শহরে, তাতে এর বেশী গাড়ী রাস্তায় নামালে গাড়ী চড়ে যাওয়া আর শামুকের পিঠে চড়ে যাওয়া একই বিষয়।
তো তোরা যখন চাকরীর বাজারে যাবি ততদিনে নতুন আরও ৫০ হাজার গাড়ী নামবে ঢাকা শহরে।
তখন ইন্টারভিউ দিতে বাহির হবি, যাবি কিসে? রিকশায় না তো বাসে। তোগোর তো নিজের গাড়ী নাই।
সকালে শেভ কইরা বাহির হবি, অফিসে পৌঁছাইতে পৌঁছাইতে দাড়ি বড় হইয়া যাবে। তারপর ধর শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও বাড়তেছে শহরে, সবাই মফস্বল থেকে ঢাকা শহরে আসে চাকরীর খোঁজে। প্যান্টের পাছা ছিড়া কিন্তু বগলে একটা প্লাস্টিকের ফাইল, সেই ফাইলে এমবিএর সার্টিফিকেট।
হাজারে হাজারে মানুষ এমবিএ করতেছে, যার প্রয়োজন তারও এমবিএ আছে, যার কোনো দরকার নাই সেও এমবিএ করতেছে। সময় যাইতে দে , এরপর একদিন দেখবি সিক্যুরিটি গার্ডের চাকুরির বিজ্ঞাপন দিবে, সেখানেও শিক্ষাগত যোগ্যতা দিবে এমবিএ।
আমরা মাথা নাড়তেও চাই না এই কথার পরে। আমাদের ভেতরেই দুজন এমবিএ করতে চাইছে। সহজে চাকরি পাওয়ার জন্য এমবিএর বিকল্প নাই।
তো অফিসে পৌঁছায়া দেখলি আরও ১০ জন অপেক্ষা করতেছে। সেইসময় বাথরুমে গিয়া শেভ কইরা ফেলবি। আর বাপের তো এসি গাড়ী নাই। শেভ কইরা একটু বডি স্প্রে করবি, তাহলে গা দিয়া পচা ঘামের গন্ধ বাইরাইবো না। এইগুলা শুইনা রাখ।
গরিবের কথা বাসী হইলে ফলবো।
আমরা ভবিষ্যতের অন্ধকার জীবনের কথা চিন্তা করে শিউড়ে উঠি। আমাদের জন্য এই ভবিষ্যতই মনে হয় অপেক্ষা করতেছে।
প্রতিদিন সকালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। যাওয়ার পথে দেখি, একদল মানুষ টুকরি নিয়া রাস্তায় দাঁড়ায় আছে।
ওরা দৈনিক শ্রমিক। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে। কাজের খোঁজে, শহরে বড় বড় এপার্টেমেন্ট উঠতেছে। সেইখানে জোগালির কাজ করে। শহরে দিনে রাতে যেকোনো সময়েই এইসব মানুষের ভীড়।
তারা যা পাচ্ছে তাই খাচ্ছে। দিনে যতটুকু পরিশ্রম করে তার তুলনায় খাওয়ার পরিমাণ কম , এক একজনের পেশল হাতের শিরা বের হয়ে থাকে। পোড় খাওয়া চেহারা সবার। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। ক্ষৌরি করে রাস্তার পাশের দোকানে বসে।
টুলের উপরে একটা কাঁচি আর একটা ক্ষুর নিয়ে শৌখিন নাপিত বসে থাকে।
কিংবা এরা অপেক্ষা করে হাট বারের, হাট বারে হাটে গিয়া দাড়ি কামায়া আসে। সারা সপ্তাহ কিংবা মাস অপেক্ষা করে একবার দাড়ি কামানোর জন্য। এদের মুখ দেখি প্রতিদিন।
সোহেল ভাই মনে হয় আমার মনের কথাটাই পড়ে ফেললো।
শুন বাংলাদেশের সমস্যা কি জানিস, কোনো পরিকল্পনা নাই। মানুষের সৃষ্টিশীলতা নসিমন আর শ্যালো নৌকা তৈরীতে শেষ। শিক্ষার কদর নাই, শিক্ষকের কদর নাই এখানে। ধর ১ লাখ মানুষকে ডাটা এন্ট্রির ট্রেনিং দিলো, এখন বলতেছে তাদের কাজ হবে পৌরসভায় চেয়ারম্যানের কম্পিউটার অপারেট করা। বাংলাদেশে পৌরসভার সংখ্যা কত?
সেইখানে কতজন চাকরী পাবে? ১ হাজার।
এরবেশী ও চাইলেও নিতে পারবে না। বাকী ৯৯ হাজার প্রশিক্ষিত মানুষ অপেক্ষা করবে ৪ বছর। ৪ বছর পর আবার ভোটার তালিকা হবে, তখন তারা ডাটাএন্ট্রির কাজ করবে?
দেখ যেই মানুষটা সকালে কান্ধে কোদাল ফেলে রাস্তায় খাঁড়ায়া থাকে, সেও জানে তার একটা লক্ষ্য আছে, একটা যোগ্যতা আছে। সে মাটি কোপাতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন সকালে একটা প্লাস্টিকের ব্যগে লুঙ্গি আর গেঞ্জি নিয়ে যেই ছোকরারা ঢাকা শহরে আসে পয়সা কামাই করতে তাদের সেই অভিজ্ঞতা কিংবা যোগ্যতা নাই।
তারা শহরে আসে রিকশা চালাইতে।
তাদের জানা আছে, তারা শহরে আসবে রিকশা চালাবে। পয়সা পাবে। এইটার জন্য কোনো মেধা লাগে না। মস্তিস্ক ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নাই এখানে।
মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসতেছে। রিকশা চালাচ্ছে, কি লাভ হচ্ছে এতে। লোকজনের পায়ের পেশী সবল হচ্ছে, কিন্তু একটা দেশকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন মস্তিস্কের ব্যায়াম, মস্তিস্কের পেশী সবল হলে দেশ উন্নত হয়। এখানে অসংখ্য মানুষ, যাদের পায়ের পেশী শক্ত। তারা রিকশার প্যাডেল মারতে পারে, আর প্রয়োজনে পালাতে পারে।
এই দিয়া তো দেশের উন্নতি করতে পারবি না। এইভাবে হয় না বুঝলি।
বহুজাতিক বিজ্ঞাপনের আলো নেই গলিতে। আমরা যখন একমুখ অন্ধকার নিয়ে যে যার বাসার পথে রওনা দিলাম, তখন আমাদের চোখেও কোনো আলো নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।