আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাথায় আঘাতে নয় অবহেলা

সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিদিন ১০-১২ জন করে মারা যান। এমন কোন দিন নেই যেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা যান না। প্রাণহানি বা পঙ্গুত্বের একটি বিশেষ কারণ হল মাথা বা মেরুদন্ডের আঘাত। শুধু আমাদের দেশেই নয় বিভিন্ন উন্নত দেশেও মাথায় আঘাতের কারণে প্রতিবছর লাখ লাখ লোক মারা যায়। এটিকে সামনে রেখে প্রতিবছর ২০ মার্চ বিশ্ব হেড ইনজুরি সচেতনতা দিবস পালন করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় এবারও তা পালিত হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় যত লোক মারা যায় তার বেশিরভাগই মাথা বা স্পাইনে আঘাতের কারণে। মাথায় আঘাত প্রাপ্তরা মারা যান আমাদের অজ্ঞতার কারণে, টানাহেঁচড়ার জন্য। প্রথমেই লক্ষ রাখতে হবে আহত ব্যক্তির শ্বাস প্রশ্বাস ঠিক আছে কি না। আহত ব্যক্তির শ্বাসাপথ পরিষ্কার করার পরও যদি শ্বাস না নেয় তবে আহত ব্যক্তির মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করতে হবে।

অজ্ঞান ব্যক্তিকে পুরোপুরি চি? করে শুয়ে দেয়া বিপদজনক। এ কারণে জিহ্বা পেছনে উল্টে গিয়ে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ জন্য চামচ জাতীয় কিছু মুথে প্রবেশ করিয়ে রাখলে এ সম্ভবনা কমে যায়। যদি আহত ব্যক্তি বমি করতে থাকেন তাহলে শুধু মাথা কাত না করে মাথা, ঘাড় ও দেহ কাত একসাথে কাত করতে হবে। এতে করে বমি ফুসফুসে প্রবেশ করবে না।

মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে যত দ্রƒত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে। মেরুদন্ডে ক্ষেত্রে ঘাড়ে আঘাত পাওয়া ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ঘাড় যদি খানিকটা শক্ত থাকে বা আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া যায় তাহলে আহত ব্যক্তিকে ঘাড়ে কোন অবস্থায় নাড়া যাবে না। এতে স্নায়ুরুজ্জু ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে তাৎক্ষনিক মৃত্যু হতে পারে। মাথার নিচে বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়।

মাথা সামনের দিকে না ঝুকে পেছনের দিকে ঝুকে থাকা নিরাপদ। সেজন্য একটা তোয়ালে বা গামছা গোল করে পেচিয়ে ঘাড়ের নিচে দেয়া সুবিধাজনক, যেন ঘাড় পেছনের দিকে ঝঁকে থাকে। তবে মাথার নিচে অবশ্যই কোন কিছু দিবেন না। অনেকে আহত ব্যক্তিকে ধরে জোরে ঝাকাঝাকি করেন। মাথা ধরে ডাকাডাকি করেন।

এটা কিন্তু মারত্মক হতে পারে। মেরুদন্ডে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ওঠানো বা নামানোর ক্ষেত্রে ৬-৮ জন একসঙ্গে ধরে সমান রেখে শোয়াতে হবে। একটি গাছের গুলাইকে যেভাবে স্থানান্তর করতে হয় সেভাবে করতে হবে। বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে মাথা ও ঘাড়ের দিকে।

ঘাড়ের দু পাশে দুটো হাত দিয়ে স্থির করে নিতে হবে। মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে পরিষ্কার কোন কাপড় দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে রাখতে হবে। কোন কাপড় ভিজে গেলে সে কাপড় না সরিয়ে অন্য একটি কাপড় দিয়ে চেপে ধরতে হবে। যদি খুলির কোন হাড় ভেঙে যায় তাহলে বেশি চাপ দিয়ে ধরা যাবে না। এতে করে মস্তিষ্কে আঘাত লেগে আরোও সমস্যা হবে।

মাথা ফুলে গেলে বরফ কাপড়ে পেচিয়ে ঘন্টায় ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখতে হবে। মাথায় আঘাত লাগলে পুরো ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। অনেত সময় দেখা যায় আহত ব্যক্তি আঘাত লাগার পর পুরোপুরি ভালো হলেও ২-৩ ঘন্টা পর বমি করতে পারে, অজ্ঞান হতে পারে। এজন্য কেউ ঘুমালে তাকে ২-৩ ঘন্টা পর জাগিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতে হবে যে ঠিকমত উত্তর দেয় কিনা। এ সময় কোন কিছু না খেতে দেয়াই ভালো।

বিপদচিহ্ণ গুলো : মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে নিচের লক্ষণগুলো খেয়াল রাখতে হবে - চোখের মনি অস্বাভাবিকতা, তীব্র মাথা ব্যথা, নাক,মুখ ও কান দিয়ে তরল পদার্থ বা রক্ত নির্গত হওয়া, চোখের চারপাশ কালচে হওয়া, বেশি ঘুম ঘুম ভাব, অজ্ঞান হওয়া বা কোমা, অস্থিরতা বা অস্বাভাবিক আচরণ, বার বার বমি করা, শ্বাস-প্রশ্বাস কমে যাওয়া, খিঁচুনি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, কথা বলতে সমস্যা হওয়া, চোখে সমস্যা হওয়া। এ ধরণের সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে হাসপাতালে নিতে হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.