আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শর্তে রাজি

আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। কিস্তি- ২১ সরাসরি মতি ভাইয়ের দপ্তর গেলাম। আগে থেকে তাকে চেনা ছিল না। প্রথম দেখলাম।

হাস্যোজ্জ্বল মতিভাই সামনের একটা চেয়ার দেখিয়ে বললেন, বসুন। বসলাম। মতি ভাই হাসি মুখে বললেন, কি করতে চান? বললাম: বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টিং। কাজ করার শর্ত- ভালো রিপোর্টিং পারলে রাখবেন, না পারলে নি্জেই বিদায় হবো। বলতে হবে না।

শর্তে রাজি মতি ভাই। আমার আরেকটা শর্ত, যা লিখবো, সত্য লিখবো, কিন্তু এ সত্য লেখনি আপস করে ছাপা বন্ধ করা যাবে না। মতি ভাই হাসলেন। বললেন, শর্তে রাজি। প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হিসাবে বললেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটা রিপোর্ট করেন।

মতি ভাইয়ের অফিস থেকে বের হলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয সম্পর্কে আমার জানা খুবই কম। তবুও বন্ধুরা যারা হলে থাকে তাদের সাথে আলাপ করতে থাকলাম। চার দিন খেটে একটা রিপোর্ট তৈয়ার করলাম। ২৭ নভেম্বরের এক বিকালে হাতে লেখা রিপোর্টটা তুলে দিলাম মতি ভাইয়ের হাতে।

তার আগে সুমন ভাইকে দেখালাম। সুমন ভাই তখন মানবজমিনের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার। মতিভাই পুরো রিপোর্ট না দেখে বললেন, মতি ভাইকেই দাও। উনি দেখবেন। মতি ভাই রিপোর্টটা হাতে নিলেন।

বললেন, চা খান। বিনয়ের সাথে না করলাম। বললেন, লেখাটা ছাপা হলে আপনার চাকুরি হবে। না হলে নয়। আমি সাঁয় দিলাম।

পরের দিন মানবজমিন দেখলাম। ছাপা হলো না। তার পরের দিনও না। তার পরের দিন প্রথম পৃষ্ঠায় একটা ঘোষনা দেখলাম কাল থেকে পড়ুন - ঢাবির অবস্থা নিয়ে দু পর্বের প্রতিবেদন। তবুও অপেক্ষা ফুরোয় না।

তার পরের দিন সকালে শাহবাগে মাবনজমিন হাতে নিলাম। দেখি, চতুর্থ পৃষ্ঠায় আমার রিপোর্ট। হেডলাইনও ঠিক রাখা হয়েছে। অভিভূত হলাম। চাকুরী তাহলে হচ্ছে।

মতি ভাইয়ের দপ্তরে গেলাম। এ দিকে ক্লাশে শুনলাম মানবজমিনের এ রিপোর্ট নিয়ে পলিটিক্যালি প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। আমাদের ক্যাডার বন্ধুরা এ নিয়ে হই চই করছে। কে এই সাংবাদিক তাকে খোঁজা হচ্ছে। মারধর করা হবে বলে পরের দিন শুনলাম।

আমি কোনো পাত্তা দিলাম না। কারণ আমি এক শব্দও মিথ্যা লিখিনি। ওই সময় রিপোর্টটি তৈরীতে আমাকে সহায়তা করেছিলেন যুগান্তর ফয়জুল্লা মাহমুদ ভাই। এখন এনটিভিতে আছেন। বাকিটা আমার বন্ধুদের কাছ থেকে নেয়া।

আমি নিজে শহীদ জিয়ার রাজনীতির ভক্ত। আমার হাতেই তার দলের ছাত্র সংগঠনের নৈরাজ্য নিয়ে রিপোর্ট দেখে অনেকেই ক্ষুব্ধ হলেন। হতেই পারেন। রিপোর্ট দু পর্ব ছাপা হওয়ার পর মতি ভাইয়ের দপ্তরে ফের গেলাম। উনি বললেন, রিঅ্যাকশন কি।

হেসে বললেন, ভালো রিপোর্ট হয়েছে। আজকের খবর কি? বললাম একটা মিছিল দেখেছি। আর কোনো খবর নেই। তবে আমার কাছে অশ্লীল সিনেমা নিয়ে একটা রিপোর্ট আছে। আপনি চাইলে দিতে পারি।

প্রথম আলোর জন্য সব সংগ্রহ করেছিলাম, কিন্তু পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিতে পারিনি। বললেন, দেন। পরের দিন ব্যাক পেজে লিড। তারপর এক দুপুরে গেলাম। বললেন, আরেকটা রিপোর্ট করেন্ ।

করলাম। ডিসেম্বর থেকে নিয়োগ চূড়ান্ত করলেন। বেতন কত চান? বললাম, আমি কাজ করতে চাই। বেতন যা দেন। ২৫০০ টাকা‌ 'মাহিনা' ধরলেন।

২০০১ সালে এটাকা কম বলা যাবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.