১) আচ্ছা আমরা কোন পক্ষের আত্নীয়কে ভালবাসি?
পিতার পক্ষের আত্নীয়কে না মাতার পক্ষের আত্নীয় কে?
আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে যেটা জানি সেটা হল, মাতার পক্ষের আত্নীয়-স্বজনকে বেশি আপন মনে হয়।
আর পিতার পক্ষের আত্নীয়ের সাথে কেমন জানি শত্রু শত্রু ভাব।
আমার খুব কাছের বন্ধু, তাদের পারিবারিক বন্ধন এত সুন্দর দেখলেই ভাল লাগে।
তার নানীর বাড়ির আত্নীয়-স্বজন অনবরত তাদের বাসায় আসতে থাকে। সেও খুব মজা করে।
কিন্তু অনেকদিন পর তার ফুফাতো ভাই, এস.এস.সি পরীক্ষা্ শেষ করে তাদের বাসায় আসলো। তার সাথে কথা বললাম, অমায়িক আচরণ। কিন্তু বন্ধু বলল, সে নাকি একটা অভদ্র বেয়াদব।
সে কিছুই করত না, চুপচাপ বসে টিভির রুমে টিভি দেখত। কথা বলার মানুষ না থাকলে ঘরে বসে টিভি দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা।
তার কোন দোষ দেখলাম না। মানুষ আত্নীয়ের বাসা বেড়াতে আসে কিছু সময় সুখে কাটানোর জন্য। কিন্তু ছেলেটি মনে সুখের বদলে দুখ নিয়ে গেছে। বন্ধুর প্রতি খারাপ লাগা লাগতে লাগল।
এখন প্রশ্ন কেন এমনটা হয়?
বড় ভাই এর কাছে জানতে চাইলাম-
তিনি বললেন- :” ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন।
যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ,
স্বতী নারীর গুজব কথায় মারাত্নক ব্যাধি।
কান কথায় স্বামী হারায়, হারায় ঘরবাড়ি। ”
একটা সংসারে একটা মেয়ে সারাদিন বাসায় থাকে, বাসার কাজ-কর্ম করে, সন্তানদের দেখাশুনা করে। একটা সংসারের ৮০% কাজ একটা মেয়েকে একাই সামলাতে হয়। বাকি ২০% কাজ পুরুষ করে।
সে শুধু ইনকামের পথে থাকে। পরিবারকে খুব কম সময় দিতে পারে। সে তার স্ত্রীর উপর পরিবারের সকল দায়িত্ব ছেড়ে দেয়, ফলে স্বামী মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলে। এখানে বাসর রাতের বিড়াল মারার থিওরিও কাজ করবেনা।
একটা শিশুর যখন মানসিক বিকাশ ঘটে তখন, মা হচ্ছে প্রধান পথ পদর্শক।
মা, তিনি সব সময়, তার বাবার বাড়ির গুণগান গেয়ে যান, আর শ্বশুড় বাড়ির ভুল ধরতে থাকেন। কথায় কথায় মা, তার বাবা-ভাই এর গুণকীর্তন শুরু করেন। সবসময় চেষ্টা করেন নিজেদের বাপ-ভাই, স্বামীর বাড়ির লোকদের চেয়ে অনেক উপরের। কিন্তু কোন দিন ভুল করেও স্বামীর পক্ষের কোন আত্নীয়ের সুনাম মুখে নিবেনা। ফলে শিশুবেলা থেকে বাবার বাড়ির আত্নীয়ের প্রতি একটা ভাল না লাগার ভাবটা চলে আসে।
সম্পর্কের মাঝে একটা গ্যাপ সৃষ্টি হয়।
অনেকে বলেন, যে সম্পত্তির কারণে এটা হয়। এটা কিন্তু কথা নয়।
কারণ আমার রক্ত, আমার বাবার বাড়ির আর সব লোকের রক্ত একই। সেখানে তো সর্বোচ্চ পর্যায়ের টান থাকার কথা।
কিন্তু তারপরও সেখানে একটা বিরাট গ্যাপ রয়ে গেছে। কিন্তু নানার বাড়ির সাথে সেই রকম মিল-মহবত। কোন গ্যাপ নাই। নানার বাড়ি নিয়ে কিছু বললে মেজাজ গরম হয়ে যায়। কিন্তু দাদার বাড়ির প্রতি বিদ্বেষ জমা থাকে।
এখান থেকে শত্রুতা সৃষ্টি হয়, অপরাধ প্রবণতা সৃষ্টি হয়। ফলে পারিবারিক বন্ধন যেটা আমাদের আগে দরকার সেটাই ভেঙে যাচ্ছে।
বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবা অসহায় হয়ে যায়। তাদের দেখাশুনা করার কেউ থাকেনা। সমাজ ব্যবস্থা থেকে দিন দিন সুন্দর মন-মানসিকতা হারিয়ে যাচ্ছে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের জীবনে বাবার পক্ষের আত্নীয়ের সাথে আমাদের একটা অটুট বন্ধন দরকার।
মা-বাবা দু’জনকেই এটা বুঝতে হবে, সন্তানদের সাথে বাবার একটা বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। সন্তানকে অনেক সময় দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ সংসার নারীর গুণে নয়, পুরুষের গুণেই সুখী হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।