অনেক দিন ধরে ভাবছি গল্প লিখব। এটা সেই ইচ্ছা শক্তির একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস।
প্রথমেই আমার সম্পর্কে কিছু বলে নেই। আমি ঢাকায় একটি প্রাইভেট ভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। হোম টাউন ময়মনসিংহ।
পলিটিক্যাল ফ্যামিলির ছেলে হিসেবে রাজনীতির দিকে ঝুঁকটা বেশী।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। আমি ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের বিষয়ে একটু লাজুক। মেয়েদের সাথে তেমন কথাবার্তা বলতাম না। তাই শত ইচ্ছা থাকা সত্যেও মনের মানুষ তখনও পাওয়া হয়নি।
কিন্তু একজন মনের মানুষ,যাকে মন ভরে ভালবাসা জায়,এমন একজনের অভাব ফিল করতাম। সে সময়ে এ ইচ্ছাটা প্রবল হতে থাকে।
সেমিস্টার ফাইনাল শেষে একবার ময়মনসিংহ বাসায় যাই ছুটি কাটাতে। একদিন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছোট বোন তার সব বন্ধুদের সাথে তোলা ছবি দেখাচ্ছিল। হঠাৎ একটি মেয়ের দিকে চোখ আটকে যায়।
সে খুবই সুন্দরী,বিশেষ করে যে জিনিসটি ছবিতে ফুটে উঠেছিল তা হল শান্ত চেহারার একটা মেয়ে। লাল শাড়ি পরা। লম্বা চুল। বোনকে জিজ্ঞাস করে নাম জানি তন্বী। আব্বুর রাজনৈতিক এক সহকর্মীর মেয়ে।
বোনের ডাইরী থেকে কোনভাবে তন্বীর ফোন নাম্বারটা নেই। ঢাকা এসে খুব মনে পড়ছিল তন্বীকে। একদিন ওই নাম্বারে ফোন দেই ধরে ওর আম্মু। ফোন রিসিভ করলে কোন কথা বলি না। ওর আম্মু বকাঝকা করত।
আমি চুপচাপ শুনতাম। এক দুই মিনিট হলে কেটে দিতাম। এভাবে কিছু দিন চলল। একদিন হঠাৎ আমার ফোন একটা মিসড্ কল এল তন্বীর আম্মুর নাম্বার থেকে। আমি ব্যাক করে কে বললে ওই পাশ থেকে বলে আমি তন্বী।
প্রথমেই আমাকে বলে ঐ নাম্বার এ অনেক আজেবাজে ফোন আসে। ওর আম্মু কিছু বললে ওই পাশ থেকে শুরু হয় গালাগালি। আমি সে রকম কিছু করি নি বলে ধন্যবাদ দেয়। আমি তখন খুশীতে আত্তহারা। এরপর আমার পরিচয় জানতে চায়।
আমি আমার পরিচয় গোপন করে তরু নাম নিয়ে কথা বলি। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ফোন দিত। একসময় ওকে ভাললাগা ও ভালবাসার কথা বলি। নানা অজুহাতের পর একসময় ও রাজি হয়। পরে একদিন আমার সত্যি পরিচয় দেই।
তাতে ও খুব লজ্জা পায়। শর্ত দেয় আমার ছোটবোনকে এখনই কিছু বলা যাবে না। যাইহোক এসব মেনে নিয়ে দুজন প্রেমের ট্রেনে ওঠলাম। পরে বলেছিল আমার ভয়েস নাকি তার অনেক ভাল লেগেছিল। যাই হোক অনেক গভীর প্রেমে হাবু ডুবু।
ওর আব্বু আম্মু ঘুমিয়ে পড়লে ফোন চুরি করে কথা হত প্রায় সারারাত। কত স্বপ্ন,কত ভালবাসা দিন গুলো সুখময় হয়ে ওঠে। মান অভিমানের মধ্যে ভালবাসার দিনগুলো প্রানবন্ত হয়ে উঠছিল। তখন রোজা শুরু হয় । আমাকে রোজা রাখতে বলত,সিগেরেট কম খেতে বলত।
আরও কত কি।
ঈদের ছুটি। ময়মনসিংহ বাসায় গেলাম। কিন্ত দেখা করার সুযোগ নেই,কারন ওকে একা কোথাও যেতে দেওয়া হতো না। একদিন বলল ওর আম্মুর সাথে ইফতার এর পর শপিং এ যাবে আমি যেন ওর বাসার সামনে থাকি।
আমি যথারীতি ইফতারের পর নতুন বাজারে ওর বাসার সামনে অপেক্ষায় থাকলাম। এক সময় ও বের হয় সাথে ওর মা। রিকশা নেয়। আমিও একটা রিকশা নিয়ে পিছনে জাই। গাঙ্গিনারপাড়ে এসে সিউর হয় আমিই তার স্বপ্নের মানুষ।
রিকশা থেকে নেমে একটু সামনে এগুতেই ভিড়ের মধ্যে সাহস করে ওর হাতটা ধরে সাইডে নিয়ে যাই। পাঁচ মিনিট কথা হল। আমি ওর হাতটা পাঁচ মিনিটই ধরে রাখলাম। ও লজ্জা আর আবেগপ্রবন হয়ে শুধু লাজুক হাসি হাসে। পরে বাসায় চলে যায়।
বাসায় বলে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিল। এরপর এল ঈদের দিন। ঈদের দিন সারা দিন আমারা সাথে ঘুরে কাটালাম। দুজনে হাতে হাত রেখে এগ্রিভার্সিটির বোটানিক্যাল গার্ডেনে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ঘুরলাম। সন্ধ্যার আগেই ওকে বাসায় পৌঁছে দেই।
ওর বাসায় জানত বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গেছে।
ওই দিনের পর থেকে ওর কোন ফোন পাই না। আমি দিলেও কোন রেসপন্স করে না। কতো না চেষ্টা করলাম একবার কথা বলার জন্য। ওর বান্ধবীদের মাধ্যমে,ওর কাজিনদের মাধ্যমে।
কিন্ত ও কোন কথাও বলবে না। সবাইকে শুধু একটা কথাই বলে ওর আম্মু জেনে গেছে। প্রায় ৫ মাস যাবৎ কথা হয় না। কিছুদিন আগে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৪/৫ দিন পর ওর এক কাজিনের নাম্বার থেকে ফোন করে বলেছিল আমার অনেক প্রবলেম আমি আর কথা বলা বা এ সম্পর্ক রাখতে পারব না । এখন তাই পসিবল না।
আমার ফল্ট কি?বলতেই ফোন কেটে দেয়। আজ পর্যন্ত আর কোন কন্ট্রাক হয় নি। মাঝে মধ্যে ওর কাজিনরা ফোন দেয়। তাদের একটাই প্রশ্ন করি আমার অপরাধ কি?????????
এখন ও এই নিঃসঙ্গতার মাঝে ঐ একটি প্রশ্নের উত্তর খুজে বেরাই।
(((((((((((এর আগে এই গল্পটি FACEBOOK PAGE:ভালোবাসার ডাকপিয়ন এবং কিছু আবেগ ও ভালোবাসার গল্প দিয়েছিলাম...))))))))))))))))))
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।