আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যানেইডিয়ান বুদ্ধির ঢেকি(বলদ): ডঃ ইউনুসের ইমেজ মুজিবের হিমালয়ের উচ্চতাকেও কবে অতিক্রম করছে তা জানেই না!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ২০০০ সালের বেশ কয়েক বছর আগে জার্মনীর বাদেনভুয়ের্টেমবার্গ প্রদেশে ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠান। সারা বিশ্ব হতে অনেক গণ্য মান্য, স্কলার, ধনী, শিল্পপতি হাজির। কেউই জানে না যে কে এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি! তারপর যখন অনুষ্ঠানের পরিচালক যখন অত্যন্ত হাস্যজ্জোল মুখে ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুস তখন উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে দেখল। এটা শুধু ডৎ ইউনুসকে নয় যেন পুরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি! একজন বাংলাদেশী হিসেবে এই খবরটি পড়তে পরে খুবই আনন্দিত। সেই এরশাদের আমল হতেই গ্রামীণের খ্যাতি ছড়িয়ে পরে।

তারপর স্নায়ু যুদ্ধোত্তর বিশ্বে তথা ১৯৯১ এর পর হতেই ডঃ ইউনুস কিংবদন্তীতে পরিণত হন। বিশ্বের বহু দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী তথা রাষ্ট্র প্রধান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি হয়ে উঠেন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যাক্তিত্ব। আন্তর্জাতিক মিডিয়া রয়টার্স, বিবিসি, সিএনএন, এএফপি, ডয়েশে ভেলে, টাইমস, ওয়াশিংটন পোষ্ট, গার্ডিয়ান, ইকোনোমিষ্ট সহ বিখ্যাত সংবাদ ও প্রচারের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রায়শই উনাকে নিয়ে রিপোর্ট করে। সেই তখন হতেই সপ্তাহ লেগে যেত উনার সাথে এপয়ন্টমেন্ট নিয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন সেই ১৯৯৫ সালেই বলেছেন কেন এখন পর্যন্ত ডঃ ইউনুস নোবেল পুরস্কার পেলেন না, তিনি তাতে বিস্মিত! এরও অনেক পরে ২০০৬ সালে অবশেষে উনাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হল।

যদিও অর্থনীতিতে না হয়ে শান্তির জন্য তবুও তিনি একটা কেন ২/৩ নোবেল পুরস্কারও উনার ক্ষুদ্র ঋণের আইডিয়ার কাছে কিছুই নয়। গ্রামীণ ব্যাংকটাকে সেই ১৯৭৬ সালে মাত্র একশরও কম ডলার বিনিয়োগ করে আজকে তার পুজি কয়েক বিলিয়ন ডলার। এই সবই ইউনুস সাহেবের মেধা ও পরিশ্রমের ফসল। বস্তুত ঐ সময় হতে ব্রাক সহ বেসরকারী খাত কে অনুসরণ করেই বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন হয়। তারপর যেই নোবেল পুরস্কার পেলেন আর সবাই খুশী হলেও হাসিনা ও আওয়ামী-বাকশালী গং শুরু হতেই খুশী হতে পারল না।

তাদের ক্ষোভ কেন ডঃ ইউনুস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন? এটা বাংলাদেশ হতে প্রথমে স্রেফ হাসিনার পাওয়ার কথা! সহজ কথায় জ্বলে পুড়ে ছাড় খার। এমনও বলল যে কেন ইউনুস মুজিবের নাম নিয়ে তাকে স্মরণ করল না? বস্তুত বাংলাদেশের কি কোন বাধ্যতামূলক আইন আছে যে কথায় কথায় মুজিবের নাম নিতে হবে? এই সবই ২০০৭ এর ১/১১র বেশ কয়েক মাস পূর্বের কথা! এখন ১/১১র পরে যদি বিদেশীরা তাকে রাজনীতি করতে বলে অথবা তিনি নিজেই আগ্রহী হন এটা কি খুব দোষের হল? আর মাইনাস টুর ফর্মূলা কিন্তু উনি করেননি বরং বিএনপি ও আলীগের কিছু বাটপার শ্রেণীর শীর্ষ নেতারাই জড়িত। এটা জানা কথা যে একবার লীগ এবং আরেকবার বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। এখানে ডঃ ইউনুস চাইলেই ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। এখন নিজের ঘরের দূর্বলতা ও অন্যায়কে ধামাচাপা দিয়ে ইউনুসের উপর যত ক্ষোভ হাসিনা ও তার চামচাদের! যদি বিদেশীদের বাংলাদেশে তাদের অন্যায় স্বার্থ হাসিল করার জন্য কিছু থাকে তা ডঃ ইউনুসকে দিয়েই হবে এমন কথা ভাবা বোকার স্বর্গে থাকার মত।

বিদেশী বিশেষ করে মার্কিনিরা চাইলেই বিএনপি বা আলীগ হতে বর্ণচোরা সুবিধাবাদী নেতা বেছে নিয়েও কাজ করতে পারে। যেমন আমরা দেখেছি সিঙ্গাপুর বানানোর কথা বলে ২০১০ সালের জানুয়ারীতে হাসিনা দিল্লীতে গিয়ে কি চুক্তি করেছে তা আজ পর্যন্ত দেশবাসী জানল না। এমনকি সংসদেও আলোচিত হল না। নৌকা মার্কা নিয়ে পাশ করা ইনু, মেনন পর্যন্ত বলছে যে হাসিনার উপদেষ্টারা আসলে ভারতের মনমোহনের উপদেষ্টা। আর সে হাসিনাই ক্ষমতায় এসে বয়সের অজুহাতে ডঃ ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হতে সরিয়ে দিল।

অথচ ডঃ ইউনুস হাসিনার প্রথম আমলেই ব্যাংক এমডির নির্দিষ্ট বয়স পার করছেন। তখন এবং খালেদার দ্বিতীয় আমলে যদি কোন সমস্যা না হয় তবে কেন হাসিনার দ্বিতীয় আমলে সমস্যা হবে? স্পষ্টতই এটা হাসিনার প্রতিহিংসার রাজনীতি! আজকে দেশকে সীমাহীন র্দূনীতি, লুটপাটে বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ভারতের তাবেদারী করে দেশকে বন্ধক দিয়ে ঋণ নেওয়ার চিন্তা করে তারই চামচা আবার ডঃ ইউনুসকে নিয়ে ভেংচি কাটে। কানাডায় বসে আরাম আয়েশে থেকে হাসিনার ফেভারে কথা লিখে দেশের মানুষের দূরাবস্থার সাথে তামাশা করারই নামান্তর। ডঃ ইউনুসকে জ্ঞান দেয়! যেখানে সারা দুনিয়ার সব ভিআইপি তাকে দাড়িয়ে সালাম ও সম্মান করে। বাংলায় বলে বাঘে ও মহিষে এক ঘাটে পানি খায়।

তেমনি দুটি বিপরীত মেরু আমেরিকা ও ভেনিজুয়েলা! মার্কিনি ওবামা বলে কথা নয় তার পূর্বসরি ক্লিন্টনও ইউনুসকে কদরতো করতেনই এমনকি কট্টর মার্কিন বিরোধী হুগো শ্যাভোজও উনাকে সেই দেশের বিশেষ খেতাব দিয়েছেন। পৃথিবীতে বহু লোক বিভিন্ন বিশেষ কাজে নোবেল সহ অন্যান্য পুরস্কার পেলেও ডঃ ইউনুসের মত দুটি ভিন্ন দেশ যারা সাপে নেউলে সম্পর্ক তাদের হতে পুরস্কার পাওয়া প্রায় বিরল। হাসিনা এই ধরণের পুরস্কারতো দূরে থাকুক নোবেল পুরস্কার পাবে এটা আশা করাও বৃথা। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যাবহার করে ঠিকই ইউনুসকে অপমান ও নাজেহাল করেছে। তার কথা হল আমি শেখের বেটী! আমি যা চাইব সেটাই বর্তমানে বাংলাদেশে হবে।

আমার পিতার হিমালয় সম উচ্চতার ইমেজে আমার অবস্থান। এটা অবশ্যই এই বাংলাদেশেই বাহাদুরি। হাসিনাকে আজ বললে কালকেই আন্তর্জাতিক কোন মিডিয়ার সাথে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য অস্থির হবেন। কিন্তু ডঃ ইউনুসের দেখা পেতে তাদেরতো বটেই বিশ্বের যেকোন রাষ্ট্র প্রধানকেও মাসাধিককাল অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি ফোনেও সরাসরি পান না।

কারণ ডঃ ইউনুসের ইমেজ বহু আগে হিমালয়ের চেয়েও অনেক উচ্চতায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন তার ইমেজ পৃথিবীর অভিকর্ষ সীমা ছাড়িয়ে মহাশূন্যে শোভা পায়; নাসার নভোচারী রন গারান ছয় মাস মহাকাশে থেকে পৃথিবীতে নেমেছেন গত ২২ এপ্রিল। স্পেস স্টেশনে থাকার সময়ে তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে এসেছিলেন তিনি ভিয়েনায়। বড় পর্দায় সেটি দেখানো হলো। পৃথিবীটাকে রন দেখেছেন অবশ্য একটু ভিন্নভাবে।

ওপর থেকে তোলা অনেকগুলো দেশ দেখালেন রন। সঙ্গে বর্ণনা দিলেন পৃথিবীজুড়ে থাকা নানা সমস্যার কথা। মিলনায়তনভর্তি মানুষ পিনপতন নীরবতায় তাঁর কথা শুনলেন। তবে রন গারান আসল চমকটি দিলেন শেষ মুহূর্তে। স্পেসশিপের যে জানালা দিয়ে সারা বিশ্ব দেখেছেন, দেখা গেল সেখানে একটা বই রাখা।

বইটার নাম ক্রিয়েটিং এ ওয়ার্ল্ড উইদাউট পোভার্টি। সে বইটিই উপহার দিলেন তিনি বইটির লেখক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে। বইটিতে রন গারান লিখলেন: ‘এই ভঙ্গুর পৃথিবীর মানুষের জন্য আপনি যা করেছেন, সে জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। এ বইটি আমার সঙ্গে স্পেস স্টেশন মিশনে ভ্রমণ করেছে। বইটি পৃথিবীর কক্ষপথে দুই হাজার ৬২৪ বার পরিভ্রমণ করেছে।

ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫০০ মাইল বেগে বইটি গেছে ছয় কোটি ৫৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ মাইল। ’ এরপর রন সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টায় নিজের সমর্থন জানালেন। রন গারান ছিলেন তৃতীয় সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের গণবক্তৃতা পর্বের অন্যতম বক্তা। প্রথম দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভিয়েনা সময় রাত আটটায় (বাংলাদেশ সময় রাত একটা) কংগ্রেস সেন্টারে এ পর্বটি অনুষ্ঠিত হয়। রন ছাড়াও বক্তা ছিলেন জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) অ্যাডভোকেট, ইউএনটিআইডির প্রধান ফিলিপ ডউসে-ব্লেজি এবং অধ্যাপক ইউনূস।

এ পর্বটি ছিল উন্মুক্ত। ভিয়েনার অনেকেই এসেছিলেন কথা শুনতে। শুরুতেই ফিলিপ ডউসে-ব্লেজি এইডস-পরিস্থিতির বর্ণনা দেন। সতর্ক করেন সবাইকে। একই সঙ্গে তিনি দারিদ্র্য দূর করা এবং এমডিজি পূরণ নিয়ে কথা বলেন।

এর পরই বক্তব্য দেন রন গারান। অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তৃতায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। সামাজিক ব্যবসার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বড় ধরনের সামাজিক ব্যবসা করা সম্ভব। তিনি বলেন, গল্পের আলাদিনের সেই দৈত্য এখন সবার হাতের মধ্যে। আলাদিনের প্রদীপের দৈত্য আসত হাতের স্পর্শে।

এখনকার দৈত্যও আসে হাতের স্পর্শে। এখনকার দৈত্যের নাম ইন্টারনেট সংযোগসহ মোবাইল ফোন। Click This Link ডঃ ইউনুস এমন অবস্থানে চলে গেছেন ভবিষ্যতে উনি বেচে না থাকলেও তাকে নিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী এমনকি সহস্রাব্দও বিশ্ববাসী মনে রাখবে। এখানে হাসিনাতো দূর তার পিতা মুজিবও সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বিন্দুমাত্র পাত্তা পাবে না। বৃটেনে বহু রাজা-রাণী এবং প্রধানমন্ত্রী এসেছে এবং আসবে।

এমনকি কিংবদন্তী নৌসেনানায়ক নেলসন(ট্রফগারস্কয়ার) এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রধানমন্ত্রী চার্চিলও যতটা বিখ্যাত তারচেয়েও পৃথিবীতে সহস্র গুণ বিখ্যাত স্যার আইজ্যাক নিউটন। বস্তুত নিউটনকে এক পাল্লায় রেখে অন্যটিতে বৃটেনের সব শাসককে একখানে রাখলেও তাদের ওজন কমই থাকবে। তেমনি বাংলাদেশের এই পর্যন্ত সব শাসকও ডঃ ইউনুসের সামনে অতি তুচ্ছ! কিছু আবিস্কার, উদ্ভাবন এবং জ্ঞান আছে যাকে নোবেল সহ জগতের কোন পুরস্কার দিয়ে তার গুরুত্বকে সীমিত করা যায় না। পৃথিবীতো বটেই বাংলাদেশের সকল বিবেকবান মানুষের কাছে ডঃ ইউনুস এক উজ্জল নক্ষত্র!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.