আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টাঙ্গাইলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্রে ছাত্রলীগ কর্মীর অবাধ যাতায়ত ও নকল সরবরাহ আর সাধারন শিক্ষার্থীর হতাশা

নাটকের ১ম দৃশ্য: পরীক্ষার প্রধান গেটে পুলিশকে বাহিরে সরিয়ে রেখে, ছাত্রলীগ কর্মীরা দেশের প্রতি অকৃত্রিম দায়িত্ব দেখিয়ে পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশী। নাটকের ২য় দৃশ্য: পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যে দেশের পাবলিক পরীক্ষার পাশের হার বাড়ানোর জন্য পরীক্ষার রুমে প্রবেশ ছাত্রলীগ কর্মীর। কিন্তু বিধি বাম, "এই ছেলে তুমি কে? কেন তুমি পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছো? কার অনুমতি নিয়ে?" এরকম অচেনা কক্ষ পরিদর্শকের প্রশ্নেই, ছাত্রলীগ কর্মীর উদ্ধর্তপুর্ন উত্তর," আমি এখানে ঢুকে পরেছি তাতে আপনার কি হয়েছে? আপনি চুপ করুন? কক্ষ পরিদর্শক বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন, তুমি যেই হও, পরীক্ষার হলে তুমি প্রবেশ করতে পারনা। তার প্রতি উত্তরে ছাত্রলীগ কর্মী বললেন, আমার জন্য কোন অনুমতি লাগেনা। আমি এই কলেজের ছাত্রলীগের..............।

কিছুক্ষন পরল, সেই কক্ষ পরিদর্শকের ডাক পরল(নিয়মমাফিক/নিয়মবহির্ভুত)কলেজের অফিস কক্ষ। বেশ কিছু ক্ষন পর যখন সেই শিক্ষকটি পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করলেন, তার সেই শিক্ষক সুলভ তেজস্বী ভাবটি খুজে পাওয়া গেলনা। সার মুখ জুরে ফুটে উঠল দুশ্চিনার আর বিষন্নতার ছাপ। নাটকের ৩য় দৃশ্য: এবার ছাত্রলীগ কর্মীরা ৩-৪ জনের একটি গ্রুপ পরীক্ষার হলে প্রবেশ করল। সাথে অনেক প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত ছোট ছোট চিরকুট।

প্রশ্নের উত্তর মুখেমুখে, চিরকুট দেখিয়ে দেখিয়ে পছন্দের কর্মীদের লেখানো, পরীক্ষার রুমে হৈ চৈ আর হট্টগোল আর সাধারন শিক্ষার্থীদের হতাশা দৃশ্যের বাস্তবায়ন। বি:দ্র: নাটকরে এই দৃশ্যে কক্ষপরিদর্শক ও প্রশাসনের নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন। নাটকের ৪র্থ দৃশ্য: পরীক্ষার হলে ছাত্রলীগ কর্মীর এক নিকট আত্মীয়ার হঠাৎ কান্নার আওয়াজে আবার ছাত্রলীগ কর্মীর প্রবেশ। " আহ! আমার এই ছোট বোনটিকে দেখার কেউ নেই রে" এই বলে প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত চিরকুট দেখিয়ে দেখিয়ে প্রশ্নের উত্তর প্রদান। কক্ষ পরিদর্শক চাকরীর চিন্তা করে সাহস করে একবার ভয়ে ভয়ে বলে ফেললেন, "এখন দৃই মিনিট হয়ে গেছে আপনি এখন চলে যান"।

ছাত্রলীগ কর্মী ধমকের সুরে বললেন," আমি কি দুই মিনিটের জন্য এসেছি? আমি দশ মিনিটের আগে বের হব না, কার কি করার থাকে কর(!) নাটকের ৫ম দৃশ্য: আবার ৬-৭ জনের একটি গ্রুপের পরীক্ষার হলে প্রবেশ। প্রবেশ করেই হুঙ্কার, কেউ একটি বার টু শব্দটি করতে পারবেনা। করলে খবর আছে.................। সাধারন ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে দাড়িয়ে হৈ চৈ, কান্নাকাটি এবং কক্ষ পরিদর্শক ও প্রশাসনের নীরব সমর্থনে পরীক্ষার রুমের পরিবেশ বিনষ্ট। আরো অনেক ছোট ছোট দৃশ্যে এভাবেই ঢাকা বোর্ডের অধীনে টাঙ্গাইলের সরকারী এম এম আলী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষাই শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। তার মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক অন্যতম। সব শিক্ষার্থীই স্বপ্ন দেখে এই পাবলিক পরীক্ষাটি খুব ভাল করে দেয়ার এবং ফলাফল ভাল করার জন্য। কারন এই ফলাফলের উপর ভিত্তি করে প্রতিটি শিক্ষার্থীটি গড়বে তাদের ভবিষ্যত জীবন। কিন্তু না, কোন কোন সময় অনেক সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও পরিবেশ প্রতিকুলতার জন্য পেছনের সারিতে পরে থাকতে হয়।

এগিয়ে যেতে পারে না মানুষের তৈরী দুর্ভেদ্য জাল ছিন্ন করে। তবুও কি আমরা স্বপ্ন দেখব না?????????? আমাদের সব স্বপ্ন ধুলায় মিশে যাবে ছাত্রলীগ নামধারী গুটি কয়েক দুর্বৃত্তের হাতে। হ্যাঁ, এরকম পরীক্ষা কেন্দ্র, কলেজ কতৃপক্ষ আর প্রশাসনের নীরব সমর্থন থাকলে সাধারন শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পুরন হওয়া সম্ভব নয়। স্বপ্ন পুরন হবে শুধুই রাজনৈতিক কর্মীদের। অনতিবিলম্বে, টাঙ্গাইলের সরকারী এম এম আলী কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্রটিতে সাধারন শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে পরীক্ষায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মুক্ত করে পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।

সাধারন শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আর ছাত্রলীগ নামধারী যে লাগামহীন ঘোড়া বাংলার মাটিতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, তার লাগাম লাগানোর কেউ কি নেই????????? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.