আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
পৃথিবীর আর কোন দেশে রেকর্ড আছে কিনা যে গাড়ীর ভিতর মালিক উপস্থিত এবং তারই পিস্তলের গুলিতে কেউ নিহত হলে সে ঐ ঘটনা আদালতের রায় ব্যাতীত পুলিশ দ্বারাই অব্যাহতি পায়। আমরা দেখেছি ক্ষমতাসীন আলীগের এমপি শাওন তারই গাড়ীর ভিতর স্বীয় দলীয় কর্মী ইব্রাহিম নিহত হলে পুলিশ কমিশানর কিভাবে আগ বাড়িয়ে সাফাই গায়। শাওন এমপি যতনা কথা বলে নিজেকে নির্দোষ বলেছেন তার চেয়ে কমিশনারকেই অত্যন্ত আগ্রহী দেখা গেছে সাংবাদিক সম্মেলনে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহার খাতুন বলে যে এটা পুলিশের ব্যাপার। এই রকম ঝালকাঠির লিমনের ক্ষেত্রেও RAB তার বিরুদ্ধে হয়রাণি মূলক মামলা করলে সাহারা বলেন তার কিছুই করার নেই।
তো RAB ও পুলিশ কার অধীনে?
এইভাবে গত বছর ২০১১তে নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমান খুন হলে বিএনপির খায়রুল কবির খোকন অহেতুক ও হয়রাণি মূলক ভাবে গ্রেফতার হল। অথচ খুনের নির্দেশদাতা হল তৎকালীন ডাক-টেলি মন্ত্রী রাজুর আপন ছোট ভাই। তাকেতো বিচারে সোপর্দ করাতো দূরে থাকুক নিহত মেয়র লোকমানের পরিবারকে লোভ ও ভয় দেখানো হচ্ছে এই নিয়ে যেন তারা উচ্চ-বাচ্য না করে ও অভিযোগ তুলে নেয়। ঠিক যেমন ভোলার নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী ও পরিবারকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে ফেলা হয়েছে। উপরন্ত লোকমান নিহত হলে আলীগের পক্ষ হতে শহড় ও রেল ষ্টেশনে ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও হলে তার জন্যও দায়ী হল খোকন ও বিএনপি! এর বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি মামলা হয়ে গেল!
আর এই বছর ২০১২ ফেব্রুয়ারীতে নৃশংস ভাবে নিজ গৃহে খুন হল সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর ও রুনী।
প্রথমে বলা হল যে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ এই সমন্ধে ক্লু তুলে ধরবে। সেই হত্যাকান্ডর আজকে প্রায় ৪৮ দিন পেড়িয়ে গেল কিন্তু কোন কিছুই জানা গেল না। উপরন্ত দেশের প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইত্তেফাকে দেখা গেল তথাকথিত গোয়েন্দা সুত্র দিয়ে রুনী সমন্ধে নোংরা ও আপত্তিকর খবর দিয়ে মূল ঘটনাকে আড়াল করার অপচেষ্টা! ইত্তেফাকে এই তথাকথিত জঘণ্য খবর ছাপার আগেই বিভিন্ন জায়গায় গুঞ্জন হয় যে এটিএন বাংলার মালিকপক্ষ ও সরকারের প্রভাবশালী মহল জড়িত। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পরেও যখন কোন কিছুই পাওয়া গেল না তখন প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসূলভ ঠেস মারা কথা বললেন যে "কারো বেডরুমে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়"। খুনীকে কে? তাকে ধরবে কিভাবে ও বিচারের আওয়তায় নিবে সেই সমন্ধে কোন জোরাল বক্তব্য নেই কিন্তু ফালতু গলাবাজির অভাব নেই।
তাই যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা এই নিয়ে সরকারের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ তুললেন তখন হাইকোর্টের রুলিং দিয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হল। বস্তুত শুধু খালেদা জিয়া নয় বরং সরকারী দল তথা আলীগ যারা করে না তাদের মুখ বন্ধ করে দিল। এই নিয়ে সৈয়দ আবুল মকসুদও আক্ষেপ করেছেন। যদি তদন্ততে টাল-বাহানা, অত্যন্ত ধীরগতি ও দূর্বলতা থাকে আদৌ কি তাতে প্রকৃত খুনীরা চিহ্নিত হবে? যেখানে ধরা ও বিচার আরো বহু দূরের বিষয়! শোনা যায় খুনের স্পটে সহ অন্যান্য আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। উপরে আহত লিমন ছাড়া নিহত ইব্রাহিম ও লোকমান দুই জনেই আলীগের হওয়া সত্ত্বেও যেখানে তাদের স্ত্রী ও পরিবারের ন্যায়বিচার পাওয়া অনিশ্চিত সেখানে কি নিহত সাগর ও রুনীর স্বজনরা কি আশা করতে পারে? আর আইনের দ্বারা এই নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু বলাও যাচ্ছে না।
পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক! তখন মানুষ একমাত্র বিচার বিভাগের শরণাপন্ন হতে পারে। যেহেতু হাইকোর্ট এখন এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাই দেশের সাধারণ জনগণ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি সহ ন্যায়বিচার প্রত্যাশীর সবার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানানো উচিত। এটা হয় হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান এক বা একাধিক বিচারক নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন হতে পারে। তারাই যে প্রকৃত খুনী ও ঘটনা সুস্পষ্ট করতে পারবে তা বলব না। তবে এই নিয়ে আশা ও দাবী করতে কোন দোষ নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।