‘প্রচারেই প্রসার’ যে কোনো পণ্য বাজারে পরিচিত করে বিক্রয় বৃদ্ধিতে বিজ্ঞাপনভিত্তিক প্রচারের কোনো বিকল্প নেই- তাই ওই প্রবাদ বাক্য। অন্যদিকে বাংলাদেশের অনেক হুযূরেরা অতীতে টিভিকে বলতেন ‘শয়তানের বাক্স’। কিন্তু এখন তাদের অধিকাংশকেই ওই শয়তানের বাক্সের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার করতে দেখা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে- উনারা কী অতীতে ভুল বলেছেন এবং বর্তমানে সঠিক কাজটি করছেন? নাকি অতীতে ঠিক ছিলেন আর বর্তমানে টাকার লোভে ধর্মকে বিসর্জন দিয়ে হারাম কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করছেন?
হাদীছ শরীফ এর মধ্যে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ আছে যে, “ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, দেখা ইত্যাদি নাজায়েয। ” ওই ছবির হাতে আঁকা হোক, ক্যামেরা দিয়ে তোলা হোক কিংবা ভিডিও করা হোক- সব নাজায়েয।
প্রশ্ন হচ্ছে, তবে হুযূরেরা ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে কিভাবে ক্যামেরার সামনে নিজেদেরকে উপস্থাপন করছে?
এদের বর্তমান খোঁড়া যুক্তিটি হচ্ছে ‘বাস্তবে যে জিনিস দেখা জায়িয, টেলিভিশনের পর্দায় সেটা দেখা জায়িয। আর বাস্তবে যে জিনিস দেখা নাজায়িয, টেলিভিশনের পর্দায় সেটা দেখা নাজায়িয। ’ যদিও এতদসংক্রান্ত কোনো দলীল তারা উপস্থাপন করতে পারেনি, কস্মিনকালেও পারবে না। অপর খোঁড়া যুক্তিটি হচ্ছে, টেলিভিশন হচ্ছে বর্তমান যামানায় সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচার মাধ্যম। এ মাধ্যমকে বাদ দিয়ে কিভাবে ইসলাম উনার প্রচার-প্রসার করা সম্ভব? অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য একটি উত্তর; যা সাধারণ মুসলমানদের জন্য কোনো প্রকার চিন্তা ব্যতিরেকেই গ্রহণীয়।
এক্ষেত্রে মানেটা কি দাঁড়ালো? টিভি দেখা জায়িয এবং হালাল।
বিষয়টি ততবেশি অবাক হওয়ার মতো নয়। কারণ আমাদের প্রিয় নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই সাড়ে চৌদ্দশ বছর পূর্বেই ইরশাদ করেন, “আখিরী যামানায় অনেক হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম ঘোষণা করা হবে। ” তবে এ ধরনের ঘোষণাসমূহ কোনো হিন্দু, বৈদ্য কিংবা খ্রিস্টান থেকে নয়, সমাজে যারা প ইসলাম এর বোদ্ধা হিসেবে পরিচিত, তারাই এহেন গর্হিত কাজটি করে থাকবে। এরাই হচ্ছে উলামায়ে ‘সূ’ অর্থাৎ ধর্মব্যবসায়ী।
অপরদিকে বিজ্ঞাপনের নারীদের ব্যবসার পণ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ওদের রূপ ও যৌবন। অথচ ইসলাম মেয়েদের জন্য পর্দা করা ‘ফরয’ ঘোষণা করেছেন। ধর্মের বিষয়ে গন্ড-মূর্খ তথাকথিত আধুনিক মেয়েরা যখন নিজেদেরকে বিজ্ঞাপনের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে তখন পুরুষশাসিত সমাজ তাদেরকে পয়সা দেয়। ওই বেহায়া মেয়েগুলো যতবেশি অশালীন হবে, ততবেশি পয়সা উপার্জিত হবে।
টেলিভিশনে হারাম প্রোগ্রামকারী হুযূরেরা মুসলমানদের মনে যতবেশি ভ্রান্ত আক্বীদা প্রবেশ করাতে পারবে ততবেশি পয়সা কামাই হবে।
বেশি অর্থ অর্জনকারী মডেলদের নাম এখানে উল্লেখ না করলেও অনেকেই হয়তো তাদেরকে চিনতে পারবেন। তবে মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি আক্বীদা নষ্টকারী এবং সবচেয়ে বেশি অর্থ অর্জনকারী উলামায়ে ‘সূ’ হচ্ছে, জাকির নায়েক । মুসলমানদের মাঝে ইসলাম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে বর্তমান সময়ে তার তুলনা নেই। অধিকাংশ মুসলমানদের কাছে সে ইসলাম এর জন্য সে এক মহান ‘মিডিয়া মুজাহিদ’। বস্তুত সে হচ্ছে মিডিয়া লাদেন।
লাদেনের দায়িত্ব ছিল আত্মঘাতী বোমারু তৈরি করে বিশ্ববাসীর কাছে মুসলমানদের হেয়প্রতিপন্ন করা আর জাকির নায়েকের দায়িত্ব হচ্ছে সূক্ষ্ম মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা নষ্ট করে জাহান্নামে প্রেরণ করা।
একজন ছিল সিআইএ কর্তৃক পরিচালিত এবং অপরজন হচ্ছে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী ‘র’ দ্বারা পরিচালিত। এখানে সর্বশেষে যে বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে তা হচ্ছে, বর্তমান সময়ে যে সকল মুসলমান এই জাকির নায়েককে সঠিকভাবে চিনতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং তার একনিষ্ঠ গুণগ্রাহীতে পরিণত হচ্ছে, তাদের বংশধররাই ভবিষ্যতের দাজ্জালকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়ে চিরজাহান্নামী হবে। কারণ সেই দাজ্জাল হবে জাকির নায়েকের চেয়ে আরো বেশি বাগ্মী ও শয়তানী ক্ষমতার অধিকারী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।