পৃথিবীতে সবসময় দুটোজিনিস কাজ করে: লজিক আর এন্টিলজিক। হিমু কাজ করে এন্টিলজিক নিয়ে, মিসির আলি কাজ করে লজিক নিয়ে, আর আমি কাজ করি দুটো নিয়েই। আফসোস এই দুইটার একটা দিয়াও রহস্যকে ভেদ করা যায় না।
স্বাধীনতা পেল,
দেশ ও জাতী ।
শুধু পেলাম না,
স্বাধীনতা আমি।
এসেছে উন্নয়ন,
প্রচারে বিজ্ঞাপন ।
বেড়েছে নগন্যতা,
আসেনি সমতা !!
হ্যাঁ পাঠক সত্যিই পেলাম না স্বাধীনতা আমি তথা গোটা নারী সমাজ ! একবিংশ শতাব্দীতে নারীর স্বাধীনতার অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন সাধিত হলেও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গনমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারে নারীদের ঢের অসমতা রয়েছে, সেটি বাংলাদেশের উন্নয়নের সর্বস্থরে বড় রকম বাধা হিসেবে কাজ করছে । গনমাধ্যমে যে জেন্ডার ইমেজ সরাসরি নষ্ট হচ্ছে এটি খোলাভাবে ব্যাপক বিশ্লেষন অতীব প্রয়োজন । অত্যন্ত শক্তিশালী ও ব্যাপক প্রচারের গনমাধ্যম হচ্ছে টেলিভিশন । শিক্ষা সচেতনতা উভয়ই নিয়ে কাজ করছে এই টেলিভিশন যা কোটি কোটি দর্শকের সামনে উপস্থাপিতই শুধু হয় না কখনও কখনও হৃদয় ছুয়ে যায় ।
গোটা জাতীর কাছে ইতিবাচক ভূমিকায় নিমজ্জিত হওয়ার কথা যে টেলিভিশন গনমাধ্যম আজ তা লজ্জাজনক ও দুঃখের সঙ্গে বলতেই হয় সরকারের দুই যুগ পূর্বের বিজ্ঞাপন প্রচারের নীতিমালা থাকা সত্তেও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ খাস পয়শা আয়ের জন্য বিজ্ঞাপন কোম্পানীগুলোর কাছ থেকে যে বিজ্ঞাপনগুলো নিয়ে প্রচার করেন তা হলো --কারনে অকারনে নারীদের দেহ ও মুখ ব্যাবহার হয় একাধিকবার ।
পাঠক সমাজের কাছে ছোট্ট একটি প্রশ্ন এটি নগন্যতার পরিচয় নয় কি? তাহলে সমাজে নারীর অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় ? উদাহরন স্বরূপ একটি বিজ্ঞাপনের কথা বলা যাক, নারী যে কিভাবে শুধুই প্রতিমা,জন্মদানকারী, জন্মনিয়ন্ত্রনকারী এবং তা পুরূষের নিয়ন্ত্রনাধীন । এক কথায় নারীকে জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতির ভোক্তার রূপান্তর বলা যায় । আর বিজ্ঞাপনটি হচ্ছে (টেলিভিশনের যে কোন চ্যানেলে দেখা যায় ) ওভাস্টেট পিল খেলেই সংসারে সুখ ও শান্তি চলে আসে । পরিস্ককার ভাবে বোঝা যায় এখানে সমতার অভাব রয়েছে ।
আবার দেখা যাচ্ছে শহর থেকে স্বামী জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি এনে হাতে দিতে না দিতেই সংসারে সুখ এসে গেল আর বউ স্বামীর কোলে মাথা নুয়ে খুশীতে টগবগ। এটি কোন বিজ্ঞাপন সমাজের সমতা ?
আরো একটি পন্যের কথা বলা যাক, বিখ্যাত প্রডাক্ট "ফেয়ার এন্ড লাভলী" এ বিজ্ঞাপন চিত্রে একটি মেয়ে গোলাপী পোশাক পরিহিতা ডজন খানিক পুরূষ তার রূপ এবং লাবন্যের দিকে তাকিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে । এটাকি সেক্সীয় ইমেজকেই প্রাধান্য দেয় নয় কি? যদিও বা আমরা সকলে জানি বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির জন্যই লোভনীয় ভাবে নারীকেই উপন্থাপন করে থাকেন । কিন্তু প্রশ্ন নারীত্ব বিক্রির মাধ্যমেই কেন? আমি এটাও বলছি না বিজ্ঞাপন হবে পুরূষকেন্দ্রিক অথবা মহিলা কেন্দ্রিক অথবা মহিলা শূন্য বা পুরূষ শূন্য কোনটাই নয়, চাই সমতা, নগন্যতা নয় !
উদাহরন স্বরুপ বলা যায় কৃষিপন্য বা কৃষি সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনে নারী কৃষকের ভূমিকা, অবস্থান প্রচার করা হয় না । এটি সরাসরি সমতা বা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরূদ্ধে অবস্থান করে নয় কি?
বেশ কিছু রান্নার সামগ্রী বিজ্ঞাপনে নারীকেই ব্যবহার করা হয় সবচেয়ে বেশী ।
যদিও বা বিজ্ঞাপন দাতাদের এখানে নারী বিদ্বেষ বা পূরুষ বিদ্বেষ বলে কিছু নেই । পন্য বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করাটাই হচ্ছে মূখ্য উদ্দেশ্য । কিন্তু ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর একটু ভাবা এবং সহযোগীতার মনোভাবে এগিয়ে আসা উচিৎ ।
নারীদের অবস্থানের সমতার জন্য যে কোন নারী বা পুরুষকে বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে চাকুরি দেওয়াটাই মূখ্য উদ্দেশ্য না হয়ে কি ভাবে বিজ্ঞাপনে বেশীর ভাগ শিল্পের নৈপূন্য প্রদর্শন করা সম্ভব এদিকে দৃষ্টি দেয়া । আমাদের তথা গোটা নারী সমাজকে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে ।
সেই সাথে বলতেই হয় আমাদের আশা-ভরষার একমাত্র সাসটেইনার রাষ্ট্র । রাষ্ট্রই পারে আমাদের এ অবস্থান থেকে মুক্তি দিতে । আমি জানি না এ বিষয়ে সরকারের সাথে গনমাধ্যমগুলোর কেমন আত্নীয়তা রয়েছে ??? অন্যায়ের বিরূদ্ধে বন্ধন ছিড়ে রাষ্ট্র নিজ ভুমিকায় অবতীর্ন হতে পারছে না কেন ???
পাঠকের মন্তব্য:
ঢাকা থেকে আবুল কাশেম লিখেছেন,
২০০৭ এ ৩৫৮৪ জন , ২০০৮ এ৩৪৬২ জন নারী ধর্ষিত হয়েছে । আওয়ামী সরকার নারী বান্ধব সরকার তাও নারীরা খারাপ অবস্হায় । কারনঃ ১)বোরকা না পরা ২) সহশিক্ষা- মানে বিশ্ববিদ্যালয় হবে ছেলেদের আলাদা মেয়েদের আলাদা ৩)ছেলেরা মেয়েদের দিকে চোখ গেলে চোখ নিচে নামাবে।
এতে আল্লাহ খুশি হবে । ফলে তাকে এমন (সুন্দর) , ভালো বউ দেয়া হবে যা সে কল্পনা ও করে নি । কিছু দিন আগে ভারতে পুরুষদের ১টা সম্মেলন হয়েছে। তারা বলছে গত বছর ১০,০০০ পুরুষ বউদের অত্যাচারে আত্মহত্যা করেছে। পুরুষ ও নারী উভয়ই নির্যাতনের শিকার ।
কারণ উভয়ই আল্লাহর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।