আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাদ্দাফির চতুর্থ পুত্র হ্যানিবেলের রাজকীয় বিলাসিতার কাহিনী

দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম ডেস্ক কর্নেল গাদ্দাফির মৃত্যুর পর বেরিয়ে আসছে তার অনেক অজানা তথ্য। গাদ্দাফি ও তার ছেলেদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের খবর ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। সম্প্রতি গাদ্দাফির চতুর্থ পুত্র হ্যানিবেলের কিছু রাজকীয় বিলাসিতার কাহিনী জানা গেছে। হ্যানিবেল বর্তমানে তার মা ও এক বোনকে নিয়ে আছেন আলজেরিয়ায়। বাবা গাদ্দাফির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরুর পরপরই লিবিয়া থেকে গোপনে আলজেরিয়া চলে যান তিনি।

৩৬ বছর বয়সী হ্যানিবেল লিবিয়ায় পরিচিত ছিলেন তার বদ মেজাজ ও বিলাসিতার জন্য। সেই বিলাসিতার প্রতীকস্বরূপই হ্যানিবেল বাবার সাম্রাজ্য পতনের এক বছর আগে একটি বিশাল প্রমোদতরী বানানোর অর্ডার দিয়েছিলেন, যে প্রমোদতরীতে চড়ে হ্যানিবেলের ইচ্ছা ছিল তার ছয় পোষা তিমি নিয়ে সমুদ্র ভ্রমণের। বিলাসী ওই প্রমোদতরী তৈরির জন্য হ্যানিবেল চুক্তি করেছিলেন ফ্রান্সে অবস্থিত কোরিয়ান জাহাজ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসটিএক্সের সঙ্গে। তারা ১ হাজার ১০০ ফিট লম্বা প্রমোদতরী তৈরির জন্য দাবি করেছিল মাত্র ৩০ কোটি পাউন্ড। হ্যানিবেলও সেই দাবি পূরণে সম্মত হয়েছিলেন এবং এককালীন কিছু অর্থ পরিশোধও করেছিলেন।

কে জানত তার বাবার সাম্রাজ্যের পতনের সঙ্গে সঙ্গে হ্যানিবেলের সেই পোষা তিমি নিয়ে সমুদ্র ভ্রমণের স্বপ্নও অপূর্ণই থেকে যাবে। গাদ্দাফির পতনের পর হ্যানিবেল পরিবার নিয়ে আলজেরিয়ার অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপেন করায় এসটিএক্স ওই প্রমোদতরীটি এখন বিক্রি করে দিয়েছে আরেকজনের কাছে। নতুন সেই ক্রেতা হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রুজ অপারেট প্রতিষ্ঠান এমএসসি। তারা ক্রুজটি কিনে নেয় ৪৬ কোটি পাউন্ডে। তারা এখন এর পুরনো নকশা (হ্যানিবেলের দেওয়া নকশা) বদলে ক্রুজটিকে সাজাচ্ছে নতুন করে।

এমএসসি ক্রুজ অপারেটরের এক কর্মকর্তা পিয়েরফ্রান্সেসকো ভাগো জানান, ক্রুজটির আগের নকশায় হ্যানিবেলের ব্যক্তিগত বিলাসিতার চিহ্ন লক্ষ করা যায়। তিনি প্রমোদতরীটিকে শুধু তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এমএসসি ক্রুজটিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে চায়। এ জন্যই পুরনো সেই ডিজাইন বদলে নতুনভাবে এবং নতুন নামে তৈরি করা হচ্ছে প্রমোদতরীটি। হ্যানিবেল ১৯ ডেকবিশিষ্ট এই প্রমোদতরীর নাম দিয়েছিল ফোনেসিয়া।

সেই নাম বদলে এখন সেই জাহাজ তৈরি হচ্ছে এমএসসি প্রেজিওসা নামে, যা ২০১৩ সালের মার্চ থেকে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু নিজেদের বাণিজ্যিক কৌশলের অংশ হিসেবেই এমএসসি হ্যানিবেলের পছন্দের সেই নকশাটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রকাশ পেয়েছে গাদ্দাফি ও তার সন্তানদের রাজসিকতার ছাপ। হ্যানিবেলের নকশায় দেখা যায়, তিনি তার ছয়টি পোষা তিমির জন্য জাহাজের ভেতরেই বিশাল অ্যাকুয়ারিয়াম তৈরি করেছিলেন, যা জাহাজ জুড়েই বিস্তৃত ছিল। জাহাজে ক্যাসিনো, সিঁড়ি, লাউঞ্জ-সব জায়গা থেকেই দেখা যেত সেই তিমির অ্যাকুয়ারিয়ামটি। তা ছাড়া দামি মার্বেল পাথর দিয়ে করা হয়েছিল পুরো জাহাজের ফ্লোরিং।

হ্যানিবেল শুধু নিজের জন্যই নয়, তার অতিথিদের জন্যও রেখেছিলেন বিলাসিতার ব্যবস্থা। ওই জাহাজের প্রতিটি কেবিনেই হ্যানিবেল বসিয়েছিলেন স্বর্ণের ফ্রেমে বসানো আয়না, অ্যাকোরিয়াম ফ্লোরিং ও অভিনব সব ফিটিংস। হ্যানিবেল তার বাবার রাজত্বকালে লিবিয়ার সমুদ্র সংক্রান্ত শিল্পগুলো এবং নৌবন্দরের তদারকি করতেন, যা করতে গিয়ে বিশাল প্রাচুর্যের পাহাড় গড়েন তিনি। তা দিয়েই হ্যানিবেল চেয়েছিলেন এই ছোট একটি বিলাসী প্রমোদতরী তৈরি করতে। কিন্তু তা তৈরি হওয়ার আগেই পতন ঘটল তার বাবার সাম্রাজ্যের এবং অসমাপ্তই থেকে গেল হ্যানিবেলের বিলাসী স্বপ্নের।

সূত্র ডেইলি মেইল। তথ্যসূত্র- Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।