My name is Forhad hossain i am a new blogger please help me লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ঠিক কী পরিস্থিতিতে নিহত হয়েছেন, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ, যোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রথমে বলা হয়েছিল, গাদ্দাফিকে গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করার পর আঘাতের জেরে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু জাতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের (এনটিসি) প্রধানমন্ত্রী পরে বলেছেন, গাদ্দাফি নিহত হয়েছেন ‘ক্রসফায়ার’ অর্থাৎ দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। নতুন এ তথ্যে বিভ্রান্তি ও প্রশ্ন আরও বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল বলেছেন, সিরতে গাদ্দাফিকে অক্ষত অবস্থায়ই আটক করা হয়েছিল।
এরপর এনটিসির যোদ্ধারা তাঁকে গাড়িতে তোলার সময় গাদ্দাফির সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের লড়াই শুরু হয়। এ সময় ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন গাদ্দাফি। ওই অবস্থায় তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তখনো তাঁর সমর্থকেরা গুলি চালিয়ে যাচ্ছিল এবং একসময় প্রচণ্ড লড়াই শুরু হয়। একপর্যায়ে গাদ্দাফি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
১২০ মাইল দূরের মিসরাতা শহরের একটি হাসপাতালে পৌঁছার আগ মুহূর্তে তাঁর মৃত্যু হয়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই বর্ণনা সত্ত্বেও ঠিক কী পরিস্থিতিতে গাদ্দাফিকে আটক করা হয়েছিল এবং কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়, তা নিয়ে সংশয় যাচ্ছে না। কেননা, গ্রেপ্তারের পর মুঠোফোনে ধারণ করা দুটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। একটিতে গাদ্দাফিকে রক্তাক্ত কিন্তু জীবিত দেখা যায়। অন্যটিতে দেখা যায়, সারা শরীরে রক্তমাখা গাদ্দাফির নিষ্প্রাণ দেহ মিসরাতার রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মাঝখানের সময়ের ঘটনা স্পষ্ট নয়। এ কারণে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাদ্দাফির মৃত্যুর কারণ নিরপেক্ষভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
সিরিয়াভিত্তিক একটি টেলিভিশন চ্যানেল গতকাল বলেছে, গাদ্দাফির মৃত্যুর ব্যাপারে জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী।
এনটিসির পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল, ন্যাটো বাহিনীর বিমান হামলায় আহত হওয়ার পর গাদ্দাফিকে আটক করা হয়েছিল। জখমের কারণে তিনি পরে মারা যান।
এনটিসি বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবদুল মাজিদ রয়টার্সকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার খুব সকালের দিকে একটি গাড়িবহর নিয়ে গাদ্দাফি সিরত শহর থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই গাড়িবহরে হামলা চালায় ন্যাটোর বিমান। এতে বহরের প্রায় সব গাড়ি বিধ্বস্ত হয়, নিহত হন অনেকে। গাদ্দাফিসহ কয়েকজন আহত হলেও রক্ষা পান। এনটিসি যোদ্ধাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা রাস্তার তলা দিয়ে যাওয়া মোটা পানিনিষ্কাশন পাইপের ভেতর আশ্রয় নেন।
’
এনটিসির এক যোদ্ধা বিবিসিকে বলেন, তিনি গাদ্দাফিকে পাইপের ভেতর দেখতে পান। এরপর তাঁকে সেখান থেকে টেনে বের করেন। তখন গাদ্দাফি অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে গুলি না করার জন্য।
ওই যোদ্ধা একটি সোনালি রঙের পিস্তল দেখিয়ে দাবি করেন, সেটি তিনি গাদ্দাফির কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন।
এনটিসি যোদ্ধাদের মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, গাদ্দাফিকে যখন আটক করা হয়, তখনো তিনি বেঁচে আছেন।
তবে তাঁর মাথা, মুখমণ্ডল ও ঘাড় ভেসে যাচ্ছে রক্তে। তিনি হাঁটার চেষ্টা করছেন, আর তাঁকে বিদ্রূপ করছেন এনটিসির যোদ্ধারা। একপর্যায়ে গাদ্দাফির মাথা বরাবর বন্দুক তাক করে ধরেন এক যোদ্ধা। তখনই তাঁকে টেনে তোলা হয় একটি গাড়িতে। কিন্তু গাড়িতে তোলার আগেই ওই যোদ্ধা তাঁকে গুলি করেন কি না, তা বোঝা যায় না ভিডিওচিত্রে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক এনটিসি কর্মকর্তা বলেন, ‘যোদ্ধারা গাদ্দাফিকে নির্মমভাবে পিটিয়েছিলেন। এরপর তাঁকে হত্যা করা হয়। এটাই যুদ্ধ। ’
কিন্তু ওমরান জুমা নামের এক এনটিসি যোদ্ধা আবার ভিন্ন কথা বলেছেন। তাঁর বর্ণনামতে, গাদ্দাফিকে আটক করার পর যোদ্ধারা যখন তাঁকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করছেন, তখনই গাদ্দাফির পক্ষের এক যোদ্ধা সরাসরি তাঁর বুকে গুলি করেন।
নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে আরেকটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মৃত গাদ্দাফির পরের দিকের ছবি দেখে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাঁর মাথায় খুব কাছে থেকে গুলি করা হয়ে থাকতে পারে।
তবে গাদ্দাফিকে আটক করার পর উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এনটিসির জ্যেষ্ঠ সদস্য মোহাম্মদ সাইদ। এর পরও তিনি বলেন, ‘যদি তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েও থাকে, তাহলে সেটা অন্যায় কিছু হয়নি। কেননা, আমি মনে করি, সেটা তাঁর প্রাপ্য।
’
তবে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই গতকাল বলেছেন, গাদ্দাফির মৃত্যুর বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার। তাঁর মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল বিবিসিকে বলেন, গাদ্দাফি কীভাবে নিহত হয়েছেন, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। কাজেই তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।
কলভিল বলেন, ‘দুই ধরনের ভিডিওচিত্র পাওয়া গেছে। এর একটিতে দেখা যায়, গাদ্দাফি জীবিত আছেন।
অন্যটিতে তিনি মৃত। এ ছাড়া কীভাবে তাঁর মৃত্যু হলো, তা নিয়ে চার ধরনের বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই এটা উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ’
মানবাধিকার কমিশনের প্রধান আরও বলেন, ‘কেউ যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হতে পারেন এবং সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন সুস্পষ্ট। কিন্তু অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক আইনে এটাও সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, সংক্ষিপ্ত বিচারে বা বিচারবহির্ভূতভাবে কাউকে হত্যা করা আইনের লঙ্ঘন।
’
কলভিল আরও জানান, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক কমিশন ইতিমধ্যে লিবিয়ায় হত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য অপরাধ তদন্তে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই কমিশন হয়তো গাদ্দাফির মৃত্যুর বিষয়টিও তদন্ত করে দেখবে।
সাইফ নাইজারের দিকে পালিয়েছেন?: বৃহস্পতিবার গাদ্দাফির সঙ্গে তাঁর ছেলে মুতাসিমও নিহত হয়েছেন বলে জানায় এনটিসি। এ ছাড়া তাঁর অপর ছেলে সাইফ আল ইসলামের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে এবং তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ধরা পড়েছেন বলেও জানানো হয়। কিন্তু এনটিসি গতকাল বলেছে, সাইফ সিরত শহর থেকে দক্ষিণে নাইজারের সীমান্ত এলাকার দিকে পালিয়ে গেছেন।
এনটিসির জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার আবদুল মাজিদ রয়টার্সকে বলেন, ‘সাইফ সাঁজোয়া যান নিয়ে নাইজার সীমান্তের দিকে পালিয়ে গেছেন বলে আমাদের মনে হচ্ছে। তাঁকে খুঁজে বের করতে আমরা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। ওই এলাকার যোদ্ধাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছ
ফরহাদ হোসেন
০১৬৭০৩৩৯১৩৮
সাতক্ষীরা কনসালটিং ফার্ম লিমিটেড
এসি ভবন, কাওরান বাজার, ঢাকা- ১২১৫ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।